এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সাধারণত সড়কে মোটরসাইকেলকে ঝুঁকিপূর্ণ যান বলে ধরে নেওয়া হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার বেশি।
আর এর অধিকাংশই হয়ে থাকে কম ক্ষমতার মোটরসাইকেল নিয়ে সড়ক-মহাসড়কে চলাচল ও সঠিক হেলমেট না পরার কারণে।
অনেকসময় দুর্ঘটনায় মাথায় চোট এড়ানো গেলে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রেহাই পাওয়া যায়। সেজন্য নিজের ও আরোহীর নিরাপত্তার জন্য দরকার ভালো মানের হেলমেট।
ভালো মানের বলতেই প্রশ্ন চলে আসে, হেলমেটের ভালো মান বলতে কী বোঝায়। বাজারে এখন সর্বনিম্ন হাজার টাকায় হেলমেট পাওয়া যায়।
আবার অনেকেই শুধু মামলা থেকে রেহাই পেতে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দিয়ে হেলমেট কেনেন। এগুলোকে আসলে হেলমেট না বলে টুপি বলাই উচিত।
এক হাজার টাকায় যেসব হেলমেট পাওয়া যায়, সেগুলোও তেমন মজবুত না। ছোট দুর্ঘটনায় বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে সেসব হেলমেট।
হেলমেট কেনার সময় এর সুরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে যেমন ধারণা থাকা জরুরি, তেমন জরুরি হেলমেটের মান সম্পর্কে জানা। সাধারণত ডট সার্টিফায়েড হেলমেটগুলো বেশ প্রশংসার দাবি রাখে। এছাড়াও বাজারে নানা ধরনের হেলমেট পাওয়া যায়। আজকের আলোচনা হেলমেট নিয়েই।
যে হেলমেটই কেনেন না কেন, আগে তাঁর সাইজ দেখে নেবেন। মাথার আকার অনুযায়ী রয়েছে হেলমেটের সাইজ। কখনই যেন হেলমেট মাথায় লুজ (নড়াচড়া) না হয়।
লুজ হেলমেট আপনার মোটরসাইকেল চালানোর কনফিডেন্সে বাজে প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি বেশি ওজনের হেলমেট কেনা থেকে বিরত থাকবেন। নচেৎ ঘাড় ও মাংসপেশিতে ব্যথা হতে পারে।
দেশের বাজারে এখন প্রায় অর্ধশত ব্র্যান্ডের হেলমেট পাওয়া যায়। দেশেও উৎপাদিত হয় হেলমেট। বাজারে প্রচলিত হেলমেটগুলোর মধ্যে শুরুতেই যেসব ব্র্যান্ডের নাম বলতে হয়, সেগুলো হচ্ছে- বিলমলা, এইচজেসি, এলএসটু, শার্ক, কেওয়াইটি ও এমটি। এছাড়া এক্সিস, সিএসবি, এক্সোর, ইয়োহি, এইরোহ, স্কোরপিয়ন, ভেগা, এসএমকে, স্টিলবার্ড, স্টাডস, অ্যারোস্টার ইত্যাদি ব্র্যান্ডের হেলমেট বাজারে পাওয়া যায়।
এসব ব্র্যান্ডের হেলমেটের মধ্যে রয়েছে নানা ধরণ। আছে ফুল ফেস হেলমেট, ফ্লিপ-আপ, ফ্লিপ-অফ, মোটো-ক্রস, ক্যাপ ইত্যাদি।
হেলমেট কেনার সময় প্রথমেই দেখতে হবে নিরাপত্তার বিষয়টি। আর এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ডট সার্টিফায়েড হেলমেট। বাজারে অনেক ডট সার্টিফায়েড হেলমেট পাওয়া যায়। তবে বাজেট বিবেচনায় সাড়ে ৬ হাজার থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকার হেলমেটও বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
বাজেট ফ্রেন্ডলি কয়েকটি ডট সার্টিফায়েড হেলমেট—
বিলমলা
দেশের বাজারে শুরু থেকে অনেকটা দাপিয়ে ব্যাবসা করছে থাইল্যান্ডের বিলমলা হেলমেট। ব্র্যান্ডটির বেশ দামি দামি হেলমেট রয়েছে দেশের বাজারে। তবে বাজেট ১০ হাজারের আশপাশে হলে কিনে নিতে পারেন এই ব্র্যান্ডের ড্রাগন বল জেড (Bilmola Dragon Ball Z) হেলমেটটি। ডিজাইন ও গ্রাফিক্সের কারণে তরুণদের কাজেও বেশ জনপ্রিয় হেলমেটটি।
হেলমেটের বাইরের শেলটি Shock Resistant Thermoplastic। রয়েছে উন্নতমানের ভাইজর (হেলমেটের গ্লাস)। দেড় কেজি ওজনের এই হেলমেটিতে পিনলক রয়েছে।
কেওয়াইটি
কিনতে পারেন কেওয়াইটির হেলমেট। বাজেট ৯ হাজার টাকার আশপাশে হলে এই হেলমেটটি আপনার জন্য। ইতালির এই ব্র্যান্ডটির KYT TT Course হেলমেটটি বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। রয়েছে Advanced Thermoplastic-এর শেল। পিনলকের পাশাপাশি দেড় কেজি ওজনের এই হেলমেটটিতে রয়েছে অত্যাধুনিক সকল নিরাপত্তা ফিচার।
এমটি
স্পেনের এই এমটির হেলমেটও বেশ জনপ্রিয় বাইকারদের কাছে। বাজেট ১০ হাজারের আশপাশে হলে কিনতে পারেন এমটির Revenge 2 হেলমেটটি। শেল কোয়ালিটি এবং প্যাডিং দুর্দান্ত হেলমেটটির। নতুন গ্রাফিক্সের এই হেলমেটিটে ভেন্টিলেশনের সুবিধাও বেশ কার্যকর।
আপনার বাজেট ৬ হাজার টাকার ওপরে কিনতে পারেন এমটির ডট সার্টিফায়েড হেলমেট। বাজাটের দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে MT Stinger-2। নির্মাণ ও ডিজাইনের দিক থেকে বেশ সুন্দর এই হেলমেটটির ওজন দেড় কেজির কাছাকাছি।
এলএসটু
বাজেট ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা হলে আপনি কিনতে পারেন স্প্যানিশ ব্র্যান্ড LS2 এর Vector Evo হেলমেটটি। চায়নায় প্রস্তুত হেলমেটগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে HPFC (High Performance Fiberglass Composite) ম্যাটেরিয়াল। ফলে হেলমেটটি বেশ হালকা ও মজবুত।
সোমান
আপনার বাজেট ৪ থেকে ৫ হাজার টাকার ভেতরে হলে আপনি সোমানের হেলমেট কিনতে পারেন। বাজেট ফ্রেন্ডলি এই হেলমেটটিতে রয়েছে অত্যাধুনিক সকল সুবিধা। পাশাপাশি রয়েছে আকর্ষণীয় গ্রাফিক্স। প্যাডিংও বেশ আরামদায়ক।