এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : মোটরসাইকেল চালানোর সময় অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে, কত গতিতে মোটরসাইকেল চালালে প্রতি লিটার জ্বালানিতে বেশি মাইলেজ পাওয়া যায়? কারণ মোটরসাইকেল কেনার পর চালকদের অন্যতম লক্ষ্য থাকে জ্বালানি খরচ কমানো। মোটরসাইকেলের গতি সরাসরি তার জ্বালানির উপর প্রভাব ফেলে।
অনেকেই ধারণা করেন যে, যত বেশি গতি, তত বেশি মাইলেজ তবে এই ধারণাটি ভুল। বেশি গতি মানেই ইঞ্জিনের ওপর বেশি চাপ পড়ে ফলে জ্বালানি খরচও বেড়ে যায়। তবে অনেকেই জানেন না যে, একটি নির্দিষ্ট গতিতে মোটরসাইকেল চালালে জ্বালানি খরচ কম হয়। ফলে মাইলেজ পাওয়া যায় বেশি।
আমাদের দেশের অধিকাংশ মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে অর্থাৎ ১০০ থেকে ১৫০ সিসির মোটরসাইকেলে ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতি বজায় রাখলে সবচেয়ে ভালো মাইলেজ পাওয়া যায়। এই গতিতে ইঞ্জিনের RPM থাকে মাঝারি মাত্রায় থাকে যার ফলে ইঞ্জিন চাপমুক্তভাবে কাজ করতে পারে এবং মসৃণভাবে চলে। তখন জ্বালানির অপচয় হয় না, বরং নির্দিষ্ট হারে শক্তি উৎপন্ন করে এগিয়ে যায়। এভাবেই জ্বালানি সাশ্রয়ী হয় এবং মাইলেজ বেশি পাওয়া যায়। ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে মোটরসাইকেল সাধারণত ৪র্থ বা ৫ম গিয়ারে চলে, যা ইঞ্জিনের জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক গিয়ার রেশিও।
অন্যদিকে কম গিয়ারে বেশি স্পিডে মোটরসাইকেল চালালে ইঞ্জিনে বাড়তি চাপ পড়ে, এবং বেশি জ্বালানি পুড়ে। আবার খুব কম গতিতেও (২০–৩০ কি.মি/ঘণ্টা) বেশি গিয়ার ব্যবহার করলে, জ্বালানি বেশি খরচ হয়, কারণ ইঞ্জিন তখন ধাক্কা খায়। কিন্তু ৪০-৬০ কি.মি/ঘণ্টার মতো মাঝারি গতিতে ইঞ্জিন ও গিয়ারিং-এর মধ্যে ভারসাম্য তৈরি হয়, যা সেরা মাইলেজ দেয়। আবার অতিরিক্ত গতি যেমন ৭০–৮০ কি.মি/ঘণ্টা ছাড়িয়ে গেলে, ইঞ্জিনের RPM বেড়ে যায় এবং গরম হতে শুরু করে। জ্বালানির ব্যবহার তখন দ্রুত বাড়তে থাকে।
পাশাপাশি আরও কয়েকটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। টায়ারে বায়ুর চাপ ঠিক আছে কিনা। খুব কম বা খুব বেশি হলে সরাসরি ইঞ্জিনে চাপ পড়ে। ফলে জ্বালানি বেশি পুড়ে। যার প্রভাব দেখা যায় মোটরসাইকেলের মাইলেজের উপর। তাই টায়ারের বায়ুর চাপ ঠিক রাখাটাও জরুরি।
তাছাড়াও, সময়মতো মোটরসাইকেলের সার্ভিসিং করাতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ পার্টস ঠিক আছে কি না, নিয়মিত দেখা জরুরি। প্রয়োজনে সেগুলো পরিবর্তন করতে হবে। কারণ মোটরসাইকেল যদি মসৃণভাবে না চলে তাহলে ভালো মাইলেজ পাওয়া যাবে না। আবার রাস্তার গুণমান, বাতাসের চাপ, মোটরসাইকেলের চাকা ও ব্রেকের অবস্থাও মাইলেজে উপর প্রভাব ফেলে।