সম্মান জানাতে নারীর কবরে দেয়া হতো মাটির পাত্র!
এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : হরপ্পা সভ্যতার আরো কিছু নিদর্শন, যা আশঙ্কাজনক প্রশ্নকেই উস্কে দিচ্ছে। খাপ পঞ্চায়েতের নারী নিগ্রহের ঘটনায় প্রায়ই খবরের শিরোনামে উঠে আসে হরিয়ানা।
হরিয়ানার প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বছরের প্রাচীন নিদর্শন পাওয়া গেছে, যা একেবারে ভিন্ন ইঙ্গিত দিচ্ছে। হরপ্পা সভ্যতায় নারীদের কী পরিমাণ সম্মান দেয়া হত, তার উত্কৃষ্ট উদাহরণ হলো মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হওয়া কিছু প্রাচীন কবর।
হরিয়ানার হিসার অঞ্চলে মাটির তলা থেকে উদ্ধার হওয়া হরপ্পা সভ্যতা সমাজ-জীবনের কিছু নমুনা বর্তমান নারীবাদীদের উত্সাহিত জোগাবে তাতে সন্দেহ নেই। প্রাচীন হরপ্পা সভ্যতার বহু নিদর্শন পাওয়া গিয়েছিল হিসার অঞ্চলে।
১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত হিসার এলাকায় খননকার্য চালিয়ে হরপ্পার বহু নমুনার হদিস পায় আর্কিওলজি সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (ASI)। খননকার্যে পাওয়া যায় বেশকিছু প্রাচীন কবর।
সেই কবর পরীক্ষা করে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ASI। রিপোর্টে বলা হয়েছে, হরপ্পা সমাজে নারীদের সম্মান ও জীবনযাপনের মান ছিল পুরুষদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে।
বিস্তারিতভাবে বলা যায়, নারী উন্নয়নে হরপ্পা সমাজ ছিল যথেষ্ট প্রগতিশীল। খননকার্যে বেশকিছু পুরুষ ও নারীর কবর পাওয়া গেছে। প্রত্নতাত্ত্বিকবিদরা জানাচ্ছেন, সে যুগে কোনো মানুষকে কবর দেয়ার সময় সম্মান জানাতে মৃতদেহের সঙ্গে মাটির পাত্র দেয়া হত। এখানেই হরপ্পা সমাজের পুরুষ ও নারীর জীবনযাপনগত পার্থক্যটা প্রকট।
দেখা যাচ্ছে, নারীদেহগুলোর সঙ্গে পুরুষদের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি মাটির পাত্র বরাদ্দ। গত ডিসেম্বরে ASI-এর অবসরপ্রাপ্ত ডিজি অমরেন্দ্র নাথের পেশ করা রিপোর্ট জানাচ্ছে, কমপক্ষে ১২টি প্রাচীন কঙ্কাল মিলেছে।
কঙ্কালগুলোর পাশ থেকে পাওয়া গেছে নানা আকৃতির মাটির পাত্র। মহিলাদের শেষকৃত্যের সম্মান জানাতে সময় এই পাত্রগুলো বেশি পরিমাণে দেয়া হত।
শুধু তাই নয়, দেয়া হত মাটির তৈরি নানা অলঙ্কারও। সবচেয়ে বেশি সম্মান জানানো হত কোনো বিধবা মহিলার শেষকৃত্যে। পুরুষদের ক্ষেত্রে সেই তুলনায় মাটির পাত্র, অলঙ্কার বরাদ্দ ছিল যত্সামান্যই।
ASI-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, হরপ্পা নগরীর আয়তন ছিল ৩৫০ হেক্টর। বর্তমানে পাকিস্তানের অন্তর্গত মহেঞ্জ-দারো নগরীর পাশাপাশিই গড়ে উঠেছিল হরপ্পা।