এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : নদীর পানিতে চলবে পালতোলা নৌকা। এরপর তা উড়বে আকাশে। যাত্রীকে নিয়ে যাবে গন্তব্যে। আদতে এটি হবে পানিতে নৌকা আর আকাশে উড়োজাহাজ! এমনই এক নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত ফরাসি উদ্ভাবক স্টেফান রুসঁ। এরই মধ্যে নিজের এই প্রযুক্তিবিদ্যা পরীক্ষা করেছেন তিনি। সম্পূর্ণ লক্ষ্যে না পেঁৗছলেও কাজ করছে তার প্রযুক্তি।
এর আগে আকাশ ও পানির নিচে সাইকেল চালাবার চেষ্টাও চালিয়েছেন তিনি। খবর ডয়চে ভেলের। সম্প্রতি ফ্রান্সের দক্ষিণে কোৎ দাজুর উপকূলে নিজের তৈরি বিমানে নীরবে উড়ে বেড়িয়েছেন স্টেফান রুসঁ। একাধারে অ্যাডভেঞ্চারার ও উদ্ভাবক স্টেফান এই প্রথম নিজের তৈরি বিমান আকাশে উড়িয়েছেন। একদিন ভোর ৫টায় নিস শহরের কাছে ভিলফ্রঁশ-সুয়র-ম্যার-এর বন্দরে যাত্রা শুরু হয় এর।
এক হাইড্রোফয়েল বোট থেকে শুরু হয় 'এয়ারোসেল' নামের অভিযান, যার অর্থ আকাশের পালতোলা নৌকা। নৌকায় রাখা হয় সেপেলিন উড়োজাহাজের জন্য ১৯টি হিলিয়াম সিলিন্ডার। ছিলেন রুসেঁর সহকর্মী ডেনিস ডেক্ল্যার্ক। অভিযানের উদ্দেশ্য, নিজেদের তৈরি উড়োজাহাজ নিয়ে আকাশপথে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে কর্সিকা দ্বীপে পেঁৗছানো। যাত্রার সময় ধরা হয়েছিল প্রায় ৫ ঘণ্টা। কিন্তু প্রস্তুতি পর্বেই দেখা দিল সমস্যা।
স্টেফান রুসঁ বলেন, 'এই প্রকল্পের পেছনে প্রায় ১০ বছরের পরিশ্রম রয়েছে। আইডিয়াটা হলো, আমরা সেপেলিন-টিকে পালতোলা নৌকার মতো এগিয়ে নিয়ে যাব। কিন্তু সেপেলিন ফোলানোর জন্য প্রয়োজন পল্গ্যাটফর্ম, বন্দর বা বিমানবন্দরের মতো শান্ত পরিবেশ। আমাকে তার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ফলে শেষ পর্যন্ত আমাকে সমুদ্রের বুকে প্রকল্পটি পরীক্ষা করতে হয়েছে।'
সমুদ্রের একটি খাঁড়িতে বাতাসের ধাক্কা বাঁচিয়ে স্টেফান ১৮ মিটার লম্বা সেপেলিন বেলুনে হিলিয়াম ভরেছেন।স্টেফান রেকর্ডের পেছনে দৌড়াতে অভ্যস্ত। ২০০৮ সালে তিনি প্যাডেল-চালিত সেপেলিন তৈরি করে ইংলিশ চ্যানেল পেরোনোর চেষ্টা করেন। তিন বছর পর 'স্কুবস্টার' নামের এক সাবমেরিন ডিজাইন করেন, যা একইভাবে পানির নিচে চলতে পারবে। এর জন্য তিনি মার্কিন 'মেরিন'-এর উদ্ভাবনী পুরস্কার পান।
আকাশের পালতোলা নৌকা সেই প্রথম দুই প্রচেষ্টারই বিবর্তনের ফল। স্টেফান বায়ুশক্তির ওপর জোর দিয়েছেন। সেপেলিনের দিক পরিবর্তনের জন্য তৈরি করেছেন একটি বৈঠা। সেটি পানিতে ডুবে থাকছে এবং দড়ির সাহায্যে বেলুনের সঙ্গে যুক্ত। দীর্ঘমেয়াদি এই প্রকল্পে প্রায় ২০ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করা হয়েছে। ১৫ মিটার উচ্চতায় পাইলট প্রথমবার নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষা করেছেন।
তবে বাতাসের অভাবে স্টেফানকে ঘণ্টাখানেক পরেই যাত্রা শেষ করতে হয়। তা সত্ত্বেও 'এয়ারোসেল' যানের প্রথম যাত্রাকে আংশিক সাফল্য হিসেবে দেখছেন তিনি। আগামী বছর আবার চেষ্টা করবেন। যথেষ্ট বাতাস বইলে কর্সিকা পর্যন্ত উড়বেন।
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে