এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সন্তানের জন্ম হওয়ার পর থেকে লালন পালনে থাকে যত্ন। আর সন্তানের বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তাদের লালন পালনের পাশাপাশি মা-বাবার মধ্যে তাদের নিয়ে শুরু হয় আলাদা চিন্তা। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকালে সন্তানের মনে জন্ম নেয় প্রেমের আবেগ।
এসময় হঠাৎ করে কাউকে ভালো লাগতে থাকে। এর ফলে পড়াশোনা দেখা দেয় ঘাটতি। যার চাপে অনেকে রেজাল্টও খারাপ করে। সন্তানের জীবনে চলে আবেগময় নানা দোলাচল। এটি মা বাবার জন্য একটি বড় চিন্তা হয়ে দাঁড়ায়।
সন্তান কার সঙ্গে কখন কোন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে, তা নিয়ে। মা বাবা সন্তানকে এসময় অতিরিক্ত কেয়ার করতে থাকেন। অনেক সময় কঠোর শাসনও শুরু করেন, মুঠোফোন কেড়ে নেন, বাসার বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দেন, কখনো সন্তানের বিশেষ বন্ধু বা বান্ধবীকে শাসান এবং তাদের মা–বাবার কাছে নালিশ করেন।
আবার অনেকে ব্যাপারটাকে এতটাই অস্বাভাবিক মনে করেন যে তখন সন্তানদের মারধরও করেন। কিন্তু এ ধরনের আচরণ যে সন্তানের জন্য কোন সুফল বয়ে আনে না। বরং এতে হীতে বিপরীত হয় তা মা বাবা বুঝতেই পারেননা। কিংবা বুঝলেও হয়তো তখন অনেক সময় পার হয়ে যায়।
কখনো আবার মা–বাবার এই খারাপ আচরণ সন্তানের ব্যক্তিত্বের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। যা থেকে সন্তানের আচরণজনিত সমস্যা তৈরি হয় এবং পরিণত বয়সে সন্তান সম্পর্কের টানাপোড়েনে পড়তে পারে।
তাই সন্তান যদি কোনো প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে, তখন অভিভাবক হিসেবে প্রতিটি মা বাবার জেনে রাখা ভালো যে এ বয়সে প্রেম বা আবেগীয় সম্পর্ক কোনো অপরাধ নয়, অস্বাভাবিকও নয়।
সরাসরি সন্তানকে প্রেম করতে দেখলে আক্রমণাত্মক আচরণ না করে তাকে স্বাগত কিংবা শুভেচ্ছা জানানোই উত্তম।
এক্ষেত্রে সন্তানের প্রেমের বিষয়টি জানার পর মেনে নেওয়ার চেষ্টা করে সন্তানের সঙ্গে মা বাবাকে বন্ধুর ভুমিকা পালন করা উচিত। তবেই সে নিজের মনের কথা নির্দ্বিধায় মা বাবার কাছে বলতে পারবে।
এছাড়া সন্তান যদি তার প্রেমের ক্ষেত্রে একেঅপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে মা বাবার কাছ থেকে বিধিনিষেধের সম্মখীন হয় তবে তার ভেতরে মা বাবার প্রতি অশ্রদ্ধা ও বিরক্তির জন্ম নেবে।
অন্যদিকে সন্তানের মধ্যে খিটখিটে ভাব দেখা দিতে পারে। তাতে পড়াশোনা তথা ক্যারিয়ারে ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা থাকে। প্রত্যেক মা বাবারই উচিত সন্তানের এই প্রেম নিয়ে দুশ্চিন্তায় না থেকে সন্তানকে বিশ্বাস করা। তার সিদ্ধান্তের ওপর আস্থা ও ভরসা রাখা।
এছাড়া সঙ্গীকে বাড়িতে নিয়ে আসতে চাইলে আপত্তি না করে তাদের উভয়ের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ দিয়ে আপ্যায়ন করা উচি। এতে বরং বাড়িতে যাতায়াত থাকলে তাদের মধ্যে অসামাজিক কাজের আগ্রহ জাগবেনা।
তবে উভয়ের মেলামেশায় স্বাধীনতা দিলে শান্তি ও সষ্ঠ পরিবেশ বজায় থাকলেও স্বাধীনতা যেন স্বেচ্ছাচারিতা না হয়ে যায় সে বিষয়টি অবশ্যই অভিবাবক হিসবে খেয়াল রাখতে হবে।
এক্ষত্রে যদি মনে হয় সন্তান ভুল করছে কিংবা এতে সন্তানের ভবিষ্যৎ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাহলে তার সঙ্গে রাগারাগি না করে মাথা ঠান্ডা রেখে তাকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলা প্রয়োজন।