মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১১:৫৭:০১

জেনে নিন সদ্যোজাত শিশুকে সুস্থ, সবল রাখার উপায়

জেনে নিন সদ্যোজাত শিশুকে সুস্থ, সবল রাখার উপায়

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : জন্মের পরের একটি বছর সব শিশুর জন্যই খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷ এ সময়ে শিশুকে ভালো রাখতে মা-বাবা এমন অনেক কিছুই করে বসেন, যাতে ক্ষতিই হয় বেশি৷ জেনে নিন সদ্যোজাত শিশুকে ভালো রাখার সহজ কিছু উপায়৷

১. মাসাজ
সব মা-ই বাচ্চার শরীর হালকাভাবে মালিশ বা মাসাজ করার গুরুত্ব কম-বেশি বোঝেন৷ তাই গায়ে তেল মাখিয়ে মালিশ করতে দেখা যায় ঘরে ঘরে৷ তবে খাওয়ার ঠিক আগে বা পরে মাসাজ না করাই ভালো৷ বাদাম তেল ঘরে থাকলে তা-ই শিশুর গায়ে আলতো করে বুলিয়ে দিন, তার একটু পরে গোসল করান৷

২.সাবধানে গোসল করান
শিশুর ত্বক খুব স্পর্শকাতর৷ তাই গোসল করানোর সময় কুসুম গরম, অর্থাৎ হালকা গরম পানি ব্যবহার করবেন৷ বেশি গরম পানি শিশুর ত্বকের জন্য ক্ষতিকর৷ শ্যাম্পু ব্যবহার করলে ভালো বেবি শ্যাম্পুই ব্যবহার করুন৷ শ্যাম্পু করার সময় শিশুর চোখ ঢেকে রাখতে ভুলবেন না৷ তবে সদ্য জন্ম নেয়া শিশুকে অবশ্য প্রথম তিন সপ্তাহ গোসল না করালেও চলে৷ ওই সময়ে হালকা গরম পানিতে নরম কাপড় ভিজিয়ে তা দিয়ে গা মুছে দিলেই গোসলের কাজ হয়ে যায়৷

৩.যেভাবে শোয়াবেন
অনেক মা তাঁর বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানোর সময় অনেকগুলো কাপড় একসাথে পরিয়ে নেন৷ ব্রিটেনের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডন কেলি বলেছেন, ঘুমানোর সময় শিশুকে আবহাওয়া অনুযায়ী হালকা কোনো কাপড় পরানোই সবচেয়ে ভালো৷ তার মানে এই নয় যে, শীতের সময় অনেকগুলো শীতের কাপড় পরিয়ে তারপর আবার কম্বল বা লেপটাও দেবেন৷ ডন কেলি জানিয়েছেন, খুব বেশি গরম বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর৷

৪.কাঁদলেই ভয় পাবেন না
শিশু কাঁদলেই ভয় পাবেন না৷ শিশুর কান্না মানেই যে সে খুব কষ্টে আছে, তা কিন্তু নয়৷ যুক্তরাষ্ট্রের শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ক গ্রন্থের লেখিকা জেনিফার ওয়াকার তো বলেছেন, ‘‘শিশুরা কাঁদার জন্যই প্রোগ্রাম করা৷ ও কাঁদছে বলেই ধরে নেবেন না আপনি ভুল কিছু করেছেন৷ শিশু অনেক সময় কেঁদে কেঁদে আপনার সঙ্গে কথাও বলে৷’’

৫.দাঁতের যত্ন
শিশুর দাঁতের যত্ন নেয়া খুব জরুরি৷ নিউইয়র্কের দন্ত্য চিকিৎসক প্রেসনর সওল বলেছেন, দুধ দাঁতেরও যত্ন নিতে হয়৷ দাঁত ওঠার আগ পর্যন্ত ভেজা কাপড় দিয়ে শিশুর মাড়ি পরিষ্কার করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷ আরো বলেছেন, যাঁরা ঘুমানোর ঠিক আগে শিশুকে খাওয়ান, মাড়ি ফুড়ে দাঁত বেরোতে শুরু করলে ওই সময়ে খাওয়ানো বন্ধ করতে হবে৷

৬.প্রকৃতির কাছে নিয়ে যান
শিশুকে যত প্রকৃতির কাছে নিয়ে যাবেন ততই ভালো৷ মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, টেলিভিশনের এই যুগে এটা আরো বেশি দরকার৷ অ্যামেরিকান পেডিয়াট্রিকস অ্যাকাডেমি এক গবেষণা করে দেখেছে, শিশুদের অন্তত দু বছর পর্যন্ত টিভি বা কম্পিউটারের পর্দার সামনে একেবারে না নেয়াই ভালো৷

৭.শিশুরা রং ভালোবাসে
শিশুদের চারপাশের জগতটাকে রঙিন করার চেষ্টা করুন৷ শিশু রং ভালোবাসে৷ ভালোবাসাটা শুরু হয় আট-নয়মাস বয়স থেকে৷ ওই সময় থেকেই শিশু নানা ধরণের রং, গন্ধ, শব্দ এবং স্পর্শের অনুভূতি বুঝতে শুরু করে৷

৮.চোখে চোখ রেখে হাসুন
জন্মের পর খুব কম সময়ের মধ্যেই শিশু নিজের মতো করে খেলতে শুরু করে৷ এমনকি অন্যের অভিব্যক্তি, খুশি, আনন্দ বুঝতে শুরু করার আগেই ও আনন্দ করতে শুরু করে৷ শিশুর সঙ্গে হাসুন৷ চোখে চোখ রেখে হাসুন৷ মনে রাখবেন, শিশু কথা বলতে পারেনা, তাই চোখ দিয়েই ও অন্যের সঙ্গে কথা বলে৷

৯.বাবার সঙ্গে
শিশুকে যা শেখাতে চান তা নিজে করে দেখাবেন৷ মা-কে তো শিশু সবসময়ই কাছে পায়৷ বাবারও উচিত শিশু সন্তানের সাথে যতটা সম্ভব সময় কাটানো৷

১০.হাঁটা
লক্ষ্য করবেন, ছোট জুতো পরার বয়স হওয়ার আগে কিন্তু শিশুরা সাধারণত হাঁটতে শেখেনা৷ আগে তো এত ছোট শিশুর উপযুক্ত জুতো-মোজা খুব একটা পাওয়া যেত না৷ এখন আর শিশুর কোনো পরিধেয়রই অভাব নেই বাজারে৷ সুতরাং হাঁটা শুরুর সময় শিশুকে ভালো জুতা-মোজা পরাতে ভুলবেন না৷ আর হ্যাঁ, ওই সময় ‘ওয়াকার’ কিনে দিলেও শিশুর কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করবেন৷

১১.প্রথম জন্মদিন
শিশুর প্রথম জন্মদিনটা খুব ধুমধাম করেই পালন করা হয়৷ খুব দীর্ঘ হয় পার্টি৷ কিন্তু শিশুর কথা ভেবে প্রথম জন্মদিনের অনুষ্ঠানের পার্টি সংক্ষিপ্ত রাখা উচিত৷ ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই শেষ করা উচিত আনন্দ-ফুর্তি৷ শিশু আসলে বেশিক্ষণ আনন্দ-হুল্লোড়ে ক্লান্ত হয়ে যায়৷

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে