মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৯:১৬:৫৭

ওঝার কথায় স্বামীর কাণ্ড, ৩ বছর রান্নাঘরে বন্দী স্ত্রী-সন্তান!

ওঝার কথায় স্বামীর কাণ্ড, ৩ বছর রান্নাঘরে বন্দী স্ত্রী-সন্তান!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : তিন বছর পর একটি বদ্ধঘর থেকে দুই সন্তানসহ এক মহিলাকে উদ্ধার করলেন ১৮১ হেল্পলাইনের আধিকারিকরা।  জানা গেছে, গ্রামেরই এক ওঝার কথা শুনে মহিলার স্বামী ও ভাসুর ঘরের রান্নাঘরে এত বছর ধরে আটকে রাখেন তাদের।

পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও কোনো লাভ হয়নি বলে দাবি ওই মহিলার।  রামোল পুলিশ স্টেশনে গিয়ে সব কথা জানানোর পরও পুলিশের দিক থেকে কোনো সাহায্য পাননি।  বরং অসুস্থ স্বামীর দেখভাল'র জন্য ওই মহিলাকে ফেরত পাঠানো হয়।

রামোল পুলিশ স্টেশনের এক পুলিশ অফিসারের কথায়, ওই মহিলার স্বামীর গোটা শরীর পুড়ে গিয়েছিল কোনো দুর্ঘটনায়।  এরপর থেকে সে কোনো কাজকর্ম করতে পারতো না।  

অন্যদিকে ভাসুরও একটি দুর্ঘটনায় শারীরিক দিক থেকে অক্ষম হয়ে পড়েন। ফলে অর্থনৈতিক দিক থেকে ভেঙে পড়ে পরিবারটি।

১৮১ হেল্পলাইনের আধিকারিকরা জানান, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ওই মহিলা কল করেন।  ঘরের শৌচাগার থেকে খুব নিচু গলায় ফোন করে সব কথা জানান এবং সেখান থেকে উদ্ধার করার কথা বলেন।

মহিলার কথা সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ওই হেল্পলাইনের আধিকারিকরা সব খোঁজ-খবর করেন।  সত্যতার পরই রামোলের ওই গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান আধিকারিকরা।

বাড়ির মূল দরজার ভেতর থেকে লক করা ছিল।  বাড়ির সমস্ত জানলাও বন্ধ ছিল বলে দাবি করেছেন আধিকারিকরা।  দরজা বন্ধ থাকায় ও ভেতর থেকে কোনো গলার আওয়াজ না পাওয়ায় দরজা ভেঙে ঘরের ভেতর প্রবেশ করেন তারা।  বন্ধ করা রান্নাঘর থেকে উদ্ধার করা হয় মহিলা ও তার ছেলেমেয়েকে।

প্রতিবেশীদের বক্তব্য, প্রায় দু’বছর ওই মহিলা ও তার ছেলেমেয়েকে বাড়ির বাইরে বেরতে দেখা যায়নি।  উদ্ধারের পর রামোল পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে ওই মহিলা ও তার সন্তানদের।

উদ্ধার হওয়া মহিলা জানিয়েছেন, স্বামী ও তার ভাসুর শারীরিক দিক থেকে কর্মক্ষম।  কিন্তু ভীষণ কুসংস্কারাচ্ছন্ন।  এক ওঝার কথা শুনে সন্তানসহ তাকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হত।  

ছেলে এবছরই এসএসসি পাস করেছে।  কিন্তু মেয়েটিকে বাড়ির বাইরে বেরোতে দেয়া হত না।  মহিলার স্বামী ভাবত, তার শারীরিক অক্ষমের জন্য তার স্ত্রী ও সন্তানই দায়ী।  সেই ভাবনায় পুরোপুরি সায় ছিল ভাসুরেরও।

রামোল পুলিশ স্টেশনের ইন্সপেক্টর পরেশ সোলাংকি জানিয়েছেন, ওই মহিলা তার স্বামীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি।  সন্তানসহ মহিলা নিজের বাড়িতেই চলে গেছেন।  

তবে এমন ঘটনা যাতে না হয় তার জন্য ওই বাড়ির দিকে বিশেষ নজর রাখা হবে বলে দাবি করেছেন সোলাংকি।।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে