এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের ব্যাপারে কত রকমের গবেষণা চলছে । কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না । তবে বিজ্ঞানীরা একটি ব্যাপার লক্ষ্য করেছেন ভূমিকম্পের কারণে বন্য প্রাণীরা অস্বাভাবিক আচরণ করে। তা্ও আবার সাতদিন আগে থেকে তাদের এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পেরুর বনাঞ্চলে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন পাঁচ থেকে ১৫ ধরনের প্রাণী বিচরণ করে। কিন্তু একটি ভূমিকম্পের পাঁচ-সাত দিন আগে সেখানে কোনো প্রাণীর দেখা মেলেনি। দেশটির ইয়াচাগা ন্যাশনাল পার্কে স্থাপিত একগুচ্ছ ক্যামেরাচিত্র বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া যায়। সেখানে ভূমিকম্পের প্রাক্কালে জীবজন্তুর আচরণ ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছিল। এতে ভূমিকম্পের আগে প্রাণিকুলের আচরণে বড় ধরনের পরিবর্তনের বিষয়টি পরিষ্কার ধরা পড়ে। গবেষকদের মতে, ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে এ পর্যবেক্ষণ কাজে লাগানো যেতে পারে।
যুক্তরাজ্যের অ্যাংলিয়া রাস্কিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড. র্যাচেল গ্রান্ট এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। ২০১১ সালে পেরুর ওই অঞ্চলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের ২৩ দিন আগে থেকে ক্যামেরায় চিত্র ধারণ শুরু হয়।
সাধারণত ওই বনে পুমা (এক ধরনের বনবিড়াল) ও রেজর-বিলড কুরাসো পাখির মতো অনেক প্রাণী দেখা গেলেও ভূমিকম্পের আগ মুহূর্তে কোনো প্রাণী না থাকাকে অস্বাভাবিক ও অবিশ্বাস্য বলেই মনে করছেন গবেষকরা। গবেষক র্যাচেল গ্রান্ট বলেন, প্রাণীগুলো সব সময় সর্বত্র দৃশ্যমান। তীক্ষষ্ট অনুভূতিসম্পন্ন এসব প্রাণী ভূমিকম্পের আটদিন আগে সম্পূর্ণ উধাও হয়ে যায়। প্রথমবারের মতো এ দৃশ্য ধারণ সম্ভব হয়েছে। গবেষণায় সহযোগী হিসেবে ছিলেন প্রফেসর ফ্রেইডম্যান ফ্রেন্ড ও জ্যা পিয়ারে রাওলিন। ফিজিকস অ্যান্ড কেমিস্ট্রি অব দ্য আর্থ জার্নালে এ গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে।
ধারণকৃত চিত্রে পৃথিবীর উপকেন্দ্রে খুব কম মাত্রার বেতার তরঙ্গও ধরা পড়ে। গবেষকরা আয়নোস্ফিয়ার বা আয়নমণ্ডলে অস্বাভাবিকতাও দেখতে পান, যা ভূমিকম্পের দুই সপ্তাহ আগে থেকে শুরু হয়। গবেষক গ্রান্ট বলেন, ভূমিকম্পের আগে আয়নোস্ফিয়ারে অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ার বিষয়টি গবেষণার একটি উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তি। ভূমিকম্পের আগে প্রাণীর আচরণের এ পরিবর্তন দুর্যোগ পূর্বপ্রস্তুতিতে সহায়ক হতে পারে। তাই এখন গবেষকদের লক্ষ্য, প্রাণীর আচরণের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণে গঠনমূলক কোনো পদ্ধতি খুঁজে বের করা। খবর : ডেইলি মেইল
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/