এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রতি বছর বরফ গলার হার বেড়ে যাওয়ায় একবিংশ শতাব্দীতেই সমুদ্রের উচ্চতা বাড়বে ১০ ফুট। এমনই সতর্কতা জারি করেছেন বিজ্ঞানীরা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অ্যান্টার্কটিকায় যে হারে বরফ গলতে শুরু করেছে, তাতে চলতি শতকেই সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১০ ফুট (৩ মিটার) পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
সম্প্রতি অ্যান্টার্কটিকা থেকে নাসার তোলা কিছু ছবি এবং সেখান থেকে সংগ্রহ করা কিছু নমুনা পরীক্ষার পর এমনই আশংকা প্রকাশ করেন বিজ্ঞানীরা। নাসার হিসাব মতে, গত দশক পর্যন্ত অ্যান্টার্কটিকায় প্রতি বছর বরফ গলার হার ছিল ১৩০ বিলিয়ন টন (১১৮ বিলিয়ন মেট্রিক টন)। এই ওজন ৩ লাখ ৫৬ হাজার এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের সমান এবং বরফ গলে যে পানি তৈরি হচ্ছে, তা দিয়ে ১৩ লাখ অলিম্পিক সুইমিং পুল ভরা যাবে বলে জানিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। সেই সঙ্গে তারা আরও জানিয়েছেন, বরফ গলার হার দিন দিন বাড়ছে। এই হারে বরফ গলতে থাকলে এক অথবা দুই শতকের মধ্যেই সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১০ ফুট (৩ মিটার) পর্যন্ত বেড়ে যাবে।
হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ববিদ জেরি মিট্রোভিসা বলেন, অ্যান্টার্কটিকার কিছু অংশে এত দ্রুত বরফ গলতে শুরু করেছে যে, এই জায়গাগুলো জলবায়ু পরিবর্তনে ‘গ্রাউন্ড জিরো’তে পরিণত হয়েছে। নাসা জানিয়েছে, অ্যান্টার্কটিক পেনিনসুলা এলাকায় উষ্ণতার হার সবচেয়ে বেশি। শুধু এই এলাকাতেই বছরে ৪৯ বিলিয়ন টন (প্রায় ৪৫ বিলিয়ন মেট্রিক টন) বরফ গলছে। গত অর্ধশতাব্দীতে এই এলাকায় তাপমাত্রা ৫.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বেড়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই হার পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বৃদ্ধির হারের চেয়ে অনেক বেশি বলে জানিয়েছে চিলির অ্যান্টার্কটিক ইন্সটিটিউট।
গত মাসেই বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইটে ধারণকৃত ছবিতে খেয়াল করেন, পেনিনসুলা এলাকায় বরফে ১২ মাইল (২০ কিলোমিটার) লম্বা ফাটল দেখা দিয়েছে। নাসার বিজ্ঞানী এরিক রিগনট বলেন, বরফ গলার হার ধারণার চেয়েও দ্রুত হয়ে গেছে। এটা এখন ধাবমান বিপদে পরিণত হয়েছে। বর্তমান বরফ গলার হারে প্রতি বছর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিলিমিটারের তিন ভাগের এক ভাগ হারে বাড়ছে। আর এই গলন বাড়ার হার এভাবে চলতে থাকলে আগামী ২০০ থেকে ১ হাজার বছরের মাঝে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১০ ফুট পর্যন্ত বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন রিগনট। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/