এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : চীনের গুয়াংজি প্রদেশের লিউলৌ গ্রামের ৯৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা লি জিউফ্যাং। মাথায় আঘাত পাওয়ার কয়েকদিন পর হঠাৎ করে ঘরের বাইরে বেরোনো বন্ধ করে দেন। দু’দিন পরও তাকে দেখতে না পেয়ে প্রতিবেশীরা জিউফ্যাংয়ের ঘরে যান। গিয়ে দেখেন নিথর দেহে বিছানায় পড়ে আছেন স্বামী-সন্তানহীন ওই বৃদ্ধা। শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ, কারও ডাকে সাড়া দিচ্ছেন না, যদিও তার শরীর গরম ছিল।
শেষমেশ গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠরা ১৮ ফেব্রুয়ারি সভা ডেকে জিউফ্যাংকে মৃত ঘোষণা করেন। সেখানকার রীতি অনুসারে জিউফ্যাংয়ের মরদেহ শেষ শ্রদ্ধার জন্য কফিনে ভরে কয়েকদিন তার নিজ বাড়ির উঠানে রেখে দেওয়া হয়। প্রতিবেশীরা ঠিক করেন ২৪ ফেব্রুয়ারি জিউফ্যাংকে সমাহিত করবেন।
ঘটনারদিন সকালে সবাই দেখেন কফিনের দরজা খোলা, সেখানে জিউফ্যাংয়ের মৃতদেহটি নেই। সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়ে যায়। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায় না জিউফ্যাংকে। অনেকক্ষণ পর গিয়ে দেখা যায়, জিউফ্যাং তার রান্নাঘরে রান্না করছেন। ভূত ভেবে সবাই প্রথমে ঘাবড়ে যান। কিন্তু পরে বৃদ্ধা জিউফ্যাং জানান, দীর্ঘ সময় ঘুমিয়ে থাকার পর তার অনেক ক্ষুধা পেয়েছিল। তাই খাবারের খোঁজে তিনি রান্নাঘরে আসেন। কিন্তু কিছু না পেয়ে এখন রান্না করতে বসেছেন।
স্থানীয় চিকিৎসকরা জানান, এটা নিয়ে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘আর্টিফিশিয়াল ডেথ’। এর কারণে রোগী অনেক সময় ছোট আঘাত কিংবা ট্রমা থেকে দীর্ঘ সময়ের জন্য নিস্তেজ হয়ে পড়েন এবং তাদের শ্বাস চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। তবে নির্দিষ্ট সময় পর শ্বাস-প্রশ্বাস আবারও স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়।
জিউফ্যাংকে আবারও জীবিত অবস্থায় কাছে পেয়ে খুশি তার প্রতিবেশীরা। মৃতদেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধার জন্য কিছুদিন কফিনে সংরক্ষণ করে রাখার রীতি আবারও জীবন ফিরিয়ে দিয়েছে জিউফ্যাংকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় জীবিত থেকেও এখন পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে গেছেন জিউফ্যাং। কারণ ওই এলাকায় আরেকটি প্রচলিত নিয়ম অনুসারে মৃত ব্যক্তির ব্যবহূত আনুষঙ্গিক সব জিনিস পুড়িয়ে ফেলা হয়। তাই দরিদ্র এ বৃদ্ধা লম্বা ঘুম ভেঙে উঠে দেখেন, তার সামান্য কয়েকটা পোশাক, স্যান্ডেল আর আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র যা ছিল সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
সূত্র : ডেইলি মেইল