কাকলি মুখোপাধ্যায়: দার্জিলিঙ্গের কালিম্পঙে কবিগুরুর স্মৃতিধন্য গৌরীপুর হাউস এখন ভূত বাংলো! রবীন্দ্রনাথের বাড়ির অবস্হা এতটাই খারাপ যে ওখানে সম্প্রতি একটি ভূতের সিনেমার শুটিংও হয়েছে৷ এলাকায় এখন বাড়িটার পরিচয় ভূতের বাড়ি! রবীন্দ্রনাথের বাসভবনের বদলে এলাকার মানুষ এখন বাড়িটা ভূত বাংলো বলেই চেনেন৷ অথচ কালিম্পিঙের এই বাড়ি থেকে কবিগুরু ১৩৪৫ সালের ২৫ বৈশাখ আকাশবাণীতে ‘জন্মদিন’ কবিতাটি আবৃত্তি করেছিলেন৷ সেই গৌরীভবন এখন ধ্বংসস্তূপ!
বাড়িতে ঢোকার রাস্তায় আগাছার জঙ্গল৷ জঙ্গল পেরিয়ে কবির স্মৃতিধন্য সেই বাড়িতে ঢুকতে গিয়েই হোঁচট খেলাম৷ দেখলাম বারান্দায় জামাকাপড় শুকোচ্ছে! ওরকম জঙ্গলের মধ্যে প্রায় ধ্বংসস্তূপে মানুষ কী করে থাকতে পারে? বাড়ির ভিতরে ঢুকে দেখা গেল একতলার অবস্হা খুবই খারাপ৷ ঘরের দেওয়াল ভেঙে পড়েছে৷ কোনও কোনও ঘরে আবার নতুন করে ফাটল ধরেছে৷ সম্প্রতি হয়ে যাওয়া ভূমিকম্পে৷ অর্ধেক জানলায় কাচ নেই৷ যেগুলিতে কাচ আছে তাও ভাঙা৷ কাঠের সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠতেই মুখোমুখি হলাম এক অবাঙালি পরিবারের৷ কর্ত্রী সুশীলা শর্মার বক্তব্য, ‘৪-৫ বছর ধরে এখানে ভাড়া থাকেন৷ বাইরের মানুষের আনাগোনা এখানে খুব কম৷ বি কে বসু বলে এক ব্যক্তির কাছে ওই বাড়িটি তিনি ভাড়া নেন৷ তবে এই বাড়িটিতে আলো নেই৷ রয়েছে পানীয় জলের সমস্যা৷ বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য চেষ্টা করেও কোনও ফল হয়নি৷’
কর্ত্রী বললেন যা, তাতে চমকে যাওয়ারই কথা৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থাকতেন যে বাড়িতে, তা নিয়ে আগ্রহ নেই প্রশাসনের! এতটা অনীহা! কেন? স্হানীয় মানুষের অভিযোগ, জি টি এ এবং রাজ্য সরকার দায় এড়াচ্ছে দু’পক্ষই৷ রবি ঠাকুরের যে বাড়ি হেরিটেজ হওয়ার কথা, তা নিয়ে স্হানীয় পুরসভা কেন আগ্রহ দেখাবে না? সে প্রশ্নও শোনা গেল অনেকেরই গলায়৷ কিন্তু, এই দায় এড়ানোর খেলা যাঁরা খেলছেন, তাঁদের হুঁশ ফিরবে কি? না, এ প্রশ্নের জবাব নেই কালিম্পঙের মানুষের কাছে৷-আজকাল