মঙ্গলবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ০৯:৪৪:২২

বেশি বেশি জেদ করে শিশু? তাহলে যা করণীয়

বেশি বেশি জেদ করে শিশু? তাহলে যা করণীয়

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : জেদ করে না এমন বাচ্চা নেই বললেই চলে। কম বেশি জেদ সব বাচ্চাদের মধ্যেই থাকে। বিশেষ করে পাবলিক প্লেসে বাচ্চারা যদি জেদ ধরতে শুরু করে তখন সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যান অভিভাবকেরা।

শিশুরা জেদ করলে অনেক সময় বাবা-মা সাথে সাথেই জেদ পূরণ করেন আবার অনেক বাবা-মা ধৈর্য হারিয়ে শিশুকে কড়া শাসন করেন বা মারধর করেন যার কোনটাই উচিত নয়। এমন আচরণ করতে করতে একটা সময় এটি শিশুর অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।

বড়দের মতোই শিশুদেরও হতাশা, ক্ষোভ বা চাহিদা প্রকাশ করে জেদ বা ট্যানট্রামের মাধ্যমে। আমরা বড়রা যেভাবে নিজেদের এই অনুভুতিগুলো নিয়ন্ত্রণ করি বাচ্চারা তা পারে না। আর তার ফলে তাদের আচরণে বাহ্যিক প্রকাশ ঘটে এইভাবে।

শিশু জেদ কেন করে
বড়দের মত সহজেই শিশুরা তাদের মনের ভাব বা চাহিদা প্রকাশ করতে পারে না। আমরা বড়রা যেভাবে নিজেদের অনুভূতিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, শিশুরা সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তারা তাদের হতাশা, ক্ষোভ বা চাহিদা প্রকাশ করে জেদের মাধ্যমে। ফলে অনেক শিশুর মধ্যে দেখা যায় ‘টেম্পার ট্যানট্রম’।

শিশুর জেদ সামলানোর উপায়
সাধারণত ৩ থেকে ৭ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে জেদ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। তাই এই সময়টা বাচ্চাদের সঠিকভাবে বেড়ে তোলার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

এই সময়কে যদি শিশুর আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তবে ধীরে ধীরে শিশুর মধ্যে নেতিবাচকতা জন্ম নেবে। যা শিশুর ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে না।

এখন প্রশ্ন হল এই সময়ে বাবা-মার কী করা উচিত এবং কীভাবে সঠিক উপায়ে শিশুর জেদ কমানো বা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। রইল কিছু উপায়।

নিজেকে শান্ত রাখুন
শিশুর জেদ সামলানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রথম উপায় শিশুর বাবা-মাদের শান্ত থাকতে হবে। নিজে শান্ত থেকে প্রথম থেকেই যদি সন্তানদের জেদে লাগাম দেওয়া যায় তাহলে আপনার শিশুর বহু সমস্যার সমাধান হয় যাবে। অনেকেই বাচ্চার জেদ সামলানোর জন্য যা চাইছে তা দিয়ে দেন, কিন্তু এতে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। বরং আপনি যদি নিজেকে শান্ত রেখে শিশুকে বোঝান তাহলে সমস্যা অনেকটাই মিটে যাবে।

শিশুকে ব্যস্ত রাখুন
বাচ্চার যখন জেদ করতে শুরু করবে তখনই তার মন অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। সেই সময় বাচ্চাকে অন্য কিছু দিয়ে ভোলাবার চেষ্টা করুন। কোনো ইলেকট্রনিকস গেজেট নয়, বরং শিশুকে কিছু খেলনা দিয়ে জেদের সময় তাকে ব্যস্ত রাখুন। শিশুর ক্ষুধা, অতিরিক্ত উত্তেজনা, একঘেয়েমি, বিষণ্ণতা কাটাতে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো হাতের নাগালে রাখা উচিত। এইভাবে বাচ্চাকে কন্ট্রোল করতে শুরু করলে সেল্ফ কন্ট্রোল বোধ তৈরি হবে।

শিশুকে শাসন নয়
বাচ্চা জেদ ধরলে তাকে বকাবকি করবেন না। বাচ্চার জেদ বা ট্যানট্রাম সামলানোর জন্য মারধর বা বকাবকির প্রয়োজন নেই। এতে বাচ্চা আরও বিগড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ সময় বাবা-মার ধৈর্য এবং বাকি সব সদস্যদের প্রতি একই ধরনের পজিটিভ পদ্ধতি মেনে চললে সমস্যায় পড়বেন না।

শিশুকে নিয়মের মধ্যে আনুন
শিশু সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের প্রতিদিনের প্রাত্যহিক কাজকর্ম একটি নিয়মের মধ্যে হওয়া উচিত। এতে শিশু বুঝতে পারবে যে কোনোটার পর কোন কাজটি করতে হবে এবং সেভাবে সে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। প্রতিদিনের খাওয়া, ঘুম, খেলা, বিশ্রাম নিয়মের মধ্যে হলে শিশু নিয়মানুবর্তী হয়ে উঠবে। পাশাপাশি অযৌক্তিক আচরণ থেকেও সে বিরত থাকবে।

শিশুর মনের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করুন
একজন প্রাপ্তবয়স্কের মত সহজেই শিশুরা তাদের মনের ভাব বা চাহিদা প্রকাশ করতে পারে না। সুতরাং শিশু কি চাচ্ছে, কেনো জেদ করছে তা বোঝার চেষ্টা করুন এবং শিশুকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। শিশুকে মাঝে মাঝে প্রশ্ন করুন যে, সে বই পড়বে নাকি খেলনা দিয়ে খেলবে? সে কি খাবে? কোন রঙের জামা পড়বে? এতে করে তার মনে ভাব সহজেই প্রকাশ করা শিখবে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে