এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : দাম্পত্য জীবন কাটছে সুখে শান্তিতে। নিজেদের বোঝাপড়াটাও জমেছে খুব। যে স্বপ্ন সাজিয়েছিলেন নিজের সংসার নিয়ে, সাবলীলভাবে বাস্তবে রূপ নিচ্ছে সেসব। সাজানো-গোছানো, সুন্দর এমন সংসারও কিন্তু তছনছ হয়ে যেতে পারে- সামান্য ভুল, জেদ বা স্রেফ দুয়েকটি কথার জের ধরেই।
দাম্পত্য জীবনে থাকে এমন কিছু প্রসঙ্গ- যা হয়তো ক্ষুদ্র বা স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন আপনি। কিন্তু সেই প্রসঙ্গ ধরেই আপনার সঙ্গীর মনে জড়ো হতে পারে ভুল বোঝাবুঝির মেঘ। তৈরি হতে পারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। যার প্রভাবে সম্পর্কে ছড়িয়ে গেলে তিক্ততা, দূরত্ব বাড়বে অবশ্যই। আর এ সুযোগে আপনার সংসার গিয়ে পৌঁছতে পারে ভয়াবহ কোন পরিণতির প্রান্তে।
আগেভাগেই তাই সতর্ক হওয়া উচিত। স্বপ্নের সংসারে যেন সুখ থাকে অটুট- সেজন্য কিছু প্রসঙ্গ এবং কথা সচেতনভাবে এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
১.শাশুড়িকে নিজের মায়ের মত করে দেখুন!
শাশুড়ি আর বউয়ের মধ্যে মা-মেয়ের মতো সম্পর্কও হয়তো সচরাচর গড়ে ওঠে না। কিন্তু তাই বলে শাশুড়ির নামে নেতিবাচক মন্তব্য করাটাও অনুচিত। কারণ আপনার শাশুড়ি তো আপনার স্বামীর মা। নিজের মায়ের সম্পর্কে নিন্দা শুনতে কোন সন্তানই পছন্দ করবে না- এটাই তো স্বাভাবিক। স্বামীর মাকে যদি প্রাপ্য সম্মান দিতে না পারেন, আপনার স্বামী স্বতস্ফূর্তভাবে আপনার মাকে তাহলে শ্রদ্ধা করবে তো! তাই চেষ্টা করুন শাশুড়ির সঙ্গে বিবাদে না জড়াতে। স্বামীর কাছে শাশুড়ির নিন্দা না করার চেষ্টা করুন। একইভাবে স্বামীদেরও উচিত শাশুড়িকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা। নইলে স্ত্রীরও আছে মনোক্ষুণ্ন হওয়ার অধিকার।
২.বন্ধুত্বের সীমানা বজায় রাখুন
আপনার সঙ্গীর কোন বন্ধু হয়তো দেখতে সুদর্শন। কথায়, রসিকতায় কিংবা উদযাপনে তুলনাহীন। যার উপস্থিতিতেই হয়তো তৈরি হয় আনন্দের আমেজ। কিন্তু তাই বলে কখনোই নিজের সঙ্গীর সামনে সেই বন্ধুটির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠবেন না যেন! কারণ বিষয়টি আপনার সঙ্গী পছন্দ নাও করতে পারেন। নিজের এবং সঙ্গীর বন্ধুদের সঙ্গে মাত্রা বজায় রেখে কথা বলুন। কিছুটা দূরত্ব রেখেই চলুন। নইলে এমন ঠুনকো বিষয় থেকেও চিড় ধরতে পারে সম্পর্কে।
৩.হয়ে উঠুন সঙ্গীর স্বপ্ন-সারথি
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটা বন্ধুসুলভ হতেই পারে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না আপনাদের সম্পর্কটা আসলে বন্ধুত্বের চেয়েও অনেক গভীরতর। সঙ্গীর স্বপ্ন-সাধ পূরণে তার পাশে থাকাটাও আপনার দায়িত্ব। সঙ্গীকে কখনো নিরুৎসাহিত করবেন না। বরং উৎসাহ যোগাতে চেষ্টা করুন। তোমাকে দিয়ে এটা হবে না, সেটা সম্ভব না- এই ধরণের কথা বলে তাকে মানসিকভাবে দুর্বল করে ফেলবেন না। এমনটা ঘটলে হয়তো অনুপ্রেরণা, উৎসাহের জন্য অন্যের ওপর বাড়তে পারে তার নির্ভরশীলতা। কিংবা নিজের আকাঙ্খাগুলোকে সে আড়াল করা শুরু করতে পারে আপনার কাছে। এতে করে দাম্পত্যের বাঁধনগুলো ঢিলে হয়ে পড়বে। নিজস্ব বোঝাপড়া বাড়িয়ে তুলুন। কোথাও তার ভুলত্রুটি থাকলে তাকে যুক্তি দিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বোঝানোর চেষ্টা করুন।
৪.সঙ্গীকে তাচ্ছিল্য করবেন না
মত এবং দৃষ্টিভঙ্গির অমিল দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া বা তর্কের উপলক্ষ তৈরি করতেই পারে। এটা স্বাভাবিক বিষয়। এসব বিষয়কে খুব বড় করে দেখাটা ভুল। এমন বিবাদে মুখ ফস্কেও সঙ্গীকে এমন কিছু বলবেন না- যা তার মনে তৈরি করতে পারে অপমানের গভীর ক্ষত। কারণ পরবর্তীতে মনোমালিন্য মিটে যেতেই পারে, কিন্তু রাগের মাথায় বলা কথার রেশও রয়ে যায় বহুদিন। এই কথার পিঠে চড়েই হয়তো জমাট বাধতে পারে নতুন কোন দ্বন্দ্ব। পারষ্পরিক শ্রদ্ধাবোধ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে সবসময়।
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/