এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : দিন যত যাচ্ছে স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম থেকে শুরু করে সব অ্যাপ হালনাগাদ হচ্ছে আর বাড়ছে আকারে। যার ফলে কিছুদিন আগেও যে স্মার্টফোনটি আপনার সব কাজ গুছিয়ে করে দিয়েছে, তা এখন আর নাও করতে পারে।
তাই কাজের খাতিরে আপনি না হয় নতুন আরেকটি ফোন কিনলেন, কিন্তু পুরোনো ফোনটির কী হবে? ফেলে তো আর দেওয়া যায় না। তাহলে চলুন, পুরোনো স্মার্টফোনের ভিন্ন কিছু ব্যবহার জেনে নিই।
১। আপনার ঘরে যদি কোনো বাচ্চা থাকে আর তার আগ্রহ যদি থাকে ছবি তোলায়, তাহলে আপনার পুরোনো স্মার্টফোনটিই হতে পারে তার জন্য লোভনীয় একটি উপহার। বাড়তি হিসেবে পিক্সেল-প্লের মতো একটি প্রটেকটিভ কেস এ যদি বসিয়ে দিতে পারেন আপনার পুরোনো স্মার্টফোনটিতে, তাহলে পড়ে গিয়ে ফোনটি ভেঙে যাওয়ার ভয় থেকেও মুক্ত থাকতে পারবেন।
২। আপনার বাড়িটি যদি ওয়াই-ফাইয়ের আওতায় থাকে, তাহলে পুরোনো ফোনটিকে ডেডিকেটেড ভিডিও কলিং ডিভাইস বানিয়ে ফেলতে পারেন। আর তখন ফোনে কল করার কাজটি না হয় হয়ে যাক বাড়তি সুবিধা।
৩। আপনার পুরোনো স্মার্টফোনটির আকার আপনার টেবিলঘড়িটির চেয়ে খুব একটা ছোট তো নয়ই, বড়ও হতে পারে। তাহলে প্লে-স্টোর থেকে নামিয়ে নিন যেকোনো ঘড়ির অ্যাপ আর একটি স্ট্যান্ডে বসিয়ে বানিয়ে ফেলুন স্মার্ট টেবিল ঘড়ি।
৪। মুভি দেখতে ভালোবাসেন? আছে কোনো পুরোনো স্মার্টফোন? তাহলে গুগল কার্ডবোর্ড বা স্যামসাং গিয়ার ভিআর বক্সের মতো কোনো একটি গেজেট কিনে নিন আর প্লে-স্টোর থেকে নামিয়ে নিন ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কোনো একটি অ্যাপ। এবার বসে যান ভার্চুয়াল মুভি থিয়েটারে।
৫। এখনকার দিনে সবার ঘর ভরা থাকে বিভিন্ন স্মার্ট ডিভাইসে। বেশিরভাগেরই আবার নিয়ন্ত্রণ থাকে রিমোটে। যার কারণে রিমোটের সংখ্যা হয় অনেক। এর থেকে দু-একটি হারিয়ে যাওয়া বা নষ্ট হওয়া অস্বাভাবিক কিছুই না। আর যদি নষ্ট হয়েই যায়, সেই রিমোট আলাদা কিনতে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সে ক্ষেত্রে আপনার পুরোনো মোবাইলটি হতে পারে বড় সমাধান। বর্তমানে প্রতিটি স্মার্ট ডিভাইসেরই নিজস্ব অ্যাপ আছে। আর যদি আপনার ফোনে আইআর পোর্ট থাকে, তাহলে ইউনিভার্সাল রিমোট অ্যাপ ইন্সটল করে সব ডিভাইস এক রিমোট দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। বেঁচে যাবেন অনেক রিমোটের হিসাব রাখার ঝামেলা থেকে।
৬। ধরলাম আপনার বই পড়ার অভ্যাস আছে। আবার এমন কোথাও ঘুরতে যাচ্ছেন যে বেশি বই নিয়ে যেতে পারছেন না। সমস্যা নেই। কিন্ডেল অ্যাপটি ফোনে নামিয়ে নিন আর অ্যামাজন স্টোর থেকে ই-বুক পড়ুন যত খুশি। আবার কোনো শ্রুতি ভার্সনের বই পড়ার অ্যাকউন্টে যদি আপনি সাবস্ক্রাইব করে থাকেন, তাহলে হাতের কাজ করতে করতে পড়া শুনতে পারেন আপনার পছন্দের অডিও বইটির।
৭। এখনকার সময়ে অনেক মাল্টিমিডিয়া স্পিকার পাওয়া যায় যেগুলোতে ব্লু-টুথ বা ওয়াই-ফাই যুক্ত করা। সে ক্ষেত্রে আপনার ফোনে যদি কোনো মিউজিক স্ট্রিমিং সার্ভিসে লগইন করা থাকে, তাহলে ফোনটি চার্জে লাগিয়ে কানেক্ট করে দিন স্পিকারের সঙ্গে আর অ্যাপে চালিয়ে দিন গান। মিউজিক প্লেয়ার একদম রেডি।
৮। আপনার পুরোনো ফোনটি যদি সচল থাকে আর আপনার কোনো কাজে না লেগে থাকে, তাহলে আপনি অবদান রাখতে পারেন বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায়। অ্যাপ স্টোরে খুঁজে পাবেন বিওআইএনসি বা এমন অন্য অনেক অ্যাপ, যেগুলো আপনার ফোনে চালু করলে ফোনটাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করবে ওই প্রকল্পের গবেষকরা। আপনি খালি বেছে নিন আপনার পছন্দের প্রজেক্ট, ফোনটি কানেক্ট করুন ওয়াই-ফাইতে আর ভবিষ্যতের পথে এগোনোর যাত্রায় শামিল হয়ে যান।
৯। পুরোনো ফোনটি হয়তো বন্ধই করে ফেলে রেখেছেন। সিমটি চালু করেছেন নতুন ফোনে। তাই বলে পুরোনো ফোনটি অকার্যকর ভাববেন না। এটা কি জানেন যে ৯১১-এর মতো ইমার্জেন্সি নম্বরে ফোন করতে সিম লাগে না, লাগে না ডাটা কানেকশনও? তাহলে আজ থেকে পুরোনো ফোনটি মাঝেমধ্যে চার্জ দিয়ে অন করে রেখে দিন আপনার ঘরে বা গাড়িতে। বিপদ তো আর বলে কয়ে আসে না।