মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:২২:৪১

হোলি খেলার পূর্বে সতর্ক হোন

 হোলি খেলার পূর্বে সতর্ক হোন

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রাচীন কাল থেকে অবিভাক্ত ভারতবর্ষে হোলি উৎসব খুবই জনপ্রিয়। এখনো ভারতের সবত্র এইদিন পালিত হয় এবং বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পুরান ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই দিবস পালিত হয়। তবে হোলির আনন্দে মেতে যাওয়ার আগে দু-বার ভাবুন৷

একদিনের আনন্দ যেন বিপদ ডেকে না আনে। ধরুন, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস আছে, ধুলা-ধোঁয়া কিছু লাগলেই হাঁচির পর হাঁচি শুরু হয়৷ একটু বেশি হলেই সর্দি লেগে যায়৷ জ্বর আসে, ইত্যাদি ইত্যাদি৷ কাজেই বুঝতে পারছেন, আবিরের থেকে দূরে থাকতে হবে আপনাকে৷

হাঁপানি থাকলে আরেক ধাপ বেশি সাবধানতা৷ যদি বোঝেন আবির থেকে সমস্যা হচ্ছে, তা থেকে তো দূরে থাকবেনই, রংয়ে জামা-কাপড়-মাথা ভিজে গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গা-মাথা মুছে, কাপড় পাল্টে ফেলবেন৷ আবার ঋতু পরিবর্তনের সময় ভেজা মাথায়, ভেজা জামা-কাপড়ে বেশিক্ষণ থাকলে জ্বর-সর্দি-কাশি হতে পারে৷ বাচ্চা, বয়ষ্ক ও অসুস্থ মানুষ হলে তো কথাই নেই৷

আনন্দ করুন একটু নিয়ম মেনে৷ ধরুন, ডায়াবিটিস আসে, অথচ সকাল থেকে খাওয়া নেই, ওষুধ নেই, তারপর খেলেন ভুলভাল খাবার৷ এতে সুগারের হিসেব গোলমাল হয়ে যে বিপদ হতে পারে না এমন নয়৷ যার পেপটিক আলসার বা গ্যাস-অম্বলের অসুখ আছে তার পক্ষে সকালের না খাওয়া, দুপুরের ভুঁড়িভোজ, বিকেলের লাড্ডু-ভাং ইত্যাদিতে সমস্যা হতে পারে৷

হার্টের সমস্যা আছে কি হাঁটু-কোমরে ব্যথা, নাচানাচি শুরু করার আগে কথাগুলি মনে রাখবেন৷ নিয়মিত যে সব ওষুধ খান, সে সবই গুনে গুনে খেয়ে তবে রং খেলায় মাতুন৷ কারণ একদিন আদন্দ করে তারপর গৃহবন্দি থাকার কোনও মানেই হয় না। তাই আগে থেকে সমস্যা জেনে নিন আর সতর্ক থাকুন।

স্কিন ফ্রেন্ডলি রং না হয় ঘরেই তৈরি করে ফেলুন : সস্তার রঙে ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানো থাকে৷ স্পর্শকাতর ত্বকে এ থেকে সমস্যা হতে পারে৷ বিষাক্ত রং থেকে কিডনি বা লিভারের সমস্যা এমনকী ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কাও যে থাকে না তা নয়৷ দোলে এদের বর্জন করে প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করুন৷

পরিবেশ সহায়ক রং ব্যবহার করলে সমস্যা কম হয়৷ তবে এদের দাম বেশি বলে কম খরচে ঘরেই রং এবং আবির বানিয়ে নিতে পারেন৷ আবিরের বেস তৈরি করুন বডি পাউডার, আটা, ময়দা, বেসনবা অ্যারারুট দিয়ে৷ এক কাপ বেস-এ এক চামচ হেনা পাউডার বা এক চামচ রক্ত চন্দন গুঁড়ো মিশিয়ে৷ ফুলের পাপড়ি শুকিয়ে, গুঁড়ো করেও বানাতে পারেন৷

গাঁদা, অমলতাস, চন্দ্রমল্লিকা গুঁড়ো করে হলুদ, পলাশ বা শিমুল থেকে গেরুয়া, লাল জবা থেকে লাল, নীল জবা ও জ্যাকারান্ডা ফুলের পাপড়ি দিয়ে নীল আবির বানানো যায়৷ আবিরে সুগন্ধ আনতে পছন্দসই পাউডারের বেস একাই একশো৷না হলে অল্প দু-চার ফোঁটা পারফিউম মিশিয়ে দিতে পারেন৷ তবে স্পর্শকাতর ত্বক হলে সাবধান৷ গন্ধ থেকে অ্যালার্জি হতে পারে৷

তেল রং বানাতে হলুদ, রক্ত চন্দন, বা ভুষো কালি নারকেল বা অলিভ তেলে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন৷ জলে গুলে দিলেও সুন্দর রং তৈরি হয়৷ আমলকি সারা রাত ভেজালে কালো রং পাবেন৷ম্যাজেন্টা রং পাবেন বিট কেটে ভেজালে৷ টমেটো বা গাজর জলে সেদ্ধ করে পাওয়া যাবে লাল রং, পুদিনা, পালং, ধনেপাতা বেটে জলে মিশিয়ে তৈরি হবে সবুজ রং৷ পলাশ-শিমূল ফুটিয়ে বা গিরিমাটি জলে গুলে গেরুয়া, জ্যাকারান্ডা-নীল জবা জলে ফুটিয়ে নীল রং বানাতে পারেন৷

তবে, প্রাকৃতিক জিনিস ব্যবহার করলেই যে অ্যালার্জির ছুটি, এমন নাও হতে পারে৷ আর গন্ধে অ্যালার্জি থাকলে আবিরে সুগন্ধী মেশাবেন না৷ ত্বক জ্বালা করলে বা চুলকালে ঠাণ্ডা জলে মুখ ধুয়ে ক্যালামাইন লাগান৷ পাশাপাশি রং বেশি করে বানান যাতে সবাই এই রং ব্যবহার করেই দোল খেলতে পারেন৷

রং মাখা যখন বিপজ্জনক : মারাত্মক আমবাতের ধাত, বাড়াবাড়ি রকমের একজিমা বা সোরিয়াসিস, ত্বকে কোনও সংক্রমণ, হাতে বা পায়ের নখে ছত্রাক থাকলে, মুখে অতিরিক্ত ব্রণ থাকলে।
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে