এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ভ্যালেন্টাইন ডে বা বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের মতোই চীনে পালন করা হয় কিক্সি ফেস্টিভ্যাল। ঐতিহ্যগতভাবে চীনা দম্পতিদের বিয়ে করার জন্য এটিকে একটি শুভ সময় বলে মনে করা হয়। চলতি বছরের ২২ আগস্ট চীনে উদযাপিত হয় কিক্সি ফেস্টিভ্যাল।
চীনের সিচুয়ান প্রদেশের মিয়ানইয়াং শহরের একটি বিয়ে রেজিস্ট্রেশন অফিস এই উৎসবে তরুণ-তরুণীদের বিয়ে লাইভ স্ট্রিম করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে একটি বিপত্তি ঘটে। খুব কম যুগলই সেদিন বিয়ে করতে আসেন। পরে বাধ্য হয়ে ওই লাইভস্ট্রিম বন্ধ করে দেওয়া হয়।
চীনে জন্মহারের পাশাপাশি বিয়ে করার প্রবণতাও কমছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, ২০১৩ সালে চীনে বছরে ১ কোটি ৩৫ লাখ বিয়ে হয়। আর গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৬৮ লাখ।
এ পরিসংখ্যান স্পষ্ট বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, চীনাদের মধ্যে বিয়ে করার প্রবণতা কমছে। সেইসঙ্গে ডিভোর্সের হারও বাড়ছে। আর এর ফলে একা থাকা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
চীনা তরুণরা বলছেন, বিয়ে আধুনিক জীবনের সঙ্গে বেমানান। সাংহাইর বাসিন্দা ২৬ বছর বয়সী ইয়ু ঝ্যাং বলেন, চীনে বিয়ে করার প্রথা একরকম নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে।
দুই বছর ধরে বান্ধবীর সঙ্গে বিয়ে ছাড়াই থাকছেন ল্যাবরেটরি টেকনেশিয়াঞ্জ ঝ্যাং। তিনি জানান, বান্ধবীর সঙ্গে অনেকবার তাঁর বিয়ের কথা হয়েছে। তবে তাদের কাছে মনে হয় এতে তারা আরও বেশি চাপে পড়বে। কারণ বিয়ের কারণে দুটি পরিবারের মধ্যে সম্পর্কের তৈরি হয়। তখন বাড়ি কেন ও পরিবার গঠনের একটি চিন্তা থাকে।
ঝ্যাং বলেন, আমার বান্ধবীর বাবা-মায়ের সঙ্গে আমার মায়ের বিরোধ আছে। আর জমির দামও বেশি। সেইসঙ্গে বাচ্চা হলে আরও খরচ বেড়ে যাবে।
চীনে ক'রোনা ভাইরাসের বিধিনিষেধ উঠিয়ে দেওয়ার পর ঝ্যাং এখন তাঁর বান্ধবীকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গিয়ে ও ঘুরেফিরে সময় পার করছেন। ঝ্যাং বলেন, যদি বাড়ি ও শিশুর জন্য ব্যয় করি তাহলে এসব করার জন্য অর্থ আমাদের থাকবে না।
চলতি বছরের মে মাসে চীনের বিয়ে বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশটির ২০টির বেশি শহরে পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। গত মাসে চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশ কর্তৃপক্ষ জানায়, যদি কোনো তরুণ-তরুণী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং ওই নববধূর বয়স ২৫ বছর বা তার কম হয়, তাহলে নতুন দম্পতিকে নগদ ১ হাজার ইউয়ান পুরস্কার দেওয়া হবে।