সোমবার, ০৮ আগস্ট, ২০২২, ০৩:৪৫:৩৬

বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে চান? ৫ টি কাজ করুন

বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে চান? ৫ টি কাজ করুন

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : শত শত বছর ধরে একটি ধারণা মানুষের মাঝে বিদ্যমান ছিল এবং এখন রয়েছে। ধারনাটি হলো, বুদ্ধিমত্তা ও প্রতিভা হলো সম্পূর্ণই সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত একটি ব্যাপার। 

বেশীরভাগ মানুষের একটি বদ্ধমূল ধারণা হলো, প্রতিটি মানুষ একটি নির্দিষ্ট মাত্রার আইকিউ (IQ- Intelligence Quotient) নিয়েই জন্ম গ্রহণ করে! যা সারা জীবন ধরেই সেই একই মাত্রায় রয়ে যায়। 

অথচ সময় এতোটায় দ্রুত গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যে বিজ্ঞান এর কল্যানে এখন পশু-পাখির আইকিউ লেভেলও পরিমাপ করা হচ্ছে! ভাবা যায় বিষয়টা!

বিজ্ঞান বিভিন্ন গবেষণা ও পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে জানাচ্ছে, প্রতিটি মানুষ তাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে পারে! কিছু দক্ষতাপূর্ণ কাজ শেখার মাধ্যমে এবং সেই সকল কাজ প্রতিনিয়ত চর্চা ও রপ্ত করার মাধ্যমে মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটে খুব চমকপ্রদভাবে। 

এখানে এমন কিছু কাজের কথা তুলে ধরা হলো, যা আপাত দৃষ্টিতে খুবই সাধারণ কিছু কাজ। অথচ এই সকল কাজ নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে মস্তিষ্কের বিকাশ ও আইকিউ লেভেল এর উন্নতি ঘটানো সম্ভব।
বুদ্ধিমান হতে সাহায্য

১. কোন বাদ্যযন্ত্র বাজানো: সাইন্স করেসপন্ডেন্স রিচার্ড অ্যালিনে দ্যা টেলিগ্রাফ নামক একটি পত্রিকায় প্রকাশ করেন যে, সাম্প্রতিক সময়ের একটি গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে, যেকোন ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজানোর ফলে মস্তিষ্কের আকার ও ক্ষমতা উভয়য়েই পরিবর্তন ঘটে। 

শুধু তাই নয়, এর ফলে জ্ঞানীয় দক্ষতার অনেক বৃদ্ধি ঘটে থাকে। গবেষকদের মতে, বাদ্যযন্ত্র নিয়মিত বাজানোর অভ্যাসের ফলে আইকিউ ৭ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। একই সাথে মনে রাখার ক্ষমতা, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার ক্ষেত্রেও অনেক উন্নতি সাধিত হয়।

২. যেকোন বই পড়া: বই পড়তে পছন্দ করেন? তবে আপনার জন্য সুখবর। যেকোন ধরনের বই পরার ফলে মস্তিষ্কের উপরে বেশ ভালোমতো ইতিবাচক প্রভাব পড়ে থাকে। 

আপনি যদি ‘দ্যা লর্ড অফ দ্যা রিংস’ পড়েন অথবা ‘কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স’পড়েন- উভয় ক্ষেত্রেই আপনার মস্তিষ্কের উপরে একই ধরনের ইতিবাচক প্রভাব এর সৃষ্টি হবে। বই পড়ার ফলে নার্ভ শান্ত থাকে এবং মানসিক প্রশান্তি মেলে। বই পড়ার ফলে তিন ধরনের ধরনের বুদ্ধিবৃত্তি একই সাথে যোগ হয়।

এর ফলে তথ্য, সমস্যার সমাধান, নেতিবাচক সমস্যার উপযুক্ত সমাধান, সঠিক ধরণ চিহ্নিতকরণ, মানুষের সাথে ভালো বোঝাপড়া তৈরি করার ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করে থাকে।

৩.মেডিটেশন: দ্যা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রকাশ করেছিল ‘Proceeding of the National Academy of Science’. যেখানে বিজ্ঞানী রিচার্ড ডেভিডসন তার একটি পরীক্ষামূলক গবেষণার ব্যপারে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। 

এই পরিক্ষামূলক গবেশনাটি করা হয়েছিল ভারতের ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশেরর ১৪তম বিখ্যাত সন্ন্যাসী দালাই লামা (Dalai Lama)এবং তার অনুসারীদের উপরে। 

রিচার্ড পরীক্ষা করে দেখতে চেয়েছিলেন, কিছু মস্তিষ্ক প্রভাব চাহিদার ভিত্তিতে তৈরি করা সম্ভব হয় কিনা! মেডিটেশনের মাঝে যখন রিচার্ড সহানুভূতি, সহমর্মিতা, দয়া-মায়া- এমন অনুভূতির প্রতি মনোযোগ দিতে বললেন, দেখা গেলো মেডিটেশনরত সকলের মাঝেই সহানুভূতিশীলতা কাজ করছে!

মেডিটেশনের সবচাইতে নিপুণ ব্যবহার হলো, মানবিক আবেগকে যথেচ্ছাভাবে পরিচালিত করা সম্ভব হয়ন। আপনি আপনার মস্তিষ্ককে নিজের ইচ্ছামতো কাজ করাতে পারবেন। যাকে বলা হয়ে থাকে- যেকোন আবেগ অনুভব করা। 

যখন যেমন আবেগের প্রয়োজন হবে তখন সেইরূপ আবেগকে কাজে লাগানো। যার মাধ্যমে নিজেকে খুব শক্তিশালী একজন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়।

৪. নিয়মিত শরীরচর্চা করা: আপনি যদি তিন মাসের মধ্যে শুধুমাত্র ২০ বার বুকডন দিয়ে অথবা মাত্র ১০০ বার দড়িলাফ দিয়ে ভেবে থাকেন যে, সেটা কাজে দেবে তবে আপনি ভুল। আপনাকে একদম নিয়মিত ভিত্তিতে প্রতিদিন শরীরচর্চা করতে হবে। 

সেটা খুব বেশী ভারী কোন শরীরচর্চা হতে হবে এমন কোন কথা নেই। তবে প্রতিদিন শারীরিক কসরত করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। অনেক বেশি সময় নিয়ে কাজ করারও প্রয়োজন নেই। ১৫-২০ মিনিট সময় ব্যয় করাও এক্ষেত্রে যথেষ্ট। 

নিয়মিতভাবে শরীরচর্চা করার ফলে BDNF (Brain-derived neurotrophic factor) কোষে উপর প্রভাব ফেলে। যার ফলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, মনোযোগ বৃদ্ধি এবং বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটে থাকে।

তবে একটা কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে। অতিরিক্ত বেশী শরীরচর্চা মস্তিষ্কের জন্য ইতিবাচকের পরিবর্তে নেতিবাচক প্রভাব এনে দিতে পারে। তাই প্রাত্যহিক ১৫ মিনিট সময়ে জন্য শরীরচর্চাই উপযুক্ত।

৫. নতুন ভাষা শেখা: অবসর সময়ে ক্রসওয়ার্ড শেখার পরিবর্তে নতুন ভাষা শেখার চেষ্টা করলে সেটা বরং মস্তিষ্কের উন্নতির জন্য দারুন কাজ করবে। গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে, যারা নতুন ভাষা শেখার চেষ্টা করেন, তারা অন্যদের তুলনায় দ্রুত ধাঁধার সমাধান করতে পারেন। 

এমনকি, যারা দ্বিতীয় বা নতুন ভাষা ভালো জানেন তাদের ডিমেনশিয়া ও আলঝেইমার হবার সম্ভবনা সারে চার বছর পিছিয়ে যায়! নতুন ভাষা শেখার ফলে মস্তিষ্ক অনেক বেশী তীক্ষ্ণ ও স্মৃতিশক্তি অনেক বেশী প্রবল হয়ে ওঠে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে