এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রেম-ভালোবাসা মানুষ জাতিতে। কিন্তু প্রেম কাকে বলে তা দেখিয়ে দিলে এক তোতা পাখি! সঙ্গী পাশে নেই বলে অনশন শুরু করে দেয়। শেষমেষ ঢাকার আদালতের আদেশ, হৃদয়বিদারক এ বিচ্ছেদের অবসান হোক৷ অবশেষে তা-ই হলো৷ প্রেমিকা ফিরে পায় তার প্রেমকে৷ এ ঘটনা ঘটে ২০১৩-এ।
সত্যিই অবাক হবার মতো ঘটনা৷ মানুষে মানুষে কত মারামারি, হানাহানি! প্রতিদিন খুন, রাহাজানি, ধর্ষণ, নির্যাতন-নিপীড়নের খবর! এরই মাঝে এক তোতা পাখির অবিশ্বাস্য প্রেমকাহিনী৷
পাখিটির নাম ‘প্রিন্সেস'৷ থাকে বেসরকারি এক চিড়িয়াখানায়৷ চিরিয়াখানার মালিক আব্দুল ওয়াদুদ সুদূর ব্রাজিল থেকে কিনে এনেছিলেন ওকে৷ ভাগ্যটা ভালো ওর৷ এখানে এসে পেয়ে যায় প্রাণসজনীর দেখা৷ সেলিম নামের এক ভদ্রলোক ভাড়া বাসায় উঠবেন, সেখানে তোতা পাখি রাখার সুব্যবস্থা নেই বলে আব্দুল ওয়াদুদের কাছে রেখে যান ছেলে তোতা প্রিন্সকে৷
ওভাবেই মিলে যায় প্রিন্স আর প্রিন্সেসের জুটি৷ জমে যায় তোতা-তোতানীর সংসার৷ ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ছেলেমেয়েও হয় তিনটি৷ সব মিলিয়ে দারুণ সুখের সংসার৷ কিন্তু সে সুখে বাগড়া দেন প্রিন্সের মালিক সেলিম৷
নতুন বাড়িতে ওকে রাখার ব্যবস্থা আছে বলে প্রিন্সকে তার চাই৷ প্রিন্স আর প্রিন্সেসের বিচ্ছেদ হোক ওয়াদুদ সেটা চাননি৷ কিন্তু সেলিম কথা শুনলে তো! জোর করে নিয়ে গেলেন প্রিন্সকে৷ সেদিন থেকে প্রিন্সেসের মুখে রা নেই, খাওয়া-দাওয়া নেই, ওর কাছে জীবন যেন অর্থহীন৷
কিন্তু এভাবে চললে তো বাঁচানোই যাবে না প্রিন্সেসকে৷ বাধ্য হয়ে আদালতের স্মরণাপন্ন হন ওয়াদুদ৷ কাজ হয়েছে তাতে৷ ঢাকার এক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত অবিলম্বে প্রিন্সের কাছে প্রিন্সেসকে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। মানে প্রেমকাহিনী এখন সুন্দর সমাপ্তির দিকেই এগোচ্ছে৷
ঘটনাটি শুনে অনেকেই অবাক৷ কিন্তু প্রাণিবিজ্ঞানীরা বলছেন, দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের এ ধরনের পাখিদের বেলায় এটা নাকি খুব স্বাভাবিক৷ সোনালি-নীল এই পাখিরা নাকি বহুগামী নয়৷
জীবনে এক প্রেম, এক সঙ্গীতে বিশ্বাসী ওরা৷ তাই সঙ্গী নেই মানে কিছুই নেই৷ একাকী জীবনের অভিসাপ থেকে মুক্তি পেতে না খেয়ে খেয়ে মরে যাওয়া নাকি ওদের জন্য একেবারেই বিচিত্র নয়!
এদিকে তোতা পাখি মানুষের গলা অনুকরণ করতে পটু। কীভাবে শিখে ফেলে জানালেন ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। সম্প্রতি তোতার কথা শেখার রহস্য আবিষ্কার করা গেছে বলে দাবি তাদের।
তোতাপাখি নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে তারা দেখেছেন, পাখিটির ব্রেনে রয়েছে একটি বিশেষ অঞ্চল। যাকে তারা বলছেন কোরস। এই কোরসই গোটা ব্যাপারটা নিয়ন্ত্রণ করে। কোরস থাকার কারণে কণ্ঠ নকলে ওস্তাদ তোতা। শুধু নকলই নয়, শব্দ শুনে তা মনেও রাখতে পারে।
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে