এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : মাঝেমধ্যে দেখা যায়, সন্তান কোনো কথাই শুনতে চাইছে না। এর চেয়ে খারাপ অনুভূতি যেন আর নেই। তবে এসবের পেছনে থাকে অনেকগুলো মনস্তাত্ত্বিক কারণ।
প্রত্যেক মা–বাবার কাছেই তাঁদের সন্তানের চেয়ে প্রিয় কোনো কিছু নেই। তাই সন্তানের লালন–পালনেও তাঁরা কোনো রকম কমতি রাখতে চান না। কিন্তু এত কিছুর পরও মাঝেমধ্যে দেখা যায়, সন্তান কোনো কথাই শুনতে চাইছে না। এর চেয়ে খারাপ অনুভূতি যেন আর নেই।
তবে এসবের পেছনে থাকে অনেকগুলো মনস্তাত্ত্বিক কারণ, যার ফলে বাচ্চাদের মধ্যে এ ধরনের আচরণ লক্ষ করা যায়। তাই এ সমস্যা আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করার আগেই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হবে। জেনে নেওয়া যাক, যে ৩টি কারণে বাচ্চা কোনো কথাই শুনতে চায় না।
১. কোনো কারণে মানসিকভাবে চাপ অনুভব করলে
একেবারে শিশু বয়স থেকে শুরু করে কিশোর বয়স পর্যন্ত আপনার সন্তান বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপ অনুভব করতে পারে। সেই সঙ্গে তাঁদের এই মানসিক চাপ প্রকাশের ধরন প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা। স্কুলের পড়াশোনা, সামাজিক মেলামেশা, সেই সঙ্গে বর্তমানে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—এসবের প্রভাব বাচ্চাদের ওপর বিভিন্নভাবে পড়তে পারে, যা তাদের কথা শোনার কিংবা কোনো কিছুতে ফোকাস ধরে রাখার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। কিন্তু অনেক সময় মা–বাবা এই বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝে উঠতে পারেন না। ফলে তাঁরা সঠিক সময়ে সন্তানের পাশে দাঁড়াতেও পারেন না। যদি কখনো এ ধরনের সমস্যা দেখা যায়, তবে সন্তানকে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করে দিন, যাতে সে খুব সহজেই যেকোনো কিছু প্রকাশ করতে পারে। সন্তানকে মানসিকভাবে আশ্বস্ত রাখুন, যাতে সে আপনার সঙ্গে তার যেকোনো সমস্যার কথা বলতে দ্বিধায় না ভোগে।
২. সন্তানের সঙ্গে মানসিক দূরত্ব বেড়ে গেলে
শিশুরা সাধারণত তাঁদের সঙ্গেই বেশি থাকতে পছন্দ করে, যাঁদের সঙ্গে একটি আবেগের সম্পর্ক রয়েছে। মা–বাবার চেয়ের কাছের কেউ হতেই পারে না। তবে অনেক সময় ভুল প্যারেন্টিংয়ের মাধ্যমে আমরা সন্তানকে নিজেদের থেকে দূরে ঠেলে দিই। যেমন সারা দিন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকা, শিশুকে সময় না দেওয়া, মাঝেমধ্যে একসঙ্গে কোথাও ঘুরতে না যাওয়া ইত্যাদি। এসব বিষয় সন্তানের সঙ্গে সঠিক বন্ধন গড়ে ওঠায় বাধা। ফলে তারা আপনার কথা শুনতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। আবার এমন অনেক মা–বাবা রয়েছেন, যাঁরা সন্তানকে প্রায়ই শাস্তি দিয়ে থাকেন, যা একদমই ঠিক নয়। ফলে সন্তানের মধ্যে একধরনের অবাধ্যতা তৈরি হতে দেখা যায়। তাই চেষ্টা করুন সন্তানের সঙ্গে একধরনের আবেগের বন্ধন তৈরি করতে। তাঁকে মাঝেমধ্যে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যেতে পারেন, ব্যস্ত থাকলে মাঝেমধ্যে ফোন দিয়ে কথা বলতে পারেন, দিনে একবার হলেও একসঙ্গে খাবার খেতে পারেন।
৩. শিশুর প্রতি মনোযোগের অভাব
শিশুরা প্রায়ই মা–বাবার মনোযোগ আকর্ষণ করে থাকে, যা অনেক মা–বাবাই বুঝে উঠতে পারেন না। ফলে শিশুরা একসময় অবাধ্য হতে শুরু করে। আপনার শিশু কী চাইছে, তা বুঝতে হবে। অনেক মা–বাবা আছেন, যাঁরা সন্তানের ছোট ছোট অর্জনকে তেমন প্রশংসা করেন না। অথচ খেয়াল রাখা উচিত, সন্তানের অর্জন যত ছোটই হোক না কেন, তাকে প্রশংসা যেন করা হয়। মাঝেমধ্যে তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। ভুল কিছু করলেই শাস্তি দেওয়া যাবে না, বরং কথোপকথনের মাধ্যমে বুঝিয়ে বলতে হবে।