শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ১২:০৬:৫৪

ছাগল হিসাবে ঘাস খেয়ে অভিনব জীবনযাপন

ছাগল হিসাবে ঘাস খেয়ে অভিনব জীবনযাপন

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ব্রিটেনের তরুণ এক কনসেপ্ট ডিজাইনার টমাস থোয়েটস্‌ ছয়দিন সুইজারল্যান্ডের পাহাড়ে ছাগল হিসাবে জীবন কাটালেন। কল্পকাহিনি নয় এ কাহিনি সত্যি। একটি গবেষণায় অংশ নিতে ছয়দিন মানুষের জীবন বাদ দিয়ে তিনি ছাগলের জীবন বেছে নিয়েছিলেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়।

বিবিসির টুডে অনুষ্ঠানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, 'জন্তুর জীবন বেছে নিতে কেন তিনি অনুপ্রাণিত হলেন আর ছাগলের জীবনযাপন করতে গিয়ে তাকে কিধরনের প্রযুক্তির সাহায্য নিতে হয়েছিল।

টমাস বলেন ‘একটা সময় আমার ভাল যাচ্ছিল না – বেশ মনমরা লাগছিল- আমার ভাইয়ের মেয়ের কুকুরটার দেখাশোনা করছিলাম- কুকুরটা মহা উৎসাহে লাফাচ্ছিল – হৈচৈ করছিল- হঠাৎ মনে হল – ইস্‌ ওর মত যদি হতে পারতাম- সব ভুলে আনন্দে থাকতে পারতাম।’

‘কেন জানি না মনে হল – মানুষ না হয়ে জন্তু হয়ে জন্মালেই ভাল হতো- শুরুটা সেখান থেকেই।’ টমাসের তখনই প্রথম মনে হল আসলে জীবজন্তুর জীবন- তাদের মনস্তত্ব- তাদের আচরণ ভালভাবে বুঝতে চান তিনি। একবার সরেজমিনে পরীক্ষা করে দেখতে চান মানুষের সাথে তাদের কতটা পার্থক্য।

‘আসলে ছোটবেলাতেও মাঝে মাঝে আমার মনে হতো – বিড়াল হয়ে জন্মালে কি মজা হতো- স্কুলে যেতে হতো না!’ তার ভাবনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিনি ওয়েলকম ট্রাস্টের কাছে ফান্ডের জন্য আবেদন জানান । ট্রাস্টও টমাসকে তাদের চারুকলা তহবিল থেকে সামান্য কিছু অর্থ দেয় তার অভিনব এই পরীক্ষা চালানোর জন্য।

কিন্তু আর সব জন্তু ছেড়ে ছাগল কেন?

টমাস বলেছেন এর সহজ কোনো উত্তর নেই। তার গবেষণায় তিনি দেখেছিলেন নানা গুহা চিত্রে অর্ধ-মানব অর্ধ-পশুর নানাধরনের ছবি। সেখানে অর্ধেক-নর অর্ধেক ছাগলের ছবি ছিল অনেক। এর থেকে তার মনে হয়েছিল গুহা মানব কী জীব-জন্তুর আচরণের কোনো প্রতিফলন তাদের জীবনে দেখতে চাইত? তারা কী জীবজন্তুর কিছু আচরণ আয়ত্ত করতে চেয়েছিল? সেগুলো কী এটাই তিনি বুঝতে চেয়েছিলেন।

‘আমি সুইজারল্যান্ডে আল্পস্‌ পাহাড়ে একটা ছাগলের খামারে কিছুদিন সময় কাটালাম এই প্রকল্পের অংশ হিসাবে। যারা নকল হাত পা বানান তাদের দিয়ে আমি ছাগলের নকল পায়ের খুর বানালাম- চারপায়ে সহজে হাঁটার জন্য দুটো হাতে নকল বাড়তি অংশ লাগালাম। শুধু তাই নয় আমাকে যেহেতু কটা দিন শুধু ঘাস খেয়ে কাটাতে হবে – তাই সেলুলোজ হজম করার জন্য আমাকে শরীরে আলাদা পাকস্থলীও লাগাতে হল।’

টমাস বলেন, 'ছাগলের শারীরবিদ্যা, অ্যানাটমি, মনস্তত্ত্ব সব কিছু নিয়েই তাকে অনেক পড়াশোনা করতে হয়েছে। এরপর শুরু হল ছাগলের সঙ্গে আমার বসবাস। ছাগলের খামারে ছাগলের সঙ্গে আমার মেলামেশা- খাওয়া-দাওয়া এবং ওঠাবসা- আমার ছাগলজীবন যাপন।’

ব্রিটিশ তরুণ টমাস থোয়েটস্‌ ছাগলের জীবন বুঝতে ছাগল হিসাবে কাটিয়েছিলেন ছয় দিন। তার কথায়, ‘আমি চেয়েছিলাম মনুষ্য জীবনের নানা গ্লানি, সমস্যা-মুক্ত হয়ে ক’টা দিন পশুর মত আনন্দে কাটাতে।’
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে