মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:৫৬:২২

সব পেয়েও আমিরাতি তরুণদের জীবন একঘেঁয়ে

সব পেয়েও আমিরাতি তরুণদের জীবন একঘেঁয়ে

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : তেলসমৃদ্ধ সংযু্ক্ত আরব আমিরাতের যুবকদের সম্পর্কে বলা যায়, পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি প্রাচুর্যের মধ্যে বড় হন তারা। মায়ের কোল থেকে কবর পর্যন্ত কোন কিছু নিয়েই তাদের ভাবতে হয় না। তারা সেরা স্কুলে লেখাপড়া করেন, সেরা স্বাস্থ্যসেবা পান, মোটা বেতনে চাকরি করেন। আমিরাতের একজন তরুণী ব্যবসায়ী সুয়াদ আল-হোসানি, তার বয়েস ২৬ । তিনি বলেন, "আমি কখনো কাজে ক্ষান্ত দিই না, পাঁচ বছরের ব্যবসায় আমি কখনো ছুটি নেই নি।" খবর বিবিসি'র।

দুবাই ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষক মোহাম্মদ বাহারুন বলছেন, ইদানীং তরুণ আমিরাতিদের মধ্যে যারা চাকরি করতে আসছেন - তারা আগের চাইতে অনেক বেশি কর্মঠ এবং গতিশীল। তিনি বলেন, এ যুগের আমিরাতি মেয়েরা তুলনামূলক ভাবে ছেলেদের চাইতে লেখাপড়ায় ভালো, এবং বেশি পরিশ্রমী।

কিন্তু আমিরাতের সমাজে এরা হলেন ব্যতিক্রম। অনেক ধনী আমিরাতি তরুণই কাজ করতে চায় না। তারা শিকার, ক্যাম্পিং, মাছধরা, বাজপাখী ওড়ানো, বা মরুভুমিতে দামী গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ানো - এসব নিয়েই মেতে থাকে। তার পর আছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, পশ্চিমা গানবাজনা, সিনেমা ।

আরব আমিরাতে ভিন্নমতাবলম্বীদের নিপীড়নের যেসব খবর প্রায়ই বেরোয়, তাকে আদৌ গুরুত্ব দেন না এরা। কিন্তু তার পরও সুখী নন এই তরুণরা। বিবিসির বিল ল জানাচ্ছেন, এদের অনেকেই মনে করেন, জীবন বড় 'একঘেঁয়ে' - তাদের জীবনকে তারা 'অর্থপূর্ণ ' মনে করতে পারছেন না।

আরব আমিরাতের জনসংখ্যা ৯৩ লাখ। কিন্তু এর মাত্র ৬ ভাগের এক ভাগ হচ্ছেন 'আমিরাতি' - অর্থাৎ এ দেশের আদি বাসিন্দা। বাকি সবাই মূলত নানা দেশ থেকে আসা অভিবাসী। আমিরাতের নাগরিকরা একটি সাধারণ সেক্রেটারীর চাকরিতেও ভালো বেতন পান, যা প্রায় ১৫ হাজার দিরহাম বা চার হাজার ডলারের ওপরে। প্রায়ই তাদের বেতন বাড়ানো হয়। তাছাড়া আমিরাতিদের প্রায় কখনোই কাজ থেকে বরখাস্ত করা হয় না - তা সে সরকারী-বেসরকারি চাকরি যাই হোক না কেন।

সাংবাদিক আব্বাস আল-লাওয়াতির আদি দেশ ওমানে। তিনি বলছেন, আমিরাতিরা এমন একটি সমাজে বাস করছে যেখানে রাষ্ট্রীয় ভর্তুকির পরিমাণ বিপুল, এবং এই সচ্ছলতা তারা প্রাপ্য অধিকার বলেই মনে করে।

কিন্তু তার পরও আমিরাতি যুবক-যুবতীদের মধ্যে বেকারত্ব অত্যন্ত বেশি - প্রায় ২৮ শতাংশ। লন্ডনের মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের হাসান হাকিমিয়ান বলছেন, আমিরাতে ১৫ থেকে ২৪ বছরের তরুণদের প্রতি ৫ জনের একজন বেকার। মেয়েদের মধ্যে এ হার অর্ধেকেরও বেশি।

গবেষকরা বলছেন সরকার এদেশের তরুণদের কাজ করতে উৎসাহিত করতে নানা কর্মসূচি নিচ্ছে, অভিবাসীদের ওপর নির্ভরতা কমাতে চাচ্ছে। কিন্তু এতে কাজ হচ্ছে খুবই সামান্য। আমিরাতি তরুণরা অনেকে মনে করে অভিবাসীদের ভিড়ে তারা হারিয়ে যাচ্ছে।

২২ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে