এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : মানুষসহ পৃথিবীর সব প্রাণীর সামগ্রিক ক্রিয়ার কেন্দ্র হচ্ছে মস্তিষ্ক। আর একটু পরিচর্চার মাধ্যমেই এটিকে রাখা যায় ইয়াং ও সক্রিয়। তবে এজন্য বেশি কিছু করার দরকার নেই। মাত্র একটি খাবার নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমেই মস্তিষ্কের বয়স ১১ বছর পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব! তাই কোনো বিশেষ খাবার নয়। স্রেফ আমাদের সবার পরিচিত পালংশাক।
দিনে নিয়মিত মাত্র একবেলা পালংশাক খাওয়ার মাধ্যমে চিন্তাশক্তির ওপর বার্ধক্যের প্রভাব কমিয়ে আনা সম্ভব। এর কারণ এতে বিদ্যমান ভিটামিন কে। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর রাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতার সঙ্গে সঠিক খাবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ইঁদুরের ওপর গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি চিনিসমৃদ্ধ খাবার দিলে তাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। এ ছাড়া ওজন বাড়লেও মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা হয়। অন্যদিকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার যেমন স্যামন মাছ, আখরোট ও সয়াবিনসমৃদ্ধ খাবার মস্তিষ্কের অবনমন রোধ করে।
আমরা অনেকেই একসঙ্গে অনেক কাজ (বা মাল্টিটাস্ক) করে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করার চেষ্টা করি। কিন্তু বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে মাল্টিটাস্ক বাস্তবে মানুষকে ধীর করে দেয়। এতে মনোযোগ বিক্ষিপ্ততা তৈরি হয়, যা সৃষ্টিশীলতার তুলনায় সমস্যাই বেশি তৈরি করে।
আপনার যদি কোনোকিছু মনে রাখার প্রয়োজন হয় তাহলে এ পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন। স্পেসড ইন্টারভাল রিপিটিশন (এসআইআর) নামে এ পদ্ধতিতে কোনো একটি বিষয় নির্দিষ্ট বিরতিতে অনুশীলন করা হয়। কোনো একটি বিষয় প্রাথমিকভাবে অনেক ধীরে ধীরে অনুশীলন করলেও পরে তা খুব দ্রুতগতিতে করা হয়। এ বিষয়ে বহু স্মার্টফোন অ্যাপও পাওয়া যায়।
গবেষকেরা ৫ বছর ধরে ৯৫৪ জন প্রৌঢ়ের খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক সক্রিয়তার ওপর তথ্য সংগ্রহ করেন। এতে দেখা যায়, যারা দৈনিক সবুজ শাক-সবজি খেয়ে থাকেন তাদের মানসিক দক্ষতা অন্যদের তুলনায় বেশি তীক্ষ্ণ। এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের বয়স ছিল গড়ে ৮১ বছর। দেখা যায়, যারা দিনে একবেলা বা দুইবেলা সবুজ শাক খেয়ে থাকেন তাদের মানসিক দক্ষতা থাকে তাদের চাইতে ১১ বছর কমবয়সী মানুষের সমকক্ষ।
পালংশাক ছাড়াও অন্যান্য শাকজাতীয় খাবার এক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বয়স কম রাখতে সাহায্য করে। পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা যায়, এক্ষেত্রে ফলেট এবং বেটা ক্যারোটিন উপকারি। কিন্তু নতুন এই গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন কে ওই দুটি উপাদানের মতোই উপকারি। গবেষকেরা মনে করছেন, ভিটামিন কেসমৃদ্ধ অন্যান্য খাবার যেমন অ্যাসপারাগাস, ব্রাসেলস স্প্রাউট এবং গাজরের মাঝেও একই ধরনের উপকারিতা থাকতে পারে। বয়সের সঙ্গে মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমার সঙ্গে যেহেতু আলঝেইমারস এবং ডিমেনশিয়ার সম্পর্ক রয়েছে, সুতরাং সহজলভ্য শাক খাওয়ার মাধ্যমে এই ঝুঁকি থেকে মস্তিষ্ককে রক্ষা করা যেতে পারে।
মন থেকে নেতিবাচকতা ত্যাগ করা হতে পারে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ধরে রাখার অন্যতম উপায়। যখন কোনো একটি বিষয়ে মস্তিষ্ক উদ্বিগ্ন থাকে তখন মস্তিষ্ক তা গ্রহণ করে এবং সেভাবে প্রস্তুত হয়। এ কারণে নেতিবাচক চিন্তাগুলো মস্তিষ্কে স্থায়ী হয়ে যায়। ফলে মধ্যবয়সে হতে হয় স্মৃতিভ্রংশের শিকার। অন্যদিকে ইতিবাচক ও গঠনমূলক বিষয় নিয়ে চিন্তা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।