আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হিরের প্রতি আকর্ষণ রয়েছে কমবেশি সব মানুষেরই। পুরুষ হোক বা মহিলা, জীবনে একবার হলেও হিরে কেনার জন্য মুখিয়ে থাকেন বহু মানুষই।
তবে একেবারে ধরা ছোঁয়ার বাইরে না হলেও এই মূল্যবান ধাতু কেবার সাধ্য অনেকেরই হয় না। নেকলেস তো দূর, কানের দুল বা নাকছাবি কেনার সময়েও দু’বার ভাবতে হয়।
অথচ, পৃথিবীতে হিরের এত দাম হলেও সৌরসংসারে একেবারে শেষপ্রান্তে থাকা দুটি শীতলতমে গ্রহে সারাক্ষণ হিরের বৃষ্টি হয়ে চলেছে।
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইউরেনাস ও নেপচুন একেবারে হিরেতে ঠাসা। এদের হীরক রাজার গ্রহ বলে ডাকলে মনে হয় খুব একটা বাড়িয়ে বলা হয় না।
কিন্তু, কোথা থেকে আসছে এই টন টন হিরে? খোঁজ শুরু করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। চলেছে গবেষণা। তাতেই এসেছে চমকে দেওয়ার মতো রিপোর্ট।
শিলাবৃষ্টি হলেই তো আমাদের মন ময়ূরের মতো নেচে ওঠে। বরফ বৃষ্টি হলে, বরফ কুড়োতে বেরিয়ে পড়ে আট থেকে আশি সকলেই।
এবার ভাবুন, বরফের বদলে যদি হিরের টুকরো ঝরে পড়ে আকাশ থেকে? ভাবছেন অলীক কল্পনা! হ্যাঁ সত্যি, এই ধরাধামে তা সম্ভব নয়।
এর জন্য যেতে হবে সৌরজগতের একেবারে শেষপ্রান্তে। সেখানেই রয়েছে প্রকৃতি আজব সৃষ্টি। এই অন্ধকারময় অঞ্চলে নিজের ছন্দে ঘুরে চলেছে ইউরেনাস ও নেপচুন।
দুটো গ্রহই আয়তনে দানবাকৃতি। পৃথিবীর চার গুণ। গ্রহ তো নয়, যেন জমাট বরফের গোলা। ইউরেনাস ও নেপচুনকে আইস জায়েন্ট বা বরফের দানবও বলা হয়।
মহাকাশ থেকে নেপচুনকে হালকা নীল রঙের দেখতে লাগে। ইউরেনাসের আবার রং বদলায়। কখনও সবুজ, কখনও নীল। এই দুই গ্রহকে ঘিরে রহস্যের শেষ নেই। এখানে রয়েছে প্রচুর গুপ্তধনের খোঁজ।
জ্যোর্তিবিদ ও পদার্থবিদরা ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অনুমান করে আসছেন নিপচুন ও ইউরেনাসে হিরের বৃষ্টি হয়ে থাকে। হিরেতে উপচে পড়ে দুই গ্রহের মাটি।
এত হিরে যে গোটা পৃথিবী ঘুরলেও এর সম পরিমাণ হিরে পাওয়া যাবে না। পৃথিবীতে যে হিরে মেলে তা আগ্নেয়হিরের দয়া-দাক্ষিণ্যে। এই হিরে কেটে উজ্জ্বল্য বাড়াতে হয়। ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্স এর অধিকর্তা সন্দীপ চক্রবর্তী বলছেন, এই দুই গ্রহের হিরের উজ্জ্বল্য বহু গুণ বেশি।
সুদূর ভবিষ্যতে কখনও যদি এই দানব গ্রহে মানুষের পা পড়ে তাহলে উদ্ধার করে আনা যেতে পারে এই হিরের সম্ভার। কিন্তু, কবে আসবে সেই হীরক বর্ষ? সে প্রশ্নের উত্তর আপাতত নেই।