এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রখর রোদ হোক কিংবা তীব্র শীতে জনজীবন থেমে থাকে না। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে রোজ বের হতেই হয়। দেশজুড়ে চলছে তাপ প্রবাহ। এর মাঝে অনেকের চলাচলের মাধ্যম মোটরসাইকেল।
সূর্যের কড়া তাপে তাদের বাইক চালাতে হয়। কেবল রোদই নয়, সঙ্গে যুক্ত হয় নগরের তীব্র জ্যাম। যারা প্রতিদিন তীব্র রোদে বাইক চালাচ্ছেন, তাদের কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে।
এই আবহাওয়ায় বাইকারের অস্বস্তির সঙ্গে মোটরসাইকেল সমস্যা যুক্ত হওয়া মানেই বিপদ। তাই খেয়াল রাখতে হয় যানবাহনটিরও। বিস্তারিত জানাচ্ছেন রাজধানীর উমায়ের বাইক বিডির স্বত্বাধিকারি উমায়ের আহমেদে।
উমায়েরের মতে, অত্যধিক গরমে বাইক চালানো কিন্তু বিপজ্জনক হতে পারে। অসতর্ক হলেই মুহূর্তে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। তাই গ্রীষ্মকালে বাইক-স্কুটারের ওপর বাড়তি নজর দেওয়া উচিত। বিশেষভাবে কয়েকটি পার্টস যেমন, টায়ার ও ফুয়েল ট্যাংক। বেশি রোদে বাইক পার্ক করে রাখবেন না। পারলে যেকোনো হালকা রঙের কাপড়ে বাইক ঢেকে রাখুন। বাইকের সঙ্গে নিজের যত্নের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
১. হাইড্রেটেড থাকুন
মোটরসাইকেল হোক বা সাইকেল, গিয়ারের চাপে গরম অসহ্য হবেই। এজন্য সঙ্গে পানি রাখুন। তীব্র রোদে গাড়ি চালালে ত্বকের ক্ষতি হয়। সেক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন সানস্ক্রিন। গরমে দীর্ঘসময় বাইরে থাকলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই হিট স্ট্রোকের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন।
২. হেলমেট ও পোশাক
মোটরসাইকেল চালানোর সময় নিরাপত্তার জন্য তো অবশ্যই, রোদ থেকে বাঁচার জন্যও ব্যবহার করুন হেলমেট। এতে কালার চেঞ্জিং গ্লাস ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা চোখে আরাম দেয়। আর পোশাকের ক্ষেত্রে বেছে নিন হালকা রঙের সুতি জামা। চেষ্টা করুন ফুলহাতার জামা পরতে। এতে আপনার ত্বক রোদ থেকে সুরক্ষা পাবে।
৩. বাইকের কুল্যান্ট নিয়ে ভাবুন
গরমের সময় বাইকের কুল্যান্ট ঠিক আছে কী না দেখা জরুরি। এই কুল্যান্ট আসলে কী। কুল্যান্ট এক ধরনের তরল যা বাইকের ইঞ্জিনের মধ্যে তাপের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। সোজা ভাষায় এটি বাইকে কুলিং সিস্টেম হিসেবে কাজ করে। অ্যান্টিফ্রিজ ও পানির মিশ্রণে তৈরি এই তরল গরমে বাইক সুরক্ষিত রাখে। এ কুল্যান্টের অবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখুন। কুল্যান্ট খারাপ হলে ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪. ইলেকট্রিক পার্টস
তাপদাহে বাইকের ইলেকট্রিক পার্টস ক্ষতি হতে পারে। কমিউটার মোটরসাইকেল হোক অথবা স্পোর্টস বাইক সব রকম টু হুইলারে থাকে একাধিক ইলেকট্রিক পার্টস। তাই রাইড করার সময় অতিরিক্ত ফিউজ সঙ্গে রাখতে পারেন। ব্যাটারির বিষয়টিও মনে রাখবেন।
৫. টায়ার
গরমে টায়ার প্রেশার সাধারণ সময়ের থেকে একটু কম রাখা ভালো। চাকায় যদি বাতাসের বেগ বেশি থাকে তাহলে গরমকালে চাকা ফেটে যেতে পারে। যারা হাই স্পিডে বাইক চালান তাদের চাকা সরাসরি রাস্তার সংস্পর্শে আসলে অত্যধিক হিট তৈরি হয়। তাই সাবধান না থাকলে টায়ারের ক্ষতি হতে পারে।
৬. ফুয়েল ট্যাংক
গরমে ফুয়েল ট্যাংকের দিকে বাড়তি নজর দিন। গরমের সময় ফুয়েল ট্যাংক সম্পূর্ণ পূর্ণ করা উচিত নয়। কারণ তাপ সৃষ্টি হলে পেট্রল কিংবা ডিজেল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। গ্রীষ্মকালে ফুয়েল ট্যাংক ভরা থাকলে জ্বালানি উপচে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই গরমকালে ফুয়েল ট্যাংক অর্ধেক অথবা চার ভাগের তিন ভাগ পূর্ণ করার চেষ্টা করুন।
চেইন লুব্রিকেট
গরমের সময় বাতাসে ধুলাবালি একটু বেশি থাকে। তাই কিছুদিন পর পর বাইকের চেইন পরিষ্কার ও লুব্রিকেট করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এটি করার ফলে বাইক আরও মসৃণভাবে চালানো যায়। লুব্রিকেটিং করার আগে বাইকের সব মোটরপার্টস অবশ্যই পরিষ্কার করে নিতে হবে।