পৃথিবী ধ্বংসের ভয়ে মৃত্যুর অপেক্ষা!
এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : কিছুদিনের মধ্যেই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে, তাই চাকরি বা পড়াশোনার মতো পার্থিব বিষয় নিয়ে ভেবে আর কি হবে! এমন ভাবনায় সব কিছু ছেড়ে মৃত্যুর দিন গুনছেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের এক প্রত্যন্ত গ্রামের কিছু গ্রামবাসী।
কোনও এক ধর্মযাজক নাকি তাদের বুঝিয়েছেন যে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আগে সব কিছু থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখতে। মেঘালয়ের পশ্চিম খাসি পর্বত জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম নঙথিলিউ। সেখানেই বছর কয়েক আগে ধর্মযাজকের বেশে কোনও এক ব্যক্তি হাজির হয়েছিলেন। তিনিই স্থানীয় আদিবাসী পরিবারগুলিকে বোঝান যে পৃথিবীর ধ্বংস আসন্ন। তাই এখন সব জাগতিক বিষয় থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখা উচিত।
ওই যাজকের কথায় পরিবারগুলি একরকম নিশ্চিত হয়ে একে একে চাকরি বা কাজকর্ম থেকে ইস্তফা দিয়ে দেন। এমনকী বাচ্চাদের স্কুল থেকেও ছাড়িয়ে নিয়েছেন তারা আর ব্যাঙ্কে যা জমানো টাকা পয়সা ছিল – সেসব তুলে ঘরে রেখে দিয়েছেন।
তাদের জন্য এখন শুধু আসন্ন মৃত্যুরজন্য অপেক্ষা। ওই গ্রামটি যে মইরাং এলাকায়, সেখানকার বিধায়ক মেতবাহ লিংদো বিবিসিকে বলেছেন,“এই পরিবারগুলির মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে যে পৃথিবী ধ্বংস হতে চলেছে। তাই পৃথিবীর কোনও বিষয়েই তাদের আর কোনও আগ্রহ নেই। কেউ একজন ধর্মযাজক সেজে এসে এই পরিবারগুলিকে ভুল বুঝিয়েছে – সম্ভবত কোনও কায়েমি স্বার্থ এর পিছনে রয়েছে।“
তবে এই পরিবারগুলি যে শুধু ঘরে বন্দী হয়ে থাকে তা নয়, নিজেদের চাষের জমিতে যায় বা গ্রামের অন্যান্যদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলে। তবে কারও কাছ থেকে কোনওরকম জাগতিক বিষয়ে সাহায্য বা পরামর্শ নিতে তারা অস্বীকার করছে। গণবন্টন ব্যবস্থার খাদ্য শষ্য নেন না এরা, নিজেদের ভোটার পরিচয়পত্রও নষ্ট করে ফেলেছেন। এমনকি গির্জাতেও যান না এরা।
বিধায়ক মেতবাহ লিংদো বলছিলেন, তিনি এই পরিবারগুলোর একজন সদস্যের সঙ্গে দেখা করেছিলেন, “অনেক বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে এটা অন্ধ বিশ্বাস। কিন্তু কিছুতেই বুঝতে চাইছেন না এরা। তারা ভীষণ একগুঁয়ে তাদের বিশ্বাসের ব্যাপারে। মনে হয় কিছুটা সময় দেওয়া দরকার এই পরিবারগুলোকে – নিজের থেকেই হয়তো তারা ভুল বুঝতে পারবেন।“ আশা মেতবাহ লিংদোর।
পশ্চিম খাসি পর্বত জেলার প্রশাসক এস খারলিংদো-ও ঘটনাটার কথা স্বীকার করেছেন বিবিসি-র কাছে। তবে এক্ষেত্রে যে সরকারের কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার কিছু নেই – সেটাও জানিয়েছেন তিনি। তথ্যসূত্র : বিবিসি