এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : মানুষ যে কতটা হিংস্র, তার অন্যতম প্রমাণ হিরোসিমা, নাগাসাকির পরমাণু বিস্ফোরণসহ বর্তমান সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের উগ্রজঙ্গিবাদী সংগঠন গুলোর নির্যাতন দেখলে বোঝা যায়। এবার মানুষের নৃংশসতার আরেক অন্যতম নজির ইন্দোনেশিয়ার এই চিড়িয়াখানাও। যে কোনও সহৃদয় মানুষের কাছেই ইন্দোনেশিয়ার সুরাবেয়া শহরের চিড়িয়াখানা এক বিভীষিকা!
চিড়িয়াখানার সিংহের খাঁচায় উঁকি মারলে চোখে পড়বে গলায় লোহার তার। ঝুলছে মৃত পশুরাজ। বাঘ দেখলে কুকুর ভেবে ভ্রম হয়ে যেতে পারে। না খেতে পেয়ে চেহারা অনেকটা রাস্তার কুকুরের মতো দেখাচ্ছে। কয়েক দিন আগেই ওই চিড়িয়াখানায় একটি জিরাফের মৃত্যু হয়েছে। মৃত জিরাফটির পেটে পাওয়া গিয়েছে ভর্তি প্লাস্টিক। খিদের জ্বালায় চিড়িয়াখানায় বেড়াতে আসা কারও প্লাস্টিকের বলটাই খেয়ে মারা যায়। ভাল্লুকের পায়ে ক্যান্সার। কেউ খোঁজও রাখে না। হ্যাঁ, চুম্বকে এটাই সুরাবেয়া শহরের চিড়িয়াখানা।
কেবুন বিনাতাং চিড়িয়াখানার যাত্রা শুরু আজ থেকে ৯৮ বছর আগে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বড় চিড়িয়াখানা। মাত্র ১ ডলারের টিকিট কাটলেই পৃথিবীর কয়েক হাজার পশু দেখতে পান দর্শকরা। কিন্তু যাঁরাই এই চিড়িয়াখানা দেখতে ঢোকেন, বিমর্ষ মুখে বাইরে আসেন। পশুদের কী মারাত্মক অত্যাচার করা হয় এই চিড়িয়াখানায়! সুরাবেয়ার কেবুন বিনাতাং চিড়িয়াখানাকে দেশের অনেকেই তাই বলেন, 'Zoo of death' , অর্থাত্ মৃত্যুর চিড়িয়াখানা।
যদিও এই নির্মমতা জনসমক্ষে আসতেই মুখে কুলুপ এঁটেছে সুরাবেয়া চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। এমনকি তদন্তের স্বার্থে কাউকে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না সেখানে।
কেবুন বিনাতাং চিড়িয়াখানায় প্রতি মাসে ২৫টি পশুর মৃত্যু হয়। এবং প্রায় সব মৃত্যুর কারণই রহস্যজনক অথবা খিদের জ্বালা। সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী, বিদেশ থেকে চড়া দামে এই চিড়িয়াখানার জন্য পশু কেনা হয়। এবং অত্যাচার করে মেরে ফেলে, সেই পশুদের দেহাংশ চোরাকারবারীদের বিক্রি করে দেওয়া হয়।
কয়েক দিন আগেই মাইকেল নামে একটি আফ্রিকার সিংহের রহস্যজনক ভাবে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে ওই চিড়িয়াখানায়। বিশ্বের পশুপ্রেমীরা অবিলম্বে কেবুন বিনাতাং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন।
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/