বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:১৭:৫১

বেজির সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্ব সত্যিই বিস্ময়কর ঘটনা

বেজির সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্ব সত্যিই বিস্ময়কর ঘটনা

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সভ্যতার অগ্রগতিতে যখন বন্য প্রাণীদের অস্তিত্ব সংকট চলছে, তখন বেজির সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্ব সত্যিই বিস্ময়কর ঘটনা। দেখে সিনেমার চিত্রনাট্য মনে হলেও বাস্তবে সত্যি।

কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভার রাজারাম ক্ষেত্রী গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে দুলাল মিয়া তিন বছর আগে জঙ্গল থেকে একটি বেজির বাচ্চা ধরে নিয়ে আসেন বাড়িতে। এরপর তার বাবা শুকুর আলী বাচ্চাটিকে খাঁচায় রেখে খাওয়ান। আদর করে নাম রেখেছেন রুপালি।

শুকুর আলী উলিপুর-রাজারহাট সড়কের নারিকেল বাড়ি সন্ন্যাসী তলায় চা-বিস্কুট দোকান করেন। দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই তিনি খাঁচায় করে বেজিটিকে দোকানে নিয়ে এসে ছেড়ে দেন। এরপর রুপালি নামে ডাক দিলে দৌড়ে চলে আসে। দুধ, কলা, সমুচা, চিপস, বিস্কুটসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার খেয়ে আবার দোকান এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় ঘুরে বেড়ান। খিদে পেলে দোকানে এসে পেছনে পেছনে ঘোরে এবং লাফালাফি করে।

সন্ধ্যা হলে খাঁচায় তুলে বাড়িতে নিয়ে যান। কিছুদিন পর খাঁচা ব্যবহার না করে বেজিটিকে শুকুর আলী বাড়ি থেকে হেঁটে দোকানে নিয়ে আসেন এবং আবার দোকান থেকে হেঁটে বাড়িতে নিয়ে যান। এখন বেজিটি বাড়িতে যাওয়া-আসার ভয়ে থাকে কুকুরের আক্রমণ। দিন যতই যাচ্ছে বেজি আর শুকুর আলীর সঙ্গে ততই বন্ধুত্ব বাড়ছে। শুকুর আলী সপ্তাহে এক দিন স্যাম্পু দিয়ে বেজিটিকে গোসল করিয়ে দেন।

ঘটনাটি জানাজানি হলে বিভিন্ন এলাকার থেকে মানুষজন বেজি আর মানুষের বন্ধুত্ব দেখার জন্য দোকানে আসছেন। এরমধ্যে কেউ কেউ বিস্কুট, কলা, সমুচাসহ বিভিন্ন খাবার খেতে দেন। বেজিটি এ পর্যন্ত কারও কোনো ক্ষতি করেনি।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল মিয়া, আশাদুল ইসলামসহ অনেকে বলেন, শুকুর আলী পশু-পাখিপ্রেমী। শুধু বেজি নয়, এর আগে তিনি জঙ্গলের ইঁদুরকে পোষ মানিয়েছিলেন। এখনো মুক্ত আকাশে ঘুরে বেড়ানো পাখিকে হাতে করে খাবার খাওয়ান। তার এগুলো দেখে আমরা অবাক হয়েছি।

শুকুর আলী বলেন, মানুষ হয়ে মানুষের কথা শোনে না, মানে না। অথচ বনের পশু কথা শোনে, মানে। আমি মানুষকে দেখানোর জন্য বেজিটিকে ছোট থেকে পুষতেছি। নাম দিয়েছি রুপালি। এখন আমার সঙ্গে হেঁটে বাড়ি থেকে দোকানে যাওয়া-আসা করে। যখনই নাম ধরে ডাকি যেখানেই থাক আমার কাছে চলে আসে। বর্তমানে আমি বেজিটিকে সন্তানের মতো লালন-পালন করছি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে