এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : অনেকেই বলে থাকেন, নামের বানানে কি আসে যায়। এটা কোনো বিষয় নয়। কিন্তু যদি বলি, নামের বানান ভুল হলে হতে পারে আপনার মৃত্যু! ভাবনায় পড়লেন! করার কিছু নেই। এমনি ঘটনা ঘটেছে লন্ডনের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল হ্যারোতে।
নামের বানান ভুলের কারণে এমন করুণ মৃত্যুর স্বীকার হলো ইরমগার্ড কুপার নামের ৮৫ বছর বয়সী এক প্রবীণ নারী। শুধুমাত্র নামের বানানের একটি অক্ষর এদিক সেদিক হওয়ার কারণে পৃথিবী ছেড়ে চিরবিদায় নিতে হলো তাকে!
প্রচণ্ড অসুস্থতা নিয়ে লন্ডনের নর্থউইক পার্ক হসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ওই নারী। হাসপাতালটিতে তার হৃদযন্ত্রের প্রধান ধমনী স্ফীত হয়ে যাওয়ার কারণে অস্ত্রোপচার করা হয়।
ঠিক তখনই কর্তব্যরত চিকিৎসকদের হাতে মারাত্মক ভুলটি হয়। অস্ত্রোপচার শুরু হওয়ার পর চিকিৎসকরা দেখতে পান, তার দেহে রক্ত সরবরাহ করছে না, কিন্তু ততক্ষণে তার অস্ত্রোপচার শুরু হয়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণের আগেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু হয় তার।
কুপারের মেয়ে লরেইন বুকার বলেন, আমার বাবা প্রায় রাতেই মায়ের মৃত্যু নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখতেন। আজ তার সেই দুঃস্বপ্ন পূরণ হলো মায়ের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলেই মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি যখন আমার মাকে দেখতে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিউ) যাই তখন দেখতে পাই, আমার মা রক্তের বিছানায় শুয়ে আছে। মেঝেও রক্তে সিক্ত হয়েছিল।
এ মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে বের হয়ে আসে তার কার্ডিওভাসকুলারের বিপর্যয় ঘটে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ঘটনাটিতে মামলা দায়ের করা হলে কুপারের পরিবারের পক্ষের উকিল আদালতকে জানায়, প্রথম ভুলটি হয়েছিল তার নামের বানান ভুল লেখার কারণে। ভুল নামের কারণে অন্য একটি রোগীর সঙ্গে তার রক্তের নমুনা বদলে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় ভুলটি ছিল সার্জন এবং এনেসথেশিয়াদানকারী চিকিৎসকের মধ্যে সঠিক কথাবার্তা না হওয়ার কারণে। কুপারকে যখন আইসিইউতে নেয়া হয়েছিল তখন তার অবস্থা বেশ সঙ্গীন ছিল। তার রক্তপাত এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, তার নির্দিষ্ট প্রতঙ্গ রক্ত ধারণ করতে পারছিল না। সে কারণে তার মৃুত্যু অবধারিত ছিল।
আদালতে লন্ডন নর্থ ওয়েস্ট হেলথ কেয়ারের ট্রাষ্টি জ্যাকুলিন ডরোথি কুপারের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে বলেন, এ ঘটনার জন্য আমরা দুঃখিত। সেই সঙ্গে পরিবারটিকে কীভাবে সান্ত্বনা দেব তার ভাষাও খুঁজে পাচ্ছি না। আমরা আমাদের দোষ স্বীকার করছি। এটা আমাদের ইচ্ছাকৃত ভুল ছিল না।
ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখবো।
৫ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম