এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : মানুষ স্বভাবগতভাবেই অনুকরণপ্রিয়। অন্যকে দেখে তো আমরা কতকিছুই করি, কিন্তু তাই বলে হাই তোলা? যদিও এটি অনুকরণ করার মতো কোনো কাজ নয়, তবু খেয়াল করে দেখবেন অন্য কাউকে হাই তুলতে দেখলে কারও কারও আপনাআপনিই হাই উঠতে শুরু করে।
তবে সবার ক্ষেত্রেই যে এমনটা ঘটে, তা নয়। যাদের অন্যকে হাই তুলতে দেখলে নিজেরও হাই উঠতে শুরু করে, তারা কি জানেন এর নেপথ্যে কারণটা আসলে কী?
হাই তোলা ছোঁয়াচে কিছু নয়। তাহলে এটি কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটি মূলত ‘সোশ্যাল বিহেভিয়ার’। এরকমটা হওয়ার মূল কারণ হলে মানুষের শরীরে মিরর নিউরোনের ভূমিকা। মানুষ সামাজিক জীব।
তাই আমরা দলবদ্ধ আচরণ করতেই ভালোবাসি। এই অভ্যাস আদিকাল থেকেই চলে আসছে। তখন থেকেই শিকার করতে যাওয়া, ঘুমানো সহ আরও অনেক কাজই দলবদ্ধভাবে করা হতো। এরই প্রতিফলন এই হাই তোলা।
অন্যের দেখাদেখি হাই তোলাই কেবল নয়, এ ধরনের সোশ্যাল বিহেভিয়ারের আরও অনেক উদাহরণ খুঁজে পাবেন। যেমন কাউকে আঘাত করতে দেখলে সেই দৃশ্য যারা দেখছেন তারাও ব্যথা অনুভব করেন, অন্যের খারাপলাগা আমাদেরও ছুঁয়ে যায়। অন্যের ক্লান্তি দেখলে নিজেদেরও ক্লান্ত লাগে। এরকমই একটি উদাহরণ এই হাই তোলা।
হাই তোলার বিষয়টি কেবল মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। জুরিখে শিম্পাঞ্জিদের ওপর গবেষণা করা হয়েছিল। যেখানে তাদের হাই তোলার ভিডিও দেখানো হয়। ভিডিওতে পাঁচ-ছয়জন বসে হাই তুলছে। সেই ভিডিও দেখে শিম্পাঞ্জিগুলোও হাই তুলতে থাকে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষ দলগতভাবে চিন্তাভাবনা করে কাজ করতে পছন্দ করে। বহু যুগ ধরেই এমনটা চলে আসছে। দলবদ্ধভাবে শিকার করা বা ঘুমাতে যাওয়া, ভোরবেলায় একসঙ্গে ওঠার মতো বিষয়গুলো এখন আর নেই যদিও। তাই সচেতনভাবে আমরা এমনটা না করলেও আমাদের অবচেতনে বা জিনের মধ্যে এগুলো রয়ে গিয়েছে। হাই ওঠাকে ঘুম আসার লক্ষণ মনে করা হয়। একটা সময় এরকমটা ছিল ঘুমাতে যাওয়ার নির্দেশ। তাই অন্যকে হাই তুলতে দেখলে অজান্তেই আমাদের হাই ওঠা শুরু হয়।