এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : দুধ খুবই পুষ্টিকর পানীয়। এটি বিভিন্নভাবে খাওয়া হয়। জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শরীরের নানা প্রয়োজনীয় ঘাটতি মেটাতে দুধ খেয়ে থাকি আমরা। এর মধ্যে সন্তান কিছুটা বড় হওয়ার গরুর দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদরা।
তবে চারপাশে এমন কিছু মানুষ রয়েছে, যারা মনে করেন দুধ ফুটিয়ে পান করলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য তারা কাঁচা দুধ খান। পাশাপাশি অন্যদেরও এ পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আসলেই কি কাঁচা দুধ শরীরের জন্য উপকারী, নাকি ক্ষতিকর? এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতার বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠা রায় দত্ত। তাহলে তার ভাষ্যমতে কোন দুধ উপকারী, তা জেনে নেয়া যাক।
পুষ্টিগুণে ভরপুর দুধ : এ পুষ্টিবিদের কথায়, এক কাপ দুধ থেকে ১৪৯ ক্যালোরি শক্তি, ৮ গ্রাম প্রোটিন এবং ৮ গ্রাম ফ্যাট পাওয়া যায়। দুধ হচ্ছে ভিটামিন এ, ডি, ই, কে, জিঙ্ক ও ক্যালশিয়ামসহ একাধিক ভিটামিন ও খনিজের উৎস। এই তরলে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিনও রয়েছে। এ কারণে নিয়মিত দুধ খেলে পেশি থেকে হাড় এবং শরীরের একাধিক অঙ্গের হাল ফেরানোর কাজে উপকার পাওয়া যায়।
কাঁচা দুধ কি আসলেই উপকারী : এ প্রশ্নের জবাবে পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠা জানান, অনেকেই মনে করেন কাঁচা দুধ শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু বিষয়টি মোটেও তা নয়। বরং কাঁচা দুধ পানে শরীরের নানা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গরু বা মহিষের দুধ কাঁচা খেলে নানা রকমের ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশের সুযোগ পায়।
এ কারণে অনেক সময় বমি, ডায়েরিয়া থেকে শুরু করে নানা জটিল অসুখ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আবার নিয়মিত কাঁচা দুধ খেলে দীর্ঘমেয়াদে আর্থ্রাইটিস, গ্যাসট্রাইটিসের মতো জটিল অসুখ হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।
ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকলেও চলবে না : কাঁচা দুধ পানে ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের ফাঁদে পড়ার সম্ভাবনা কমে। এ জন্য অনেকে এ রোগে ভুক্তভোগীদের কাঁচা দুধ পানের জন্য পরামর্শ দেন।
এ ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে যে, ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থেকে রক্ষা পেতে কাঁচা দুধ পানে একাধিক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের আশঙ্কা বাড়বে। এমনকি দীর্ঘমেয়াদে বিপদে পড়ারও সম্ভাবনা থাকে। এ জন্য কাঁচা দুধ না খেয়ে সোয়া বা আমন্ড দুধ খেতে পারেন। এতে যেমন বিপদের আশঙ্কা থাকবে না, তেমনি উপকার পাবেন।
দুধ ফুটিয়ে খেতে হবে : পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠার ভাষ্যমতে, সুস্থ-সবল থাকার জন্য দুধ ফুটিয়ে খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। এতে দুধে থাকা একাধিক ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয়। পাশাপাশি কোনো অসুখ হওয়ারও আশঙ্কা থাকে না। আবার ফুটিয়ে খাওয়ার ফলে পুষ্টিগুণও তেমন কমে না। এ জন্য দুধ পান করলে ফুটিয়ে করুন।
দই-ছানা : দুধের পাশাপাশি দই, ছানা ও পনিরও খেতে পারেন। এসব খাবারও পুষ্টিকর। এতে প্রোটিন থেকে শুরু করে নানা ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। তাই সুস্থ থাকতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় দুগ্ধজাত খাবার রাখতে পারেন।