রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ১২:৪৮:২৮

৪টি হত্যার অভিযোগে দুধের শিশুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

৪টি হত্যার অভিযোগে দুধের শিশুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: এখন বাচ্ছার বয়স চার বছর। অথচ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে মাত্র একবছরের কম সময়ে সে নাকি হত্যা করেছিল। যার কারণে মিশর আদালত তাকে আজীবন কারাদন্ড দিয়েছে।

বিচারের নামে তামাশা কাকে বলে এই বিচারের ফিরিস্তি শুনলে তা স্পষ্ট হবে। যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া শিশুটির নাম আহমেদ মানসুর কারমি। তার বিরুদ্ধে এসেছ চারটি হত্যার অভিযোগ। শুধু কি তাই? হত্যার অভিযোগে পাশাপাশি উঠে এসেছে আটটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগও। এমনকি একটি ভাঙচুরের-লুটপাট-অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এবং সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের হুমকি তো রয়েছেই।

এই মামলার আরো যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি রয়েছে, তা শুনলে আকাশ থেকে পড়বেন হয়তো। শিশুটির জন্ম ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, লুটপাট, হুমকির অভিযোগ আনা হয় ২০১৪ সালের গোড়ার দিকের ঘটনার ওপর। গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির কাছ থেকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার প্রতিবাদে মুসলিম ব্রাদারহুড তুমুল বিক্ষোভ করছিল। সেই সময় গড়পড়তা মামলা দেয়া হয় বিক্ষোভকারীদের নামে। এমন একটি গণমামলায় ঢুকিয়ে দেয়া হয় আহমেদ মানসুর কারমির নাম। তখন কিন্তু সে ছিল দুধের শিশু।

হাস্যকার ব্যাপার হলো, মামলার এজাহারে কারমির নাম দেখে বাদি পক্ষ আদালতে তার জন্মসনদ পেশ করে। কিন্তু ততক্ষণে মামলা চলে যায় সামরিক আদালতে। সামরিক আদালত গেল মঙ্গলবারে মামলার রায় দেয়। এ সময় আদালতে হাজির ছিল না কারমি। রায়ে তার আজীবন কারাদণ্ড হয়।

এটি ছিল সামরিক আদালতের গণবিচারের গণরায়। কারমির সঙ্গে আরো ১১৪ জনের যাবজ্জীবন দণ্ড হয়। কিন্তু বিচারক কি এসব আসামির বয়স জেনে রায় দিয়েছেন- না কি তালিকায় যাদের নাম এসেছে তাদের সবাইকে এক বাক্যে যাবজ্জীবন দিয়েছেন? মানবাধিকারকর্মীরা দাবি করছেন, সামরিক আদালতের বিচারক মামলা না পড়েই আন্দাজে রায় দিয়েছেন। হয়েছেও তাই। যে কারণে একজন দুধের শিশুও বাদ যায়নি।

২০১৩ সালে মিশরের সামরিক বাহিনী মুরসির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর গণগ্রেফতার ও গণমামলা দেওয়া শুরু হয়। সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যারাই গেছে, তাদের কোন না কোনো মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। মিশরে একসঙ্গে ৪০০/৫০০ জনকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়েছে। শত শত মানুষকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মুরসির কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার পর এ পর্যন্ত ৪০ হাজার বিরোধী সমর্থককে জেলে পাঠানো হয়েছে। এই প্রক্রিয়া এখনো চলছে। হাস্যকরই বটে।-টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।
২১ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/আরিফুর রাজু/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে