এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : মানুষের জীবনের অন্যতম প্রয়োজনীয় বিষয় হলো টাকা। টাকা ছাড়া জীবনে দরকারি অনেক কিছুই করা সম্ভব হয় না। আত্মনির্ভরশীল হতে টাকা আয় করার কোনো বিকল্প নেই।
তাই ছাত্রজীবন থেকেই টাকা আয় করতে শেখা গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্রজীবন থেকে টাকা আয় করার ৫টি উপায় নিয়ে লিখেছেন খুলনার নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির প্রভাষক এম এম মুজাহিদ উদ্দীন।
টিউশনি করে আয়
ছাত্রজীবনে টাকা আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হলো টিউশনি করা। এতে একদিকে যেমন টাকা আয় হয়, অন্যদিকে পড়াশোনার চর্চাও থাকে। কথায় আছে, ‘জ্ঞান বিতরণ করলে জ্ঞান বাড়ে’। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞানের মতো বিষয় পড়ালে সরকারি চাকরির প্রস্তুতি হয়ে যায়। বিসিএস, ব্যাংকসহ বেশির ভাগ সরকারি চাকরির পরীক্ষার অনেক প্রশ্ন থাকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বই থেকে। এ ছাড়া টিউশনি করলে বিষয়ভিত্তিক বেসিকও ভালো হয়।
স্বল্প পুঁজির ব্যবসা করে
ব্যবসা করার জন্য সব সময় যে অনেক বেশি পুঁজি বা মূলধনের দরকার হয়, তা নয়। স্বল্প পুঁজিতেও ব্যবসা শুরু করা যায়। ছাত্রজীবনে আপনি পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন রকম স্বল্প পুঁজির ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
স্বল্প পুঁজির ব্যবসার অনেক রকম আইডিয়া আছে। যেমন আপনার কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো ব্যবহার করে নানা রকম ডিজাইনের টি-শার্ট, জার্সি, চাবির রিং, ব্যাজ ইত্যাদি তৈরি করে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করতে পারেন।
এ ক্ষেত্রে ফেসবুকে প্রচার চালাতে পারেন। ক্যাম্পাসের কোথাও বুথ বসাতে পারেন। এ ছাড়া একটা কম্পিউটার আর প্রিন্টার থাকলে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট প্রিন্টের ব্যবসা করতে পারেন।
লেখালেখি করে খ্যাতি ও আয়
আপনি যদি ভালো লিখতে পারেন, তাহলে লেখালেখি করেও টাকা আয় করা যায়। জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ফিচার লেখা, ব্লগ, নিউজ পোর্টাল ও ম্যাগাজিনে লিখে আয় করা যায়।
যারা ফেসবুক, ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরি করে, তাদের ভিডিওর জন্য স্ক্রিপ্ট লেখা, ফেসবুক পেজের পোস্ট লিখে দিয়ে আয় করতে পারেন। এ ছাড়া আপনার যদি একটা ভাষা থেকে অন্য ভাষায় অনুবাদ করার দক্ষতা থাকে, তাহলে আপনি অনুবাদ করার মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
বিভিন্ন প্রকাশনী তাদের বই ভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করার জন্য ভালো অনুবাদক খোঁজেন। এর জন্য ভালো সম্মানীর ব্যবস্থা থাকে। বিদেশি বিভিন্ন ভাষার বিখ্যাত বই বাংলায় অনুবাদ করেও বই প্রকাশ করতে পারেন। এ ছাড়া আপনি লেখালেখিতে খুব ভালো হলে বিখ্যাত কোনো প্রকাশনীর মাধ্যমে বই লিখে প্রকাশ করে হয়ে যেতে পারেন একজন খ্যাতিমান লেখক।
খণ্ডকালীন চাকরি করে আয়
ছাত্রজীবনে খণ্ডকালীন চাকরি করে আয় করা একটা চমৎকার মাধ্যম হতে পারে। ছাত্রজীবনে খণ্ডকালীন চাকরি করার প্রবণতা বাংলাদেশে অনেক বেশি প্রচলিত না হলেও বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে এটা খুবই কমন বিষয়।
উন্নত দেশগুলোতে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করে থাকে। আপনি পড়াশোনার পাশাপাশি ভালো কোনো রেস্টুরেন্ট, শপিংমলে জব করতে পারেন।
বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও স্বল্প বেতনে ইন্টার্নশিপ করতে পারেন। বইমেলা, বাণিজ্য মেলাসহ বিভিন্ন মেলায় খণ্ডকালীন চাকরির ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এসব খণ্ডকালীন চাকরি করলে একদিকে যেমন আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে যুক্ত হবে নতুন পালক, অন্যদিকে আপনার অর্থও আয় হবে।
কম্পিউটারের দক্ষতায় আয়
আপনার যদি কম্পিউটারের কোনো একটি সফটওয়্যারে ভালো দক্ষতা থাকে, তাহলে আপনি এটা ব্যবহার করে আয় করতে পারেন। ভিডিও এডিটিং যদি খুব ভালো পারেন, তাহলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তির ভিডিও এডিট করে আয় করতে পারেন।
এ ছাড়া নিজেই একটা ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ খুলে সেখানে ভিডিও আপলোড দিয়ে দেশে বসে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারেন। বর্তমানে ভিডিও এডিটের খুব ভালো চাহিদা রয়েছে।
গ্রাফিকস ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট করেও আয় করার সুযোগ রয়েছে। অ্যানিমেশন, থ্রিডি মডেল, কার্টুন ইত্যাদির কাজ জানলে আপনি এগুলো দিয়ে আয় করতে পারেন।
ডিজিটাল যুগে মার্কেটিং হয় ডিজিটাল মাধ্যমে, তাই ডিজিটাল মার্কেটিং শিখেও আয় করতে পারেন। শুধু তা-ই নয়, আপনি যদি শুধু বাংলা ও ইংরেজি ভালো গতিতে টাইপ করতে জানেন, তাহলে টাইপ করেও আয় করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। আপনার দক্ষতার কাজ কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির প্রয়োজন, তা খুঁজে বের করতে হবে।