এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : তেল-গ্যাস এবং বৈদ্যুতিক চার্জ খরচ ছাড়াই চলবে বাইক, এটা যেন ভাবনার বাইরে! অথচ সেই অভাবনীয় কাজটি করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের লাকিপাড়া এলাকার যুবক মাসুদ রানা।
অধ্যবসায় এবং নিজের চেষ্টা থাকলে অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়; আর নিজ প্রচেষ্টায় ‘কোয়াইড বাইক’ তৈরি করে সেই উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন মাসুদ।
জানা গেছে, মাসুদ রংপুর নেসকো কোম্পানির একজন কর্মচারী। মোটরসাইকেল চালিয়ে নিয়মিত অফিস করতেন তিনি। একদিন সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। সেই সময় থেকে ঝুঁকিমুক্ত বাইকের কথা ভাবতে থাকেন তিনি।
মাসুদ রানা জানান, অনেক সময় খুব সামান্য কারণে মোটরসাইকেল পিছলে পড়ে যায় এবং চালক আহত হন। এই সামান্য কারণে যাতে মোটরসাইকেল পড়ে না যায়, সেই চিন্তা থেকে তিনি ইউটিভি ও এটিভির আদলে চার চাকার মোটরসাইকেল আবিষ্কারের চিন্তা করেন।
সেই আবিষ্কারের চিন্তা ও সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিনিয়ত তেল-গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। তাই তেল-গ্যাস এবং বিদ্যুৎ ছাড়াই কীভাবে মোটরসাইকেল তৈরি করা যায়, সেই বিষয়ে মনোনিবেশ করেন তিনি। এক সময় সফলতার মুখ দেখেন। তৈরি করে ফেলেন ‘কোয়াইড বাইক’।
‘কোয়াইড বাইকটি’ দেখতেও চমৎকার জানিয়ে মাসুদ বলেন, বাইকটি ধোঁয়াবিহীন শতভাগ পরিবেশবান্ধব। এই বাইকটির চাকা চলার সঙ্গে সঙ্গে ডায়নামার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হবে ব্যাটারি। সেই ব্যাটারি রিজার্ভ হিসেবে কাজ করবে।
ডায়নামা নষ্ট হলে কিংবা কোনো কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলে ব্যাটারির মাধ্যমে চলবে বাইকটি। কোনো ধরনের জ্বালানি খরচ ছাড়াই যাওয়া যাবে দেশের যেকোনো প্রান্তে। যার চলার গতি হবে ৬০ কিলোমিটারেরও বেশি। ‘কোয়াইড বাইকটি’ তৈরিতে মাসুদের খরচ হয়েছে প্রায় চার লাখ টাকা। সময় ব্যয় হয়েছে প্রায় দেড় বছর।
বাইকটির উদ্ভাবক মাসুদ রানা আরও বলেন, বাইকটি তৈরিতে অনেক কষ্ট হয়েছে। বাইকটির পার্টস বিভিন্ন লেদের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে। তৈরি করা পার্টস দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে বাইকটি বাজারজাত করতে পারলে জ্বালানি সংকট অনেকটাই কমে আসবে। তা ছাড়া বাইকটির চালকদের জন্য সাশ্রয়ী।
এখানে কোনো তেল-গ্যাস এবং আলাদা করে বিদ্যুতের মাধ্যমে চার্জ দিতে হয় না। এই বাইক চালানোর সময় ঝুঁকি কম। এ সময় মাসুদ সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে বাণিজ্যিকভাবে এই বাইক উৎপাদন করার কথাও জানান তিনি।