এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রেমিক ৩৩ বছর ধরে অচেতন, তবুও থামেনি প্রেমিকার ভালোবাসা। যারা বিশ্ব প্রেমকাহিনীর ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন তাদের থেকেও কম নন এই জুটি।
রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট, লাইলি-মজনু কিংবা শাহজাহান-মমতাজের প্রেমের গল্প অনেক প্রাচীন, আবার কিছুটা কাল্পনিক। তবে আধুনিক যুগে এসেও অসাধারণ কিন্তু বাস্তব এক ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ফ্রান্সের এক প্রেমিক জুটি।
ফ্রান্সের এক সময়ের আন্তর্জাতিক ফুটবলার জেন পিয়েরি অ্যাডামস প্রায় তিন দশক ধরে আছেন কোমায়। ১৯৮২ সালে ৩৪ বছর বয়সে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর থেকেই নড়াচড়া একেবারে বন্ধ। এমনকি কথাও বলতে পারেন না। শ্বাস-প্রশ্বাসও নিতেও হয় একটি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে।
তিন দশকের এ অসুস্থতার মধ্যে একদিনের জন্যও অ্যাডামসকে ছেড়ে থাকেননি তারই স্ত্রী বার্নাডেট। পুরোটা সময়ই তার সেবা করে যাচ্ছেন তিনি।
সিএনএনকে বার্নাডেট জানান, ৩৩ বছরের অচেতন জীবনে স্বামীকে উপহার দিতেও ভুলেননি তিনি। তার জন্মদিন, বড় দিন কিংবা বাবা দিবসে উপহার এনেছেন প্রেমিকের জন্য।
চিকিৎসার জন্য তৈরি বিশেষ ধরনের একটি খাটের ওপর দিন-রাত শুয়ে থাকতে হয় অ্যাডামসকে। এ কক্ষটিতেই সারাক্ষণ কাটান বার্নাডেট।
প্রেমিকা বার্নাডেট বলেন, আমি ওর জন্য বিভিন্ন ধরনের টি-শার্ট, জাম্পার কিনে থাকি। খাটেই ওর পোশাক পরিবর্তন করাই। ওর প্রতিদিন পোশাক পরিবর্তন করাতে হয়। ওর কক্ষটি সাজাতে আরো কিছু জিনিস কিনতে হবে। অ্যাডামসের পছন্দ ‘প্যাকো রোবেন’ ব্র্যান্ডের জামা-কাপড়।
১৯৭০ সালের ফ্রান্স ইন্টারন্যাশনালের এই খেলোয়াড় বর্তমানে শুধু খাদ্য হজম করতে পারেন। চোখ বুজতে আর খুলতে পারেন তিনি। বার্নাডেট তার স্বামীর দেখাশোনা করেন। তাকে খাওয়ান, গোসল করান, পোশাক পরিবর্তন করান। প্রেমিকের সুন্দর ঘুমের জন্য নিজের ঘুম বিসর্জন দিতেও দ্বিধাবোধ করেন না।
অ্যাডমসকে রেখে বাড়ির বাইরে যাওয়া হয় না আমার। ওকে যখন খাওয়ানো হয় না বা দেখাশোনা করা হয় না, ও তা বুঝতে পারে। আমার বিশ্বাস, ও সব অনুভব করতে পারে। একটু'র জন্যও সরে গেলে ও ঠিকই বুঝতে পারে যে, আমি তার পাশে নেই।
২ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম