এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : রান্নায় মসলা হিসেবে মরিচের ব্যবহার পুরনো। ঝাল ছাড়া অনেক রেসিপি পরিপূর্ণ হয় না। এ জন্য কাঁচাবাজারের তালিকায় মরিচ থাকেই। দাম আর কত- একশ থেকে দুইশ টাকা কেজি!
অবশ্য কিছুদিন আগে হঠাৎ করেই এর দাম ১ হাজার টাকা ছুঁয়েছিল। এ কারণে আমাদের সব ঝাল গিয়ে পড়েছিল সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীদের ওপর।
এখন এক কেজি মরিচের দাম যদি আপনাকে ২৮ লাখ টাকা বলা হয় নিশ্চয়ই তেড়ে আসবেন! ভাববেন যেখানে এ টাকায় বাড়ি-গাড়ি কিংবা ফ্ল্যাট কেনা যায় সেখানে এক কেজি মরিচ এত দামে কিনবেই বা কে?
সত্যি বলতে পৃথিবীতে এক ধরনের মরিচ রয়েছে যার দাম ২৬ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশী টাকায় যার মান দাঁড়ায় ২৮ লাখ টাকা। বিশেষ ধরনের এই মরিচের নাম চারাপিতা বা আজি চারাপিটা। এই মরিচের চাষ এ দেশে হয় না।
তবে সম্প্রতি একজন চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। বিশেষ এই মরিচের দেখা মেলে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে। বলাবাহুল্য এই মরিচ ব্যবহার হয় উন্নতমানের মসলা হিসেবে। বিশ্বের সবচেয়ে দামি মসলাও বলতে পারেন। তবে এই মরিচের ঝাল কম। কিন্তু সুঘ্রাণ প্রচুর। কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে হলুদ রঙ ধারণ করে।
প্রাচীনকালে রাজা বাদশারা এই সুগন্ধি মরিচ ব্যবহার করতেন। দুবাই, আরব ও সিঙ্গাপুরসহ নানা দেশের উন্নত হোটেলে এই মরিচ ব্যবহার করা হয় খাবারের ঘ্রাণ ও স্বাদ বাড়ানোর জন্য। চারাপিতা মরিচের ঝালের মাত্রা ৩০,০০০-৫০,০০০ স্কভিল।
সম্প্রতি বাংলাদেশে এই মরিচের তিনটি চারা চাষ করেছেন কুমিল্লার কৃষক আহমেদ জামিল। শখের বসে চাষাবাদ করেছেন তিনি। সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, কুমিল্লার ঠাকুরপাড়া নিজ বাড়িতে তিনটি এবং ঢাকার বনশ্রীতে তিনি দুটি চারা রোপণ করেছেন। প্রথমে বীজ এনে রোপণ করলেও সফল হননি আহমেদ জামিল। এরপর আমেরিকা থেকে চারা এনে তিনি চাষ করেছেন এবং সফল হয়েছেন।
আহমেদ জামিল সংবাদমাধ্যমে জানান, গুগলের মাধ্যমে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে প্রথম জানতে পারেন। এরপর পেরু থেক বীজ সংগ্রহ করেন। পরে আমেরিকাপ্রবাসী তার বড় ভাইয়ের কাছে তিনি বীজ পাঠিয়ে বপন করতে বলেন। সেখানে মাসখানেক পর চারা গজালে গাছে মরিচ আসে। পরে তিনি ঠাকুরপাড়ায় ৫০টি বীজ রোপণ করেন। এই ৫০টি বীজ থেকে পাঁচটি চারা গজায়।
গাছ বড় হওয়ার জন্য আলো প্রয়োজন এবং ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হয়। নিয়মিত পানি দিয়ে যত্ন নিতে হয় বলেও জানান আহমেদ জামিল। এর আগেও এই সৌখিন কৃষক কুমিল্লার লালমাইয়ের নাওরা গ্রামে চাষ করেছেন ব্লাক টমেটো এবং তেলবীজ। এ সব চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি।