এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : রহস্যঘোরা এই পৃথিবীর কখন কোথায় কি ঘটছে তা নিশ্চত বলা মুশকিল। আমরা রহস্যময় পৃথিবীর অনেক বিস্ময়কর ঘটনার কথা শুনেছি। দেখেছি ভাবনার অতীত নানা অদ্ভুত অনেক ঘটনা, স্থাপনাও।
অদ্ভুত এক প্রাণী গিরগিটি, এটি রং বদলাতে পারে যখন-তখন। কিন্তু যে বস্তুর প্রাণ নেই, যাদেরকে বলা হয় জড়ো পদার্থ, সেগুলোও যদি রং বদলায় তাহলে আশ্চর্য না হয়ে পারা যায়! যদি শুনেন কোন এক পাহাড় বার বারই বদল করছেন রঙ! তাহলে অবাক না হয়ে পারবেন? অবাক হওয়ারই কথা। তাহলে চলুন জানা যাক সেই বিস্ময়কর পাহাড়ের কথা।
আস্ত এক পাহাড় জুড়েই চলে এই রঙ বদলের খেলা! এই পাহাড়টির নাম ‘আইয়ারস রক’। এই পাহাড়টির রয়েছে অদ্ভুত রং বদলানো এক বৈশিষ্ট্য।
এই অদ্ভুত পাহাড় ‘আইয়ারস রক’র ভৌগলিক অবস্থান অস্ট্রেলিয়ায়। বৈচিত্রপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের জন্য অনেকেই এই পাহাড়টিকে ম্যাজিক পাহাড়ও বলে থাকেন। দেখতে অনেকটা ডিমের মত আকৃতির এই পাহাড়টির উচ্চতা ৩৪৮ মিটার। এই পাহাড়ের দৈর্ঘ ৭ কিলোমিটার এবং প্রস্হ ২.৪ কিলোমিটার।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, এই অদ্ভুত পাহাড়টির স্বাভাবিক রং লাল। কিন্তু সুর্যোদয় ও সুর্যাস্তের সময় ঘটে অদ্ভুত ঘটনা। সকালে সুর্যের আলোর বিচ্ছুরণ পাহাড়ের উপর পড়লেই মনে হবে যেনো আগুন ধরেছে এর গায়ে। তখন বেগুনী এবং গাঢ় লাল রংয়ের শিখা বের হয়ে আসে এই পাহাড় হতে। কেবল সুর্যোদয় কিংবা সুর্যাস্তই নয়, দিনভর চলে রঙ বদলের খেলা। যা দেখে বিস্মিত না হয়ে পারা যায় না।
এই পাহাড় প্রথমে হলুদ হতে কমলা, পরে লাল এবং মাঝে মাঝে বেগুনী আবার কখনও গুমোট কালো হয়ে যায়। পুরো পাহাড়টি জুড়েই অসম্ভব রহস্যের আনাগোনা। রং রহস্যের ‘আইয়ারস রক’ এর মাধুর্য মুগ্ধ করে ফেলে যেকোন মানুষকেই। অদ্ভুত এই পাহাড়টি সম্পূর্ণই একটি প্রস্তর খন্ড। এর গঠনটাই অদ্ভুত। সুর্যরশ্মির আপতন কোণের পরিবর্তনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এর রঙ পরিবর্তন ঘটে। সুর্যোদয় কিংবা সুর্যাস্তের সময় সূর্য রশ্মিতে লাল এবং কমলা রঙের আধিক্য থাকে। যে কারণে এই সময় পাহাড়টিকে লাল কিংবা কমলা মনে হয়। দুপুরের দিকে সূর্য রশ্মিতে অন্যান্য রঙের প্রাধান্য থাকে তাই ক্ষণেক্ষণে পাহাড় রঙ বদলাতে থাকে। অস্ট্রেলীয়ান সরকার এই অদ্ভুত পাহাড়টি পর্যটকদের দেখার সুবিধার্থে এর কাছাকাছি ৪৮৭ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে গড়ে তুলেছে মাউন্ট ওগলা ন্যাশনাল পার্ক।
জানা যায়, বার বার রং পরিবর্তিত হওয়ায় স্থানীয় আদিবাসীদের বিশ্বাস পাহাড়টিতে কোন দেবতা রয়েছেন। আর তাই তারা সেই দেবতার উদ্দেশ্যে পাহাড়টিকে পূজা করে থাকে। তবে ঘটনা যায়ই হোক অদ্ভুত এই পাহাড়টি পৃথিবীর এক সৃষ্টি রহস্য সেটি বলা যায়। অদ্ভুত এই পাহাড় দেখতে প্রতিদিন বহু পর্যটক এখানে আসেন। আর এমন রং বদানোর দৃশ্য দেখে বিস্মিত হন। আর সেই বিস্ময় নিয়েই ফিরে যান যে যার গন্তব্যে। কারণ পৃথিবীর চলার পথ কখনও থামেনা- চলতেই থাকে অবিরাম।