শুক্রবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ১২:০০:৫৯

সবাই তো সুখী হতে চায়, তবে সুখী হওয়ার কি উপায়?

সবাই তো সুখী হতে চায়, তবে সুখী হওয়ার কি উপায়?

সীমান্ত প্রধান : সুখ! সুখী হতে আমরা কত কি-ই না করে থাকি। যখন নিজেকে অসুখী ভাবতে শুরু করি, তখন হতাশ হয়েই গেয়ে উঠি, ‘সুখ তুমি কি বড় জানতে ইচ্ছে করে’।

কেউ কেউ বলেন, সুখটা আসলে আপেক্ষিক। তবে আর যা হোক গানও কিন্তু আছে, ‘সবাই তো ‍সুখী হতে চায়, কেউ সুখী হয় কেউ হয় না’। তাহলে কি সুখী হওয়াটা খুবই কঠিন!

না। সুখী হওয়াটা মোটেও কঠিন কোন কাজ নয়। সুখী হতে হলে আপনার ইচ্ছেটাই যথেষ্ট। কিছু জিনিস মেনে চলতে পারলে আপনিও বুক টান করে বলতে পারবেন, ‘আমি খুব সুখী’।

তাহলে কি করতে হবে আপনাকে? খুব বেশি কিছু নয়। সুখী হতে হলে ১৬টি উপায় মেনে চললেই আপনি সুখী হতে পারবেন। আর তা জানিয়েছে হাফিংটন পোস্ট। তাহলে কি সে উপায়? আসুন পড়ে জেনে নিই।

১। আপনি জানেন কি, কৃতজ্ঞতা বোধ মনের শান্তি অনেক বৃদ্ধি করে? তাই সর্বত্র কৃতজ্ঞ হোন। কোনো কাজের জন্য অন্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ জ্ঞাপন করতে মোটেও ভুল করবেন না। এটি আপনার মনের সুখ অনেক বেশি বৃদ্ধি করবে।

২। সুখ নষ্টের অন্যতম দুটি কারণ হলো অতীত ও ভবিষ্যৎ। তাই সুখী হতে চাইলে এই দুটি নিয়ে ভাবা বন্ধ করুন। মনোযোগী হোন বর্তমানে। মনে রাখবেন, অতীত কিংবা ভবিষ্যতের চেয়ে বর্তমান কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফলে অতীতে কী হয়েছে, ভবিষ্যতে কি হবে, এ নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করার কোন মানে নেই। ভাবুন বর্তমানটাকে কিভাবে সুন্দর করা যায়।

৩। কে আপনাকে উৎসাহিত করল, কে করল না, তা নিয়ে বসে থাকবেন না। নিজেই নিজের জন্য অনুপ্রাণিত হোন। এক্ষেত্রে খুব খেয়াল করে ভেবে দেখুন, কোনো বিষয় যদি আপনার সুখের অন্তরা হয়, তবে তা এখনই ত্যাগ করুন। আমাকে পারতেই হবে, এমন সংকল্প দৃঢ় করুন।

৪। মানুষের জীবনকে অনেক বেশি সুন্দর করে তোলে উদারতা। তাই উদার হোন। মনের শান্তি বাড়াতেও উদারতা খুব চমৎকার কাজ করে।

৫। ভালো থাকার জন্য হাসির কোনো বিকল্প নেই। তাই বলে, অন্য কেউ আপনার হাসির কারণ হলে এরপর যে হাসতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। নিজের জন্যও হাসি দেওয়া যায়। আর এই হাসি যে কোনো গুরুগম্ভীর পরিস্থিতিও সামলাতে চমৎকার কাজ করে। হাসি মানুষের সুখ বৃদ্ধি করে। সুস্থ রাখতেও সহায়ক হাসি। তাই বেশি করে হাসুন এবং সুখী হোন।

৬। স্থির হোন। স্থির হওয়াটা সুখী হওয়ার মুল একটি উপাদান। তাই বুদ্ধিমানরা যা করেন স্থির হয়েই করেন। যেমন, বুদ্ধিমান মানুষ সবখানে যুদ্ধ করতে যান না। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় স্থানটি বেছে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার মানসিক শান্তিও বাড়াবে।

৭। যা কিছু করবেন না কেন, তা নিয়ে পরিকল্পনা করুন। এবং সেক্ষেত্রে আপনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান। তবে মনে রাখবেন, অভিজ্ঞতা কখনোই হঠাৎ করে তৈরি হয় না। দীর্ঘদিন ধরে প্রচেষ্টার পর অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়। আর এখানে পরিকল্পনা করে বিষয়টি অর্জন সম্ভব হলে মনে সুখের মাত্রা অনেকাংশে বেড়ে যায়।

৮। যত যা হোক, পুরনো বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করুন। দেখবেন, পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলে কতোই না ভালো লাগে! এ কারণে পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন এবং তাদের সহায়তায় মনের সুখ বাড়িয়ে নিন।

৯। কাউকে সহয়তা করতে ভুলবেন না। তবে সহায়তা করুন নিঃস্বার্থে। দেখবেন অন্যকে যদি আপনি নিঃস্বার্থে সহায়তা করেন, তবে এতে আপনার মানসিক প্রশান্তি বৃদ্ধি পাবে। এটি অবশ্য আপনাকে দীর্ঘমেয়াদে সুখী করে তুলবে।

১০। হঠাৎ করে কোনো লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারলে আপনার তা অর্জন করা সম্ভব নাও হতে পারে। তাই লক্ষ্য নির্ধারণ করুন অর্থবহ। তাই লক্ষ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিন। কারণ আপনি যদি লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন, তবে সেখানে সুখ আপনার নখ-দর্পণে।

১১। বিনোদন থেকে দূরে সরে যাবেন না। তবে বিনোদনের তালিকায় যুক্ত রাখুন মজার মজার সব সিনেমা। এতে আপনার মনের শান্তি অনেকাংশে বাড়িয়ে দেবে।

১২। নিয়মিত হাঁটুন। সুস্থ্ থাকার জন্য শরীরও ঠিক রাখা প্রয়োজন। আর সুস্থ শরীরের সাথে মনেরও একটা গভীর সম্পর্ক থাকে। তাই প্রয়োজনের তাগিদেই একটু হেঁটে নিন।

১৩। ক্ষমা হচ্ছে অন্যতম একটি মহৎ গুণ। অন্যকে ক্ষমার মাধ্যমে পাওয়া যায় অনাবিল আনন্দ। তাই ক্ষমা করতে শিখুন। এতে আপনার মনের শান্তি বাড়বে।

১৪। নিজেকে নিজেই চিঠি লিুখন। তবে চিঠিটা লিখবেন অতীতে আপনাকে। বর্তমান আপনি কেমন? বর্তামানে কি কি অভিজ্ঞতা হল আপনার? তা জানিয়ে চিঠি লিখুন। এতে আপনার আগের আপনির অবস্থানকে জানিয়ে দিন যে, আপনি আর আগের মতো নেই।

১৫। আমাদের অনেকেরই অনেক অভিযোগ থাকে। তাই সাবধান হোন। যখন তখন অভিযোগ করবেন না। কিছুটা হলেও অভিযোগ ভুলে যান। তুলে রাখুন অন্য কোনো সময়ের জন্য।

১৬। পারেন তো নিয়ম করে সূর্যাস্ত দেখুন। সূর্যাস্ত মানে কিন্তু একটি দিনের শেষ। একদিন শেষ মানে আপনার জীবন থেকে একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি। তাই সূর্যাস্ত দেখুন এবং এ বিষয়টি নিয়ে কিছুক্ষণ ভেবে নিন। বর্তমান সময়কে সুখী হিসেবে গড়ে তুলতে উপায় অনুসন্ধান করুন।
৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে