শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৬, ০১:৪৪:০৫

জানুন টাইটানিক জাহাজের অজানা সব তথ্য

জানুন টাইটানিক জাহাজের অজানা সব তথ্য

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : পৃথিবীর সর্ববৃহত্তম জাহাজ ছিল টাইটানিক। যা ১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক যাওয়ার পথে আইসবার্গের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে গিয়েছিল। ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় জাহাজ ডুবির ঘটনা। তবে সেদিস কেন ডুবেছিল এই জাহাজটি?

এই জাহাজটি নির্মাণ করা হয়েছিল ইংল্যান্ডের লিভারপুল ডক ইয়ার্ডে। উষ্ণ জলের একটি সুইমিং পুল, একটি জিমনেসিয়াম, দুটো পাঠাগার, টেনিস খেলার মাঠ, বাগানসহ বিলাসিতার কোন কমতি ছিল না টাইটানিক জাহাজটিতে।

জাহাজটি সম্পর্কে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হারল্যান্ড অ্যান্ড ওলফ থেকে বলা হয়েছিল, ‘টাইটানিক আনসিংকেবল’ অর্থাৎ টাইটানিক কখনো ডুববে না। অথচ ৪৬ হাজার টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই বিশাল জাহাজ প্রথম যাত্রাতেই সবাইকে হতবাক করে নিন্মজিত হয়েছিল।

টাইটানিক জাহাজটি প্রথম সমুদ্রে ভাসানো হয় ১৯১১ সালের ৩১ মে। এ দৃশ্য দেখতে সে সময় প্রায় ১ লাখ লোক জড়ো হয়েছিল সমুদ্রের তীরে।

এরপর ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল ক্যাপ্টেন অ্যাডওয়ার্ড জন স্মিথের নেতৃত্বে জাহাজটি নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। যাত্রাপথে ১৪ এপ্রিল রাত ১১টা ৪০ মিনিটে নিউফাউন্ডল্যান্ড দ্বীপের কাছে ভাসমান হিমশৈলির ধাক্কা লাগে।

সেই ধাক্কাতে জাহাজটিতে ৩০০ ফুট আয়তনের এক বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়ে পানিরোধক অনেক কামরাও ভরে যায় পানিতে। এর মাত্র ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর জাহাজটি ডুবে যায়।

এ ঘটনায় ১ হাজার ৫১৭ জন যাত্রী ও ক্রু ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড উষ্ণতার সমুদ্রজলে অসহায় অবস্থায় প্রাণ হারান। ঘটনার ৭৪ বছর পর ১৯৮৬ সালের ১৪ জুলাই টাইটানিক পুনরাবিষ্কৃত হয়।

অর্থাৎ সমুদ্রে ডুবে যাওয়ার ৭৪ বছর পর টাইটানিক পুনরাবিষ্কার হয়। বহু চেষ্টার পর ১৯৮৫ সালে আটলান্টিকের অতলে টাইটানিকের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এরপর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২ হাজার ৬০০ ফুট নিচে ‘আনসিংকেবল টাইটানিক’র অবস্থান শনাক্ত করা হয়।

দেখা যায় দ্বিখণ্ডিত জাহাজটির দুটো টুকরো ১ হাজার ৯৭০ ফুট দূরে অবস্থান করছে। এবং জাহাজের সম্মুখভাগ সমুদ্রতলে ৬০ ফুট মাটির গভীরে প্রোথিত হয়ে আছে।

টাইটানিকের ডুবে যাওয়ার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কারণ কী ছিল? শুধু ভাসমান বরফের সঙ্গে ধাক্কা লেগে জাহাজটি ডুবে গেছে- সাধারণ মানুষ এটা মানতে রাজি নন।

অনেকে এটাও মনে করেন যে, নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হারল্যান্ড অ্যান্ড ওলফের আত্ম অহংকারও এর একটা কারণ হতে পারে। তারা দম্ভ করে বলেছিল, ‘টাইটানিক কখনো ডুববে না।’

তা ছাড়া, এই জাহাজে এমন রাজকীয় ব্যবস্থা ছিল যে, তার ভার বহন করাও ছিলো অসম্ভব।

জানা গেছে, ৮৮২ ফুট ৬ ইঞ্চি দীর্ঘ টাইটানিক জাহাজে তিনটি ফুটবল মাঠের সমান। ১৭৫ ফুট উঁচু জাহাজটিতে ছিলো নয়টি ডেক।

জাহাজটিতে ৩ হাজার ৩৩৯ জন যাত্রী এবং তাদের মালামাল নিয়ে ঘণ্টায় ২৭ মাইল গতীতে ছুটে যেতে পারত। এ জাহাজটির আলোকসজ্জার জন্য স্থাপন করা হয়েছিল ১০ হাজার বাল্ব।

৩ হাজার শ্রমিকের ২ বছরের নিরলস শ্রমের বিনিময়ে নির্মিত হয়েছিল টাইটানিক। যার নির্মাণব্যয় ছিল সেসময় ৭.৫ মিলিয়ন ডলার।

এ জাহাজটির যাত্রী ও ক্রুদের খাওয়াতে দরকার হতো ৭৫ হাজার পাউন্ড ওজনের মাংস, ১১ হাজার পাউন্ড মাছ, ৪০ হাজার ডিম এবং প্রতিদিন ১৪ হাজার গ্যালন পানি।

ডুবে যাওয়ার আগে জাহাজটিতে ৪০ মেট্রিক টন আলু, ৩ হাজার ৫০০ পাউন্ড পেঁয়াজ, ৩৬ হাজার আপেল এবং ১ হাজার পাউরুটি ছিল।
৩০ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে