বুধবার, ০৬ মার্চ, ২০২৪, ১২:১৭:৫৬

বিনিয়োগকারীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ খাত কোনটি, জানেন?

বিনিয়োগকারীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ খাত কোনটি, জানেন?

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : বিনিয়োগকারীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ খাত হচ্ছে সঞ্চয়পত্র। তবে মূল্যস্ফীতির চাপে বর্তমানে নিম্ন আয়ের মানুষেরা সঞ্চয়পত্র ভেঙে সংসার চালাচ্ছেন। এর মধ্যেও বাড়তি আয়ের জন্য নতুন বিনিয়োগ করতে অনেকে সঞ্চয়পত্রকেই বেছে নিচ্ছেন।

অনেক বিনিয়োগকারী ব্যাংকে এফডিআর আকারে টাকা রাখেন। তবে যেকোন সময়ে এ হিসাবের টাকা ভাঙিয়ে নগদ করে ফেলা যায়। 

অপরদিকে সঞ্চয়পত্র মেয়াদের আগে ভাঙালে লাভ কম হয়। আর শেয়ারে বিনিয়োগ করার পর দাম কমে গেলে অনেকে লোকসানে বিক্রি করতে চান না। আবার যদি বিক্রি করা হয় তাও লোকসান গুণতে হয়। অন্যদিকে জরুরি টাকার দরকার হলে জমি বিক্রি করে নগদ অর্থ করা খুব সহজ কাজ নয়।

জানা যায়, ৫০ হাজার টাকা, ১ লাখ টাকা, ২ লাখ টাকা, ৫ লাখ টাকা ও ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের পেনশনার সঞ্চয়পত্র রয়েছে। পরিবার সঞ্চয়পত্র রয়েছে ১০ হাজার, ২০ হাজার, ৫০ হাজার, ১ লাখ, ২ লাখ, ৫ লাখ ও ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের।

বর্তমানে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রে মুনাফা ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যায়। এছাড়া যাদের সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে তারা মেয়াদ শেষে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৩ শতাংশ। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ থাকলে মুনাফার হার হবে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ।

সঞ্চয়পত্র কিনতে চাইলে যা করবেন-
১. সব সঞ্চয়পত্রেরই নির্দিষ্ট ফরম রয়েছে। ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করেই এ ফরম পাবেন। সঞ্চয়পত্র কিনতে ফরম পূরণ করতে হবে এবং সঙ্গে দিতে হয় গ্রাহক ও নমিনির দুই কপি করে পাসপোর্ট সাইজের ছবি। গ্রাহকের ছবি সত্যায়িত করতে হয় প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মচারীর মাধ্যমে। তবে নমিনির ছবির সত্যায়িত করতে হবে গ্রাহককে।

২. পাঁচ লাখ টাকার বেশি অঙ্কের সঞ্চয়পত্র কিনতে হলে ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) থাকতেই হবে। এক লাখ টাকা পর্যন্ত অবশ্য ই-টিআইএন লাগে না।

৩. গ্রাহক ও নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি অবশ্যই দিতে হবে। নমিনি নাবালক হলে জন্মনিবন্ধনের কপি লাগবে।

৪. গ্রাহকের নিজ ব্যাংক হিসাবের চেকের কপি, যে হিসাবে গ্রাহকের মুনাফা ও আসল টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে জমা হবে, সে হিসাবের নম্বর লাগবে। পেনশনের সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে বাড়তি কাগজ হিসেবে লাগবে সর্বশেষ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সনদ।

৫. পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পেনশনের সঞ্চয়পত্র।

এদিকে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে সুদহার কমানোয় বর্তমানে বিনিয়োগ কমছে। বিনিয়োগ কমার আরও কারণ রয়েছে। যেমন পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে প্রত্যেক গ্রাহককে বাধ্যতামূলকভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়। সঞ্চয়পত্র ও ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক হিসাবে পাঁচ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আবার ব্যাংক হিসাবে জমা টাকা ১০ লাখ অতিক্রম করলেও দিতে হয় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের চেয়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা বা ৪৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ কম। সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিলো ৩৫ হাজার কোটি টাকা।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে