এক্সুক্লুসিভ ডেস্ক : মানুষের মত প্রেমের ফাঁদে পাখিরাও কিন্তু আটকে যায়! এমনটাই উঠে এসেছে সাম্প্রতি সময়ে এক সমীক্ষায়। মানুষের মতো পাখিরাও সুখ ও দুঃখের সমন্বয়ে সংসার করে বলেও দাবী করা হয় ওই সমীক্ষা হতে।
জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইন্সটিটিউট অফ অর্নিথোলজির গবেষকরা জানিয়েছেন, নিজের পছন্দের সঙ্গী পেলে পাখিরাও সুখে ‘সংসার’ করে। সুস্থ থাকে এবং বেশিদিন বাঁচে। সমীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে পিএলওএস বায়োলজি জার্নালে।
বার্লিনে ‘জেব্রা ফিঞ্চ’ প্রজাতির পাখিদের নিয়ে সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালান গবেষকরা। সেখানে এই পাখিদের পাঠানো হয়েছিল ‘স্পিড ডেটিং’-এ। তবে তার আগে দু’টি দলে ভাগ করে নেওয়া হয়েছিল তাদের। ২০টি মেয়ে পাখির একটি দলকে দেওয়া হয়েছিল তাদের পছন্দের ‘ডেট’ বেছে নেওয়ার অধিকার।
রীতিমতো দেখে, শুনে, বিচার-বিবেচনা করে ২০ জন পুরুষ-সঙ্গীকে বেছে নেওয়ার পর ওই পক্ষীযুগলদের পাখিরালয়ের নিভৃতে ‘সংসার’ করতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
অবশিষ্ট পাখিদের অবশ্য এই সৌভাগ্য হয়নি। তবে খানিকটা নিজেদের ইচ্ছেমতও, খানিকটা আবার জোর করেই তাদের জোড়ায় বেঁধে দেন গবেষকরা।
এরপরই সকলের গতিবিধি পরীক্ষা করতে শুরু করেন পক্ষী-বিজ্ঞানীরা। কিছুসময় পর দেখা যায়, যেসব পাখিরা নিজেদের প্রেমাস্পদকে নিজেরাই বেছে নিয়েছে, তাদের হার বেশি। জীবনের আয়ুও বেশি। রোগভোগের ঘটনা কম। এমনকী তাদের শাবকদের জীবনও দীর্ঘমেয়াদি।
শুধু তাই নয়, এই পাখিজোড়ারা দ্বিতীয় দলটির তুলনায় বেশি পরিশ্রমী, সুখী এবং তারা তাদের শাবকদের লালনপালনের প্রতিও অনেকটাই বেশি দায়িত্বশীল।
বিজ্ঞানীদের ভাষায় পাখিদের এই ‘জুড়ি’দের জীবন সত্যিই ‘পারফেক্ট’! কিন্ত্ত অন্য দলটির ক্ষেত্রে এ কথা একেবারেই বলা যায় না। এই পাখিদের দলটিও প্রকৃতির ধারা মেনে বংশবিস্তার করেছে ঠিকই। একসঙ্গে থেকেছে। কিন্ত্ত তাদের মতোই তাদের শাবকদের জীবনের মেয়াদ বেশি নয়।
দেখা গিয়েছে, ডিম পাড়ার প্রথম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পর্যাপ্ত যত্নের অভাবে তাদের শাবকদের মৃত্যু হয়েছে। এই জুড়িগুলির সদস্যদের মধ্যে যোগাযোগের হার কম, সঙ্গমের হার কম। এমনকী, একে অন্যের প্রতি দায়িত্ববোধও লক্ষণীয়ভাবে কম। বিজ্ঞানীদের ভাষায় একেবারেই ‘হতাশাজনক’।
২৯ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন