এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : বড়দিনে হঠাৎ শিশুরোগে মারা যায় ছোট্ট একটি কন্যাশিশু। কিন্তু এত বড় পৃথিবীতে তিন হাত জায়গা পেল না রোমা সম্প্রদায়ের ওই শিশুটি। শহরটিতে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বসবাস করায় শিশুটির বাবা-মা কোনো কর পরিশোধ করেন না। তাই কর না দেওয়ায় শহরে শিশুটিকে সমাহিত করতে দেননি পৌর মেয়র।
হৃদয়বিদারক এ ঘটনাটি কোনো অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশে ঘটেনি। বিশ্বের আধুনিক ও উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিত ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের দক্ষিণে ১০০ কিলোমিটার অদূরে চ্যাম্পলান শহরের ঘটনা এটি।
মানবিকতার চেয়ে করপ্রথাকে গুরুত্ব দেওয়ার ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন চ্যাম্পলানের মেয়র। এটাকে চরম বর্ণবাদমূলক আচরণ হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে।
সাধারণ মানুষই নয়, সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিরাও এ বিষয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। চ্যাম্পলানের পাশের শহর উইসোয়াসের মেয়র রিচার্ড ট্রিকুয়িনার শিশুটির সমাহিত না করতে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য ও বর্বর হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তার শহরে শিশুকে কবর দেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি।
পূর্ব ইউরোপ থেকে আসা কন্যাশিশুটির বাবা-মা চ্যাম্পলানের একটি ক্যাম্পে বসবাস করতেন। ফ্রান্সে রোমা অবৈধ অভিবাসীর অবস্থান তুমুল বিতর্কিত একটি বিষয়। অনেক রাজনীতিক তাদের নিজে দেশে ফেরত পাঠানোর পক্ষে।
এ ঘটনায় স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী ও সাধারণ জনগণের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ওই অঞ্চলের রোমা সম্প্রদায়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এ সিদ্ধান্ত বর্ণবাদমূলক আচরণের শামিল। তারা এর তীব্র নিন্দা জানান।
চ্যাম্পলানের মেয়র ক্রিস্টিয়ান লিক্লার্কের উদ্ধৃতি দিয়ে লা পারিসিয়ান সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়, মেয়র সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, যারা কর পরিশোধ করবে না, তাদের এ শহরের কবরস্থানে জায়গা হবে না। যে কর পরিশোধ করবে, তাকে আগে সুযোগ দেওয়া হবে।
তবে বিষয়টি নিয়ে চারদিকে সমালোচনার ঝড় ওঠায় নিজের আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন প্রাক্তন চিকিৎসক ট্রিকুয়িনার, যিনি এর আগে ওই শিশুটির মাকে চিকিৎসা করেন।
তিনি বলেন, একজন ব্যক্তিকে সম্মানে সমাহিত করার অধিকার দেশে থাকা পর্যন্ত শিশুটিকে বা তার মতো ব্যক্তিদের সমাহিত করা হবে। এই বিষয়টি তিনি অনুমোদনও করেছেন বলেও জানান। সোমবার শিশুটিকে সমাহিত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। - বিবিসি
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে