মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৪:৪৯:২১

‘কিডনি ক্যানসারে আর ভয় নেই’

‘কিডনি ক্যানসারে আর ভয় নেই’

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রায়শই জ্বর কিংবা কোমর ব্যথা হলে অবহেলা করবেন না৷ এই সাধারণ উপসর্গগুলোই কিন্তু কিডনি ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে৷ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে৷ এমনটাই বলেছেন ভারতের চিকিত্‍সক চঞ্চল গোস্বামী।

উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন কিংবা ওজনটা দিন দিন বেড়েই চলেছে? আপনি কি চেইন স্মোকার? কোমরে ইদানীং ব্যথা হচ্ছে? সবগুলোর উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তাহলে আপনার কিডনিতে বাসা বাঁধতে পারে ক্যানসারের মতো মরণব্যাধি।

চিকিত্‍সাশাস্ত্রে যার পোশাকি নাম রেনাল সেল কার্সিনোমা, সংক্ষেপে আরসিসি৷ পরিসংখ্যান বলছে, সারাবিশ্বে প্রতিবছর প্রায় তিন লাখেরও বেশি মানুষ এই মরণব্যাধি রোগে আক্রান্ত হন৷ যে পরিবারে কিডনি ক্যানসারে আগে কেউ ভুগেছেন, সেই পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যেও এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা ২৫ গুণ বেশি৷

একে ক্লিয়ার সেল কার্সিনামো বলে৷ দেখা গেছে, মহিলাদের চেয়ে পুরুষরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হন৷ তার একটা কারণ হলো মহিলাদের থেকে পুরুষদের মধ্যেই ধূমপানের প্রবণতা বেশি৷ সময়মতো এ রোগ ধরা না পড়লে কিডনি থেকে শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে৷

আর সেখানেই যত সমস্যা৷ এর উপসর্গগুলো খুবই সাধারণ৷ ওবিসিটি, উচ্চ রক্তচাপ, কুঁচকিতে ব্যথা, হঠাত্‍ করে পেটে ফুলে যাওয়া, মাঝে মধ্যে জ্বর, রক্ত স্বল্পতা, ওজন হ্রাস এ ধরনের শারীরিক সমস্যা হলে অবিলম্বে চিকিত্‍সকের পরামর্শ নিন৷

চিকিৎসক যদি কোনো শারীরিক পরীক্ষার পরামর্শ দেন তাহলে দেরি না করে সেগুলো করিয়ে নিন৷ গাফিলতি করলে সমস্যা বাড়বে, দুশ্চিন্তা যেমন করবেন না, তেমনই গাফিলতি করাও ঠিক হবে না।  তাই সময় থাকতে সতর্ক হোন৷

না হলে বিপদ বাড়বে৷ রেনাল সেল কার্সিনামো বা আরসিসির মোট চারটে স্তর আছে৷ যদি এ রোগটি তিন নম্বর স্তর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে তাহলে চিন্তার তেমন কারণ নেই৷ কারণ স্তরগুলোতে রোগ কিডনির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে৷

অস্ত্রোপচারের সাহায্যে আংশিকভাবে অথবা কিডনির যে অংশটি আক্রান্ত হয়েছে সেটি বাদ দিয়ে দেয়া হয়৷ অনেক সময়েই সম্পূর্ণ কিডনিও বাদ দিতে হয়৷ তবে তাতে অযথা আশঙ্কার কোনো কারণ নেই৷

এখন ল্যাপেরোস্কোপিক পদ্ধতি বা রোবোটিক পদ্ধতিতে এই অস্ত্রোপচার সম্ভব হওয়াতে অল্প সময়ের মধ্যেই সম্ভব হয়৷ বেশিদিন হাসপাতালে থাকার দরকারও পরে না৷ অস্ত্রোপচারের পর তার অন্য কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কাও খুবই কম৷

কিছুদিন পর থেকেই আপনি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন৷ তবে কিছু বিধি নিষেধ যেমন খাওয়া-দাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত এক্সারসাইজ, ধূমপান না করা- মেনে চলতেই হবে৷ তবে আরসিসি যদি চতুর্থ স্তরে পৌঁছে যায় তাহলে সমস্যা জটিল হয়ে পড়ে৷

ওষুধ দিয়ে তাদের সাময়িক যন্ত্রণার উপশম করা হয় মাত্র৷ তাই সময় থাকতে সাবধান হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ৷ বিশেষ করে যাদের পরিবারে এ রোগের ইতিহাস রয়েছে তারা আগে থাকতেই একটি ব্যালান্সড লাইফস্টাইল মেইনটেইন করে চললে ঝুঁকি অনেকটাই কম থাকে৷

মনে রাখবেন-

১) সময়মতো চিকিত্‍সা করান

২) নিয়মিত এক্সারসাইজ করুন

৩) ধূমপান একেবারেই নয়

৪) একটি কিডনি বাদ চলে গেলেও ভয়ের কিছু নেই

৫) ব্যালান্সড ডায়েট মেইনটেইন করে চলুন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে