এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: রোমানিয়ার ফ্যাগারাস পাহাড়ের চূড়ায় বরফ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে গির্জা। ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীত উপেক্ষা করে এই গির্জায় প্রতিদিন হাজির হচ্ছে ধর্মপ্রাণ খ্রিষ্টানরা।
শীত শুরুর পরপরই রোমানিয়ার ব্যলিয়া লেক রিসোর্টের কাছাকাছি শুরু হয় বরফের তৈরি গির্জা বানানোর তোড়জোড়। তীব্র শীতে বরফ কেটে তৈরি করা হয় দৃষ্টিনন্দন গির্জা। গত দশ বছরের মতো এবারও সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন স্থানীয়রা। বড় দিনের পরপরই শুরু হয় ফ্যাগারাস লেকের থেকে বরফ কাটার কাজ। তারপর পানি ও তুষার ব্যবহার করে বরফের টুকরাগুলোকে জোড়া লাগিয়ে গির্জা তৈরি করা হয়।
অর্থডক্স খ্রিষ্টানরা প্রথম প্রথম এই ক্ষণস্থায়ী গির্জার সমালোচনা করত। তাঁরা বলত যে, গির্জা কিছুদিনের মধ্যেই উধাও হয়ে যায় সেটা কখনো স্রষ্টার আশীর্বাদপুষ্ট হতে পারে না। সময়ের সাথে পাল্টাতে শুরু করেছে সেই দৃষ্টিভঙ্গিও। তাদের অনেকেই আসছেন এই গির্জায়।
ধর্মপ্রাণ খ্রিষ্টান মির্কিয়া কর্ডিয়া বলছেন, ‘যীশু খ্রিষ্ট বলেছেন যে জায়গাতেই দুই বা তিনজন তাঁর নামে একত্রিত হবে সেই জায়গাটাই একটা গির্জা। এই বিবেচনায় আমরা এতজন মানুষ এখানে প্রার্থনা করতে একত্রিত হয়েছি, তাই এটাকেও গির্জার মর্যাদা দিতে হয়।”
বরফের এই গির্জায় বিয়ে, ব্যপটিজমের মত বিভিন্ন ধর্মীয় আচার -অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। জাতি-বর্ণ-গোত্র পরিশেষে সব বিশ্বাসের মানুষই আমন্ত্রিত এই গির্জায়।
গ্রীক ক্যাথলিক গির্জার ফাদার আয়ন ক্রিসান জানান, ‘এই গির্জায় আসার পর আমরা ক্ষণিকের জন্য সব ভেদাভেদের কথা ভুলে যাই। আমরা ভুলে যাই বাইরের ভুল বোঝাবুঝি, বিতর্ক আর যুদ্ধের কথা।”
২০ ফুট উঁচু, ৪৫ ফুট দীর্ঘ আর ২৩ ফুট প্রস্থের এই গির্জা তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়েছে বিশাল আকৃতির বরফ খন্ড। সাধারণত বড় আকৃতির বরফের টুকরা ব্যবহার করা হলে, সেগুলো গলতেও বেশি সময় লাগে। ফলে বেশীদিন টেকসই হয় গির্জা। আর ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ২০০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত এই গির্জা দেখতে ও এখানে প্রার্থনা করতে ক্যাবল কারের মাধ্যমে এসে থাকে নানা প্রান্তের মানুষ।
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/