এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : পুঁথিগত শিক্ষার দৌড় তার বেশি দূর নয়। আর্থিক পুঁজিও নেই আহামরি। স্রেফ অদম্য ইচ্ছা আর জেদের বশবর্তী হয়ে আস্ত ড্রোন তৈরি করে ফেলেছেন ছত্তিশগড়ের কৃষক রাহুল চাওদা। উড়ু যানের সাহায্যে বিনাশ্রমে খেতে বীজ ও কীটনাশক প্রয়োগ করে পড়শিদের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ওই কৃষক মহা সমস্যায় পড়েছিলেন। ছত্তিশগড়ের রায়পুরের কৃষিজীবী রাহুল হার্দি গ্রামে ১৫ একর জমিতে ফসল ফলানোর জন্য চারা বোনা, সার দেয়া বা কীটনাশক ছড়াতে যে বিপুল পরিমাণ অর্থের জোগান দরকার, তার ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন।
এসব ছাড়া ফলন বাড়বে কী করে! তাই সমাধান খুঁজতে গিয়ে যখন রাতের ঘুম হারাম হওয়ার পথে তখনই মনে পড়ে গেল আমির খান অভিনীত হিট ছবি 'থ্রি ইডিয়টস'-এর এক দৃশ্য। ছবিতে আইআইটির এক ছাত্রের তৈরি ড্রোন দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন রাহুল।
খেতশ্রমিকের মজুরির হাত থেকে রেহাই পেতে ড্রোনের সাহায্য নিলে কেমন হয়? উপায় তো মিলল কিন্তু ড্রোন কেনার টাকাই বা আসে কোথা থেকে! ঠিক করলেন নিজেই উড়ন্ত যন্ত্র গড়ে ফেলবেন।
কিন্তু ব্যাপারটা যে অত সহজ নয় তা কাজে হাত দিয়ে হাড়ে হাড়ে বুঝতে পেলেন রাহুল। সমাধানের হদিস দিল ইন্টারনেট। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পাওয়া গেল ড্রোন বানানোর খুঁটিনাটি।
তবে ইংরেজি না জানা কৃষকের পক্ষে তা জানা সম্ভব নয়। জেদ সম্বল করে তাই এবার ইংরেজি শেখা শুরু করলেন রাহুল চাওদা। এরপর ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য পুঁজি করে স্বপ্নের ড্রোন গড়ায় উদ্যোগী হলেন তিনি।
ড্রোন তৈরি করার বিভিন্ন পার্টস আমদানি করতে ২ লাখ টাকা খরচ করে মার্কিন ও জাপানি সংস্থার শরণাপন্ন হতে হয় তাকে। আবার দেশি গাড়ির পার্টসও কাজে লাগিয়েছেন রাহুল। এমনকি জঞ্জালের স্তূপ ঘেঁটেও কলকব্জা জোগাড় করতে হয়েছে তাকে।
বেশ কয়েক মাসের পরিশ্রমে শেষ পর্যন্ত একজোড়া ড্রোন তৈরি করে ফেলেন রাহুল। তার সাহায্যে এখন শ্রমিক ছাড়াই খেতে সার ও কীটনাশক ছড়াতে পারছেন এই কৃষক। তবে এখানেই থেমে যেতে চান না তিনি, কৃষিতে উন্নয়ন ঘটাতে এবার বাণিজ্যিকভাবে ড্রোন তৈরি করার কথা ভাবছেন রাহুল। সূত্র : ইন্ডিয়াটাইমস
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি