সোমবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৬:৪৪:০৯

পড়তে স্কুলে এলো চিতাবাঘ! ছুটি ছিল বলে বাঁচলো শিক্ষার্থীরা

পড়তে স্কুলে এলো চিতাবাঘ! ছুটি ছিল বলে বাঁচলো শিক্ষার্থীরা

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : তুমি যে এখানে কে তা জানত ! হেলতে-দুলতে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে সে। এ ঘরে ঢুকছে। বেরিয়ে এসে ঢুকে পড়ছে পাশের ঘরে। কখনও বারান্দার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে হেঁটে যাচ্ছে। এক্কেবারে রাজার মতো। এক ঝলক তার দেখা মিললো সুইমিং পুলের পাশেও।

ঘটনাস্থল ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুর হোয়াইটফিল্ড এলাকার ভিবজিওর স্কুল। সময় রোববারের সকাল। স্কুল চত্বরে যে বিনা বাধায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, সে কোনও শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা স্কুলকর্মী নয়। সে চিতাবাঘ! রোববার স্কুলের সিসিটিভিতে প্রথম ধরা পড়ে তার এই রাজকীয় ঘুরে বেড়ানোর ছবি।

রোববার হওয়া স্কুল বন্ধ ছিল। না হলে কী হতো? ভাবতেই শিউরে উঠছেন স্থানীয়রা। তবে বড়সড় কিছু না ঘটলেও বিপদ ঘটেছে। হামলায় জখম হয়েছেন চার জন।

স্কুলে চিতাবাঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে, সিসিটিভিতে তা দেখার সঙ্গে সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষ খবর পাঠান রাজ্যের বন দফতর এবং পুলিশের কাছে। সঙ্গে সঙ্গে স্কুলে এসে হাজির হন বন দফতরের কর্মীরা এবং স্থানীয় থানার পুলিশ। চলে আসেন বিভিন্ন চ্যানেলের কর্মীরা। চিতাবাঘ দেখতে স্কুলের বাইরে তখন ভিড় জমাতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ।

শুরু হয় চিতাবাঘের খোঁজে তল্লাশি। বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় ঘুম পাড়ানি গুলি ছুড়ে কাবু করা হয় তাকে। তার পর চিতাবাঘটিকে স্থানীয় পশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্নাটকের বন দফতরের কর্তারা।

কিন্তু খুব সহজে ধরা দেয়নি চিতাবাঘটি। আর তাকে ধরাও কী এতই সোজা? তল্লাশির সময় তার  বিদ্যুতের গতি!  চিতাবাঘটির হামলায় জখম হয়েছেন চার জন। তাদের মধ্যে তিন জন বন দফতরের কর্মী। এক জন স্থানীয় ছবি শিকারি। স্কুলের সুইমিং পুলের পাশে ছবি তোলার জন্য চিতাবাঘটির খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন তিনি।

বিদ্যুতের গতিতে ছিটকে এসে তাকে আক্রমণ করে চিতাবাঘটি। খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় চিতাবাঘে-
মানুষে। ওই ব্যক্তির হাতে-পায়ে কামড়ে দেয় চিতাবাঘটি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হই-হট্টগোল, চিৎকার-চেঁচামেচির মধ্যেই স্কুল থেকে পালিয়ে চিতাবাঘটি আশ্রয় নেয় ঝোপঝাড়ের মধ্যে। চলতে থাকে চিতাবাঘে-মানুষে লুকোচুরি খেলা। স্কুলের বাইরে জমে থাকা ভিড়টাকে সামলাতে পুলিশ তখন হিমশিম খাচ্ছে।

বেশ কিছু ক্ষণ পরে চিতাবাঘটি পাঁচিল টপকে ফের স্কুলে ঢুকে পড়ে। বন দফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন, এর পরেই চিতাবাঘটিকে ধরতে ঘুম পাড়ানি গুলির সাহায্য নেওয়া হয়।

তবে হোয়াইটফিল্ড এলাকায় চিতাবাঘ হানার ঘটনা নতুন নয়। এর আগে ২০১২ সালে এই এলাকায়  চিতাবাঘ ঢুকে পড়েছিল। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে কর্নাটকের চিকমাগালুর জেলার টিএমএস স্কুলেও এক বার একটি চিতাবাঘ ঢুকে পড়েছিল। জখম করেছিল তিন জনকে। সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষ স্কুল খালি করে দিয়ে খবর পাঠিয়েছিলেন বন দফতরের কর্মীদের। তারা এসে ধরেছিলেন চিতাবাঘটিকে।

এ দিনও স্কুলেই ঢুকেছিল চিতাবাঘ। দেখেশুনে এক রসিকের মন্তব্য, চিতাবাঘটি পড়াশোনা করতে এসেছিল। জানত না আজ ছুটির দিন! সংবাদ সংস্থা

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে