এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : আপনি নিশ্চয়ই অনেকবার শুনেছেন বা দেখেছেন যে যারা সাঁতার জানেন না এমন ব্যক্তি যদি জলে পড়ে যান তাহলে তার বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।
কিন্তু একই ওজনের মৃতদেহ (corpse) কোনো সমস্যা ছাড়াই জলে ভাসতে (float) থাকে। জানেন এমনটা হয় কেন বা এর পিছনে কোন কারণ রয়েছে? এবার জেনে নেওয়া যাক..
বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসের নীতি অনুসারে, কোন বস্তুর জলে ভাসা বা ডোবা নির্ভর করে তার ঘনত্ব এবং সেই বস্তু দ্বারা স্থানচ্যুত জলের উপর।
যে বস্তুর ঘনত্ব বেশি তা জলে দ্রুত ডুবে যায়। আসলে জীবিত মানবদেহের ঘনত্ব জলের ঘনত্বের থেকে অনেক বেশি, তাই এই কারণে তার ফুসফুসে জল ভরে গেলে সে ডুবে যায় এবং জলের তলদেশে প্রায় ৮ থেকে ২৪ ঘন্টা পড়ে থাকে।
তবে অবাক করার বিষয় হলো, জলে পড়ার পরই কেউ ডুবে যায় না, কিছুক্ষণ ভেসে থাকে এর কারণ হলো মানুষের ফুসফুসে প্রায় ৬ লিটার বাতাস থাকে।
এই বাতাস মানুষের দেহকে কিছুক্ষণ ভাসিয়ে রাখে। এমনকি ডুবে গেলেও আবার ভেসে ওঠে। কিন্তু সাঁতার না জানা মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ছটফট করতে শুরু করে, এর ফলে জল অপসারিত হয়ে দেহ আরো দ্রুত জলে ডুবে যায়।
জলে ডুবে যাওয়ার পর শরীরে পচন ধরতে শুরু করে। ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস মৃতদেহের কোষগুলি খেতে শুরু করে। এর ফলে শরীর থেকে অ্যামেনিয়া, মিথেন, হাইড্রোজেন এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড এর মতো গ্যাস উৎপন্ন ও নির্গত হয়।
ফলে মৃতদেহটি জলে ফুলে যেতে শুরু করে এবং শরীরের ঘনত্ব হ্রাস পায়। এই কারণে মৃতদেহটি কয়েক ঘন্টার পর জলের উপরে ভাসতে থাকে।
বিজ্ঞানীদের মতে, শুধু মানুষের শরীরই নয়, যেকোনো জীবন্ত প্রাণী বা উদ্ভিদ জলে ডুবে গেলে একই প্রক্রিয়া ঘটে। পশু হোক বা পাখি জলে ডুবে গেলে তাকেও একই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
সবুজ গাছও জলে ডুবে যায় কিন্তু শুকনো গাছ ভাসতে শুরু করে। এর কারণ হলো শুকিয়ে গেলে এর ঘনত্ব কমে যায়, যার ফলে এটি সহজেই জলে ভাসতে থাকে।