এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : বর্ষার শুরুতেই খেলা দেখাচ্ছে ডেঙ্গি। ইতিমধ্যেই এই অসুখে আক্রান্ত হয়ে প্রাণও হারিয়েছেন কয়েকজন। তাই রাজ্যের চিকিৎসকেরা সমাবেতভাবে ডেঙ্গি নিয়ে সাবধান হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
তবে সত্যি কথা বলতে, সাধারণ জনগণের মধ্য়ে ডেঙ্গি নিয়ে তেমন একটা সচেতনতা নেই বললেই চলে। তাই এই অসুখ সম্পর্ক এমন অনেক তথ্য আমাদের মাঝে ঘুরে বেড়ায়, যার কোনও ভিত্তিই নেই।
তাই জনগণের মনে আলোড়ন ফেলা কিছু তথ্যের সত্যতা যাচাই করছি আমরা। আর আমাদের আজকের বিষয় হল, ডেঙ্গি মশা কি শুধুই দিনের বেলায় কামড়ায়? এই প্রশ্নের উত্তর জানার তাগিদ নিয়েই আমরা হাজির হয়েছিলাম সাগর দত্ত হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিনের অধ্যাপক এবং ইন্ডিয়ান কলেজ অব ফিজিশিয়ানের ডিন ডা: জ্যোতির্ময় পালের কাছে। তিনিই আমাদের এই বিষয়ে বিশদে জানালেন।
১. ডেঙ্গি মশা কি শুধু সকালেই কামড়ায়? ডা: পাল জানালেন, ডেঙ্গির পিছনে রয়েছে এডিস ইজিপ্টাই মশার হাত। আর সারাদিনের মধ্যে ভোরবেলায় এই মশার বাড়বাড়ন্ত বেশি দেখা যায়। তাই সাধারণত সকালের দিকেই এই মশা বেশি কামড়ায়। তবে প্রথমেই বলে রাখি, দিনের যে কোনও সময়ই এই মশা কামড়াতে পারে। এমনকী রাতেও এই মশার কামড়ে বিদ্ধ হতে পারেন। তাই ডেঙ্গি মশা নিয়ে ২৪ ঘণ্টাই সচেতন থাকা জরুরি।
২. রোগ ছড়ায় কী ভাবে? ডা: পালের কথায়, কোনও ডেঙ্গি আক্রান্তকে এডিস মশা কামড়ালে মশার শরীরে প্রবেশ করে ভাইরাস। এরপর সেই মশা কোনও সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ালে তার শরীরে ভাইরাস পৌঁছে যায়। এই কারণে তিনিও রোগের ফাঁদে জড়িয়ে পড়েন। এটাই হল ডেঙ্গি সংক্রমণের চক্র। তাই ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীকে মশারির ভিতরে রাখা উচিত। এতে তার থেকে অন্যদের মধ্যে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা অনেকটাই কমবে।
৩. সবার কিন্তু রোগ হয় না! ডেঙ্গি মশা কামড়ালেই যে আপনি সমস্যার ঠেলায় চোখে শর্ষেফুল দেখবেন, এমনটা নয়। আসলে আমাদের সবার শরীরেই রয়েছে ইমিউনিটি। এই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজের কাজটি ঠিকমতো কাজ করতে পারলেই অনেক ক্ষেত্রে রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা হেরে গেলে রোগের খপ্পরে জড়িয়ে পড়তে হয়। তাই এই বিষয়টি সবার আগে মাথায় রাখুন।
৪. প্রথমেই চিকিৎসা জরুরি: ডেঙ্গির প্রাথমিক লক্ষণ হল জ্বর, গায়ে হাত-পায়ে ব্যথা, মাথা ব্যথা ইত্যাদি। তবে অনেকের সমস্যা বাড়াবাড়ি দিকে মোড় যায়। তখন বমি বমি ভাব, একনাগাড়ে বমি হয়ে যাওয়া, প্রস্বাব কমে যাওয়া, খুব দুর্বলতা, প্রেশার কমে যাওয়া, গায়ে লাল লাগ দাগ ছোপ, এমনকী রক্তপাতও হতে পারে। আর এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলেই রোগীকে আর বাড়িতে রাখা যাবে না। বরং যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। তাহলেই তাঁর প্রাণ বাঁচবে।
৫. রোগ প্রতিরোধে জোর দিন: এই অসুখ প্রতিরোধ করতে চাইলে জনসাধারণের সাহায্য দরকার। তাই এই কয়েকটি নিয়ম মেনে চলুন-
১. বাড়ির আশাপাশটা পরিষ্কার রাখুন, কোথাও জল জমতে দেবেন না
২. বাড়ির আশপাশে পরে থাকা টব, বালতি এবং টায়ারে জল জমতে পারে, তাই এগুলি ফেলে দিন
৩. মশারি টাঙিয়ে শুতে যান
৪. ফুলহাতা জামা কাপড় পরুন। এতেই দেখবেন উপকার পাবেন।-এই সময়
Disclaimer: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।