এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : আমরা জানি, পানি পান করা ছাড়া কোনো প্রাণীর বেঁচে থাকা অসম্ভব। আবার অনেক জীব নির্দিষ্ট উৎসের পানি পান করে থাকে। এদের মধ্যে চাতক পাখি অন্যতম। যারা বৃষ্টির পানি ছাড়া অন্য কোনো উৎসের পানি পান করে না।
এরা বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করে। চাতককে খাঁচায় পুষেও এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে কেউ কেউ বলে থাকেন, অন্য কোনো পানি উপর থেকে ছিটিয়ে বা স্প্রে করে দিলে চাতক বৃষ্টির পানি ভেবে তা পান করে থাকে!
পাকড়া পাপিয়াই চাতক হিসেবে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। পাকড়া পাপিয়া দেশের দুর্লভ পাখিগুলোর একটি।
এরা পরিযায়ী। বছরের বেশির ভাগ সময় এ দেশেই থাকে। শীতকালে চলে যায় আফ্রিকায়।
ফিরে আসে শীত শেষে। আগে যেখানে থাকত আবার সেখানে ফিরে যায়। এরা গাছের উঁচু ডালে একা একা বসে থাকে। বৈদ্যুতিক তারেও বসতে দেখা যায়। মাঝে মাঝে এক জোড়া পাখি একসঙ্গে দেখা যায়।
এরা ঝোপঝাড়ের আড়ালে লুকিয়ে খাবার খায়। শুঁয়োপোকা, উই, পিঁপড়া, ছারপোকা এদের প্রধান খাদ্য। পাকড়া পাপিয়ার চেহারায় রাজকীয় একটা ছাপ আছে। মাথায় শিঙের মতো ঝুঁটি। পিঠ, পাখা ও লেজ কালো।
দুই পাখায় একটা করে ছোট সাদা পট্টি। লেজের আগার দিকের কিনার সাদা। গলা, বুক ও পেট সাদা। মাথা, ঘাড়, লেজ, ঝুঁটি ও ঠোঁট কালো, পা কালো। তবে সাদা লোমে ঢাকা।
‘পিউ…পিউ…’ স্বরে ডাকে। কোকিল গোত্রের পাখি। বাসা বাঁধে না। ডিমে তা দেয় না। ছানাও লালন-পালন করে না। বসন্তকালে ডিম পাড়ে ছাতারে পাখির বাসায়। ছাতারে নিজের ডিম মনে করে তা দেয়। ছানা বড় করে। একসময় ছাতারে বুঝতে পারে, ছানা তার নয়। তখন ঠুকরে পাপিয়ার ছানাগুলো তাড়িয়ে দেয়। তত দিনে উড়তে শিখে যায় ছানা।
চাতক নিয়ে একটা গল্প আছে—বৃষ্টির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁ করে থাকে। বৃষ্টি এলে মুখের মধ্যে ফোঁটা পড়ে। চাতক সেই পানি খায়। যত দিন বৃষ্টি না হয় চাতক পানি পান করে না। পানির অভাবে একসময় গলা শুকিয়ে গরম হয়ে যায়। চাতক বৃষ্টির জন্য চিৎকার করে। তবু বৃষ্টি হয় না। তখন চাতকের গলা দিয়ে আগুনের ফুলকি বের হয়।
পুরোটাই একটা গল্প, বাস্তবে চাতক মাটিতে নামে, জলাশয় থেকে পানিও পান করে। চাতক মোটেও বৃষ্টির পানির জন্য অপেক্ষা করে না।
পাকড়া পাপিয়া দেশের একেবারেই দুর্লভ পাখি। এদের সংরক্ষণে সবার এগিয়ে আসা দরকার।