এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রেম মানেই নাকি মনের দুয়ারে এক জনই দাঁড়িয়ে। আধিপত্যও একা তার। একাধিক ব্যক্তি মনে ঠাঁই পেলেই সামাজের চোখরাঙানি, হাজারো জবাবদিহি, চরিত্র নিয়ে কাটাছেঁড়া। কিন্তু সত্যিই কি এটা অন্যায়?
দেশ-বিদশের নানা সমীক্ষা বলছে, বেশির ভাগ মানুষের মনেই ঘাপটি মেরে থাকে অন্য আর একজনের প্রতি টান। সেই টানে কেউ কেউ সম্পর্ক পর্যন্ত গড়ান, কেউ বা সমাজের ভয়ে ঢোঁক গেলেন ওখানেই। কিন্তু কেন এমন হয়? কী বলছে বিজ্ঞান?
মনোবিজ্ঞানের মতে, প্রত্যেকটি মানুষই বিভিন্ন পৃথক বৈশিষ্ট্যযুক্ত হন। এক জন মানুষের মধ্যে সবটুকু পছন্দের বৈশিষ্ট্য যে মিলবেই, এমন নয়। তাই ভালো লাগার কোনও গুণ বা স্বভাব থেকে প্রেম বা ভালোবাসার অনুভূতি দু’জনের প্রতিই জন্মাতে পারে। পিটুইটারি গ্রন্থি ও ফিল গুড হরমোনরাই এর জন্য দায়ী।
এ প্রসঙ্গে মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘জন্মের শুরু থেকেই এক সঙ্গে দু’জনকে অর্থাৎ মা-বাবাকে ভালোবাসে মানুষ। কাজেই একসঙ্গে দু’জনকে ভালোবাসার ক্ষমতা তার জন্মগত। কিন্তু যখনই সম্পর্ক বা দাম্পত্যের কথা আসে, তখনই আমরা সতর্ক হয়ে যাই।’
মনোবিদের মতে, ‘আসলে সমাজ এই সব সম্পর্ককে বাঁধে সামাজিক ও আর্থিক সুবিধা বুঝে। এই সব জটিলতা এড়াতেই সে নিজস্ব কিছু নিয়ম চালু করে ও সেখানে যৌনতাকেও জুড়ে দেয়। তবে মনে রাখা দরকার, সম্পর্ক কিন্তু মোটেও শরীরসর্বস্ব নয়। শরীরে এক জনের হয়ে মনে মনে দু’জনের হয়ে থাকাও যা, মন ও শরীর উভয়েই দু’জনের হয়ে থাকায় কোনও ফারাক নেই।’
তাঁর মতে, ‘‘কেউ দু’জনকেই ভালোবাসি বললে, তাকে ‘মিথ্যে’ বলে ধরে নেওয়ার প্রবণতা আমাদের রয়েছে। বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে সেখানে। কিন্তু অনেকেই দায়-দায়িত্ব দু’জনের ক্ষেত্রেই পালন করেন। এখানে অবশ্যই সঙ্গের মানুষদের অভিমান বা কষ্টের বিষয়টি আলাদা প্রসঙ্গ। কিন্তু কেউ দু’জনকে ভালোবাসার দাবি করলে তা মিথ্যে নয়।’’
তবে ভালোবাসার মধ্যেও রকমফের হয়। কোনওটা দীর্ঘস্থায়ী হয়, কোনওটা কিছুদূর হেঁটেই পথ বদলায়। তাই বুঝে নেওয়া দরকার, কোনটা ক্ষণিকের ভালোলাগা আর কোনটা টিকে থাকার মতো অনুভূতি। তবে দুই সঙ্গীকেই দু’টি সম্পর্কে থাকার কথা জানানোর বুকের পাটা পান না অশান্তি আর সমাজের ভয়েই। তাই বেছে নিতে হয় একজনকে। তৈরি হয় জটিলতা। সূত্র : আনন্দবাজার