এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : যারা একা থাকেন তাঁদের জীবন অনেকটা নিরানন্দে কাটে৷ তারপর যদি হয় শীতকাল তাহলে কষ্টের মাত্রা আরো বেড়ে যায়৷ একজন সুস্থ মনের মানুষ একজন সঙ্গী কামনা করবেন সেটাই তো স্বাভাবিক, তাইনা? তবে মনের মতো একজন সাথী পাওয়া যে খুব সহজ ব্যাপার নয় সেকথা প্রাপ্ত বয়স্করা ভালো করেই জানেন৷ তবে নিয়ম জানা থাকলে সঙ্গী পাওয়া সহজ হয়৷ সেরকমই কিছু টিপস দিয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ এফা ব্লোডারেক৷
নিজের কাছে কিছু প্রশ্ন
প্রথমেই ভাবতে হবে আপনার কেন সঙ্গী নেই বা পুরনো সম্পর্ক কেন শেষ হয়ে গেলো? অতীতে কি ভুল করেছেন এবং সেখান থেকে আপনি কি শিখেছেন? আর এখন কেমন সঙ্গী চান? নিজের হৃদয়ের কাছে এসব প্রশ্ন করুন৷ আর এই প্রশ্নের উত্তরগুলোই নতুন সঙ্গী পেতে অনেক সাহায্য করবে৷
ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলুন
আপনি নারী বা পুরুষ যেই হোন না কেন প্রথমেই প্রয়োজন নিজের প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা৷ নিজের ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তুলুন৷ নিজের গুণ এবং যোগ্যতা সম্পর্কে সচেতন হোন৷ অর্থাৎ নিজের ভেতরের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে ভাবুন৷
স্বপ্নের মানুষ
স্বপ্নের মানুষ কিন্তু আপনার দরজায় এসে ‘নক’ করবেনা৷ কাজেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেয়ে সবার সাথে মেলামেশা করুন৷ আপনি সঙ্গী খুঁজছেন সেকথা মাথায় ‘না’ রেখেই সহজভাবে কথা-বার্তা বলুন৷ নিজের হবি বা ভালো লাগার কথাও শেয়ার করতে পারেন সবার সাথে৷ কাছের বন্ধুদের সাথেও এ বিষয়ে কথা বলতে পারেন, হয়তো তারা আপনাকে সহযোগিতা করবে৷
মিডিয়ার সাহায্য
শোনা যায় অনেকেই আজকাল ইন্টারনেটের মাধ্যমে সঙ্গী খোঁজেন, কেউ পান আবার কেউ পাননা৷ তাছাড়া এ সম্পর্কে নানা নেতিবাচক গল্পও শোনা যায়৷ এসব কথায় সেভাবে কান না দিয়ে নিজে সচেতনভাবে খোঁজখবর রাখতে পারেন৷ সামাজিক গণমাধ্যমে অনেকে জীবন সঙ্গী পেয়েছেন এবং সুখী হয়েছেন – এটাও কিন্তু দেখা গেছে গত কয়েক বছরে৷ কাজেই মন চাইলে এগিয়ে যান৷ কারণ যোগাযোগের জন্য কোনো মাধ্যমতো লাগবেই৷
সহজ থাকুন
সঙ্গীর সাথে প্রথম দেখা হলে ভয় বা নার্ভাস না হয়ে একেবারে সহজ থাকুন৷ প্রথমদিনই এমন কোনো প্রশ্ন করবেন না যাতে আপনার সঙ্গী বিব্রত বোধ করেন৷ প্রথম দেখায় কিছুটা ভালো লাগলে বরং পরে কবে দেখা হবে সেই দিন তারিখ ঠিক করে নিন৷ বেশি সিরিয়াস বিষয় নিয়ে কথা না বলে বরং ভ্রমণ, সিনেমা, বই, কিংবা রেস্তোরাঁর গল্প করতে পারেন৷ সাবধান, কোনভাবেই প্রথমদিনই অসুখ-বিসুখ, টাকা পয়সা, ধর্ম বা রাজনীতির কথা নয়!
হাসতে নেই মানা!
অনেক নারী, পুরুষই পরিচয় পর্বকে কিছুটা ‘মানসিক চাপ’ বলে মনে করেন এবং ভাবেন তাদের সঙ্গীকে মুগ্ধ করার জন্য বিশেষ কিছু দেখাতে বা করতে হবে৷ আসলে তেমন কিছু করার প্রয়োজনই নেই৷ বার্লিনের মাক্স-প্লাংক ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মুখে একটু হাসি রেখে আর আড়ষ্ট না থেকে শরীরের সহজ চালচলই যথেষ্ট৷
অন্যজনকে গুরুত্ব দিন
আপনার উল্টো দিকে যিনি বসে আছেন তাঁর প্রতি আগ্রহ দেখান, নিজে কথা বলার চেয়ে তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন৷ এমন প্রশ্ন করুন যেন তার উত্তর শুধু হ্যাঁ বা না, না হয়৷ যেমন প্রশ্ন হতে পারে, আপনি অন্য শহর ছেড়ে এখানে এসেছেন কেন?
একটু সেকেলে
দিন বদলে গেছে, সময় পাল্টেছে, একথা ঠিক৷ তারপরও কিন্তু কে পুরুষ, আর কে নারী তা প্রথমদিন মনে রাখাই শ্রেয়৷ এই প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের ভাষা অনেকটা এরকম, আগামী সপ্তাহে দেখা হলে কেমন হয়? একথা না বলে, বলা যেতে পারে, আজকের সন্ধ্যাটা খুব সুন্দর কাটলো, এরকম দিন রিপিট হলে আমার দিক থেকে কোনো অসুবিধা নেই। অর্থাৎ এসব কথা একটু সেকেলে হলেও অসুবিধা নেই বরং এতে ভদ্রতার প্রকাশ ঘটে৷
আশাবাদী
আগে থেকে যতটা খুশি বা আনন্দিত ছিলেন, দেখা বা কথা হওয়ার পর তা না হলে মন খারাপ করার কিছু নেই৷ আশা ছেড়ে না দিয়ে, ভালোবাসার আসল মানুষ পেতে অপেক্ষা করুন, ধৈর্য্যহারা হবেন না৷ কারণ হৃদয়ের জন্য ‘শেষ তারিখ’ বলে কিছু নেই৷ তাছাড়া হৃদয়ের ত্বকে কিন্তু বলিরেখা পড়েনা৷ ভালোবাসা চিরসবুজ, যেভাবে যত্ন করবেন, সেভাবেই থাকবে৷